সারা বিশ্বের গণমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে খবর। প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতা এই সৌদি অভিনেত্রীর কাছে বিস্ময় হয়ে আসে। হঠাৎই যেন বদলে গেল তাঁর জীবন। শুধু তা–ই নয়, সৌদির পরবর্তী প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীদের কাছে তিনি এখন প্রেরণার নাম। কে এই ১৮ বছরের তরুণী মারিয়া বাহরাভি?
সৌদি আরব থেকে প্রথম কোনো সিনেমা চলতি বছর ৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিশিয়াল শাখার আঁ সার্ত্রে রিগায় মনোনয়ন পেয়েছে। সিনেমার নাম ‘নোরা’। এতে নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন মারিয়া। প্রথম সিনেমা দিয়েই সৌদি চলচ্চিত্র ইতিহাসের অংশ হয়ে রীতিমতো আলোচনায় চলে আসেন তিনি।
এত অল্প বয়সে তারকাখ্যাতি পাবেন, এমনটা মোটেও ভাবেননি। এসব যেন তাঁর কাছে এখনো কল্পনা। একটা সময় টেলিভিশনে ফ্ল্যাশলাইট, ক্যামেরা দেখা এই উপস্থাপক মেয়েটি এখন নতুন প্রজন্মের সৌদি অভিনেত্রীদের প্রেরণা। তাঁর আগে এত বড় আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে এমন সুযোগ কেউ পাননি।
এ প্রসঙ্গে মারিয়া আরব নিউজকে বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি যতটা মনে করতে পারি, আমার মা আমার কোনো চাওয়া থেকে ফেরাননি। যা আমার ভালো লাগত, যেগুলোতে উৎসাহী হতাম, সেগুলো থেকে আমাকে দূরে রাখতেন না। পরিবার সব সময় আমাকে সহযোগিতা করেছে। আমাকে কোনো প্রতিবন্ধকতায় রাখেনি। তাদের ছাড়া আমি অভিনেত্রী হতে পারতাম না।’
মারিয়া বাহরাভির বেড়ে ওঠা জেদ্দায়। বিভিন্ন দেশের সিনেমা ও সিরিজের ভক্ত এই নায়িকার একসময় ইচ্ছা জাগে, অভিনয় করবেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই অভিনয় নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। দুই বছর আগে মে মাসে হঠাৎ তিনি অডিশন দিতে যান। খুলে যায় তাঁর ভাগ্য। কিন্তু তাঁকেই সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করতে হবে, শুনে সংশয়ে পড়ে যান।
তিনি জানান, শুরু থেকে সবকিছু তাঁর কাছে স্বপ্নের মতো মনে হয়েছে। ‘আমি আমার স্বপ্নের চেয়েও অনেক বড় জায়গায় পৌঁছেছি। এখন আমার কাছে অনেক বড় সুযোগ রয়েছে। সেদিকেই আমি নিজেকে নিয়ে যেতে চাই,’ বলেন মারিয়া বাহরাভি।
পরিচালক তৌফিক আল জায়িদি ও মারিয়া অভিনীত ‘নোরা’ সিনেমায় কী আছে? এটি নাদির নামের এক চিত্রকরের গল্প। সময়টা নব্বইয়ের দশক।
এই সময়ে সামাজিক প্রতিবন্ধকতায় নাদিরকে ছবি আঁকা ছেড়ে দিতে হয়। তিনি হন একজন স্কুলশিক্ষক। সেখানে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় নোরা নামের একটি এতিম মেয়ের। যিনি কিনা অশিক্ষিত। যাঁর স্বপ্নের পথে এগোনোর কোনো পথ নেই। যাঁকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবাদী এক নোরাকে দেখা যাবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে। ১৪ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত চলবে উৎসব।