অপূর্ব কাঞ্চনজঙ্ঘার ১০টি ছবি

সবুজ মাঠে আলপথ ধরে লাঙল-জোয়াল কাঁধে হেঁটে যাচ্ছেন একজন কৃষক। তাঁকে ছাপিয়ে সামনে দেখা যাচ্ছে ভোরের আলোয় সোনালি কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া। হিমালয় পর্বতমালার কোনো কোনো চূড়া উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলা থেকে দেখা যায়, এটি পুরোনো কথা। কিন্তু উষালগ্নে কৃষকের হেঁটে যাওয়ার সেই ছবি ভাবনার খোরাক জোগায়, চোখকে স্বস্তি দেয়। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থেকে গল্পের মতো সেই ছবির আলোকচিত্রী ফিরোজ আল সাবাহ।

ফিরোজ আল সাবাহ

সাবাহ ক্যামেরা হাতে প্রকৃতি, পাখি ও বন্য প্রাণীর ছবি তোলেন। একটি মাছরাঙার ছবি ফেসবুকে তাঁকে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিয়েছিল। অনেকের দৃষ্টিকাড়া সে ছবিটি ছিল এমন—খুঁটির মাথায় জুড়ে দেওয়া ছোট এক ফালি কাঠে তিন শব্দের সতর্কীকরণ নির্দেশনা, ‘মাছ ধরা নিষেধ’। এমন কড়া নির্দেশনার ওপরই ঠোঁটে মাছ নিয়ে দাঁড়িয়ে মাছরাঙাটি। তার আয়েশি ভাবটা যেন এমন, এসব নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা সে করে না! বিরল মুহূর্তের ছবিটি টানা সাত মাসের চেষ্টায় তুলেছিলেন সাবাহ। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৩০ বছর বয়সী এই তরুণ ছবি তোলা ছাড়াও নিজ এলাকায় প্রাণী সংরক্ষণে মানুষকে সচেতন করেন। তাঁর জীবনের গল্প শুনে মনে হয়, তিনি আপাদমস্তক ছবির মানুষ, ছবির কবি। কবিতার মতোই ছবিগুলোর পেছনে থাকে অনবদ্য একেকটি গল্প।

সেই গল্পের খোঁজে প্রায়ই ক্যামেরা কাঁধে তেঁতুলিয়ার নিভৃত গ্রামে ছুটে যান হিমালয় পর্বতমালার অপরূপ ছবি তুলতে। তাঁর তোলা কাঞ্চনজঙ্ঘার বেশ কিছু ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি নার্শিং পর্বত, সিনিওলচু পর্বতের ছবিও তিনি তুলেছেন। এ বছরও বেশ কয়েকবার ছবি তুলতে গেছেন সাবাহ। ক্যামেরায় ধারণ করেছেন কাঞ্চনজঙ্ঘার দারুণ কিছু মুহূর্ত।

বিভিন্ন সময় ফিরোজ আল সাবাহর তোলা ১০টি ছবি রইল এখানে

সরু নালার পাড় ধরে হেঁটে আসছেন একজন কৃষিজীবী। সকালের স্নিগ্ধ সবুজ ধানখেত ছাপিয়ে দৃষ্টি কাড়ল দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়ার শালবাহান ইউনিয়নের নতুনগছ এলাকা থেকে ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর ছবিটি তোলা
দলছুট বুনো হাঁস, সবুজ প্রকৃতি আর কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়ার শালবাহান ইউনিয়নের তুলসিয়া বিল এলাকা থেকে সকাল ৮টায় তোলা
হেমন্তের বিকেলে নেপালের পাহাড় সারি। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর তেঁতুলিয়ার জুগিগছ এলাকা থেকে তোলা
শেষ বিকেলের আলোয় কাঞ্চনজঙ্ঘা। এ সময় পাহাড় বৈচিত্র্যময় রং ধারণ করে। ২০১৯ সালের ১৫ নভেম্বর তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা থেকে তোলা
বাড়ির পাশেই যেন কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়ার রওশনপুর থেকে গত ৩০ অক্টোবর তোলা
৫ হাজার ৮২৫ মিটার উচ্চতার নার্শিং পর্বতের অবস্থান ভারতের সিকিমে। ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে তার দেখা মিলল তেঁতুলিয়া থেকে
হেমন্তে কয়েক প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মেলে পঞ্চগড়ে। তেঁতুলিয়ার তুলসিয়া বিলে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা। পেছনে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘা, ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর
ভারতের সিকিম রাজ্যের সর্বোচ্চ পর্বত সিনিওলচু। পঞ্চগড় থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার পাশাপাশি ৬ হাজার ৮৮৮ মিটার উচ্চতার এই পর্বতেরও দেখা মেলে। ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর যেমন ফিরোজ আল সাবাহ দেখা পেয়েছিলেন সেই তুষার পর্বতের
ভোরের আলো সবে ফুটতে শুরু করেছে। লাঙল-জোয়াল কাঁধে রোজকার কাজে যাচ্ছেন একজন কৃষক। দূরে কাঞ্চনজঙ্ঘার সোনালি চূড়া। ফিরোজ আল সাবাহ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের রওশনপুর এলাকা থেকে ছবিটি তোলেন ২০১৭ সালের ১১ নভেম্বর
বিস্তীর্ণ ধানখেত, দিগন্তের ওপর সুবিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘা। তেঁতুলিয়ার তিরনই এলাকা থেকে তোলা