আদ্রিয়ানা পাজ, কার্লা সোফিয়া গাসকোন, সেলেনা গোমেজ ও জোয়ি সালদানা—গত বছর কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছিলেন এ চারজন। জ্যাক অঁদিয়ারের ‘এমিলিয়া পেরেজ’-এর জন্য এ পুরস্কার পান তাঁরা। কানে ছবিটির প্রিমিয়ারের পর প্রশংসিত হয়েছিল, কিন্তু পরে এই মিউজিক্যাল কমেডি যে এতটা সমাদৃত হবে, কে ভেবেছিল! বড় দুই পুরস্কার আসরে সর্বোচ্চ মনোনয়ন পাওয়ার পর মনে হচ্ছে, ‘এমিলিয়া পেরেজ’কে নিয়ে আলোচনা আরও বাড়বে।
আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সকালে দেওয়া হবে ৮২তম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। এবারের আসরে সর্বোচ্চ ১০ মনোনয়ন পেয়ে চমকে দিয়েছে ছবিটি। মিউজিক্যাল অথবা কমেডি বিভাগে সেরা ছবি, সেরা অভিনেত্রী, সেরা সহ-অভিনেত্রীসহ গুরুত্বপূর্ণ সব বিভাগের মনোনয়ন পেয়েছে। সমালোচকেরা মনে করছেন, মনোনয়নের মতো সর্বোচ্চ পুরস্কারও ঘরে তুলতে পারে সিনেমাটি।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে ঘোষণা করা হয়েছে বাফটার মনোনয়ন। এখানেও সর্বোচ্চ ১৫টি মনোনয়ন পেয়েছে সিনেমাটি। একই রাতে এসেছে আরেকটি সুসংবাদও। উৎসবে ভ্যানগার্ড অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন ছবিটির নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা। কিন্তু কী আছে প্রশংসিত এই সিনেমায়?
নন্দিত ফরাসি নির্মাতা জ্যাক অঁদিয়ার ছবিটি বানিয়েছেন স্প্যানিশ ভাষায়। মেক্সিকোর চার প্রতিষ্ঠিত নারীর গল্প এটি, যারা নিজেদের মতো করে সুখী হতে চায়। এর মধ্যে আছে একজন কুখ্যাত মাদকসম্রাজ্ঞী যে নিজের ভুয়া মৃত্যুর খবর প্রচার করে নতুন জীবন শুরু করতে এক আইনজীবীর সাহায্য চায়। এরপর কী হয়, তা নিয়েই এগিয়েছে গল্প।
চিত্রনাট্য, অভিনয় আর নির্মাণের কারণে মুক্তির পর সমালোচকদের ব্যাপক প্রশংসা পায় ছবিটি। রটেন টোমাটোজে ছবিটির গড় রেটিং ৭৬ শতাংশ। বেশির ভাগ সমালোচকই ছবিতে কার্লা সোফিয়া গাসকোনের অভিনয়কে গত বছরের অন্যতম সেরা বলে রায় দিয়েছেন। টাইম সাময়িকীর মতে, ‘এটা একটা খ্যাপাটে ছবি, নিঃসন্দেহে বছরের সেরা মিউজিক্যাল।’ কেবল পেশাদার সমালোচকেরাই নন, গত বছর ছবিটির উচ্চ কণ্ঠ প্রশংসা করেছেন অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ, এমিলি ব্লান্ট, ইভা লঙ্গোরিয়া, গায়িকা ম্যাডোনা, নির্মাতা গিয়ের্মো দেল তোরো, মাইকেল মানরা। টাইম, সাইট অ্যান্ড সাউন্ডসহ বিভিন্ন সাময়িকী গত বছরের সেরা ছবির তালিকায় রেখেছিল ‘এমিলিয়া পেরেজ’কে।
ছবিটি নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বিশেষ করে মেক্সিকোতে। দেশটির নানা নেতিবাচক বিষয় তুলে ধরায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক রোষের মুখে পড়েন নির্মাতা। দেশটির অনেক চিত্রসমালোচকও মনে করেন, ছবিতে মেক্সিকোর বিষয়গুলো খুবই হালকাভাবে উঠে এসেছে। এ ছাড়া মেক্সিকোর পরিপ্রেক্ষিতে ছবি হলেও প্রায় সব অভিনেত্রীই অন্য দেশের, এটা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।
সমালোচনা সত্ত্বেও মুক্তির পর এত প্রশংসা, পুরস্কার আর মনোনয়ন অঁদিয়ারের জন্য বাড়তি প্রাপ্তি। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিওয়্যারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নির্মাতা বলেন, ‘এটা খুবই সময় উপযোগী কাজ, সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে বক্তব্য আছে। এটা এমন একটা কাজ, যা আমি চাইলে ১০ বছর আগে বানাতে পারতাম না।’
অনেক মনে করছেন, অস্কারেও গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোতে মনোনয়ন পাবে ‘এমিলিয়া পেরেজ’। এর আগে অবশ্য আগামীকালের গোল্ডেন গ্লোবে চোখ থাকবে দর্শকদের।