সাদিয়া খালিদ রীতি। ছবি: আসাফ উদ দৌলা
সাদিয়া খালিদ রীতি। ছবি: আসাফ উদ দৌলা

যে প্রক্রিয়ায় কান উৎসবের বিচারক বাংলাদেশের রীতি

আগামী ১৪ থেকে ২৫ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসব। বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ এই চলচ্চিত্র উৎসবে দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ থেকে জুরিবোর্ডের সদস্য হিসেবে আমন্ত্রিত চলচ্চিত্র সমালোচক, চিত্রনাট্যকার সাদিয়া খালিদ রীতি। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ক্রিটিকসের জুরি হিসেবে যোগ দেবেন তিনি। কান চলচ্চিত্রে বিচারক নির্বাচিত হওয়া রীতি মুখোমুখি হয়েছেন গণমাধ্যমের। জানালেন এই যাত্রার প্রক্রিয়া।

কানে কীভাবে জুরি সদস্য নির্ধারিত হয়? প্রশ্নের জবাবে রীতি বলেন, ‘আমাদের তিনটা সেশন থাকে। তার মধ্যে আলাদা আলাদা জুরিবোর্ড থাকে। আগে যেই সেশনে “রেহানা মরিয়ম নূর” গিয়েছিল, সেখানকার জুরিবোর্ড মেম্বার করা হয়েছে আমাকে। তো আমাদের ই–মেইলে ১৭টা সিনেমা দেখে সেগুলোর ভেতর থেকে সেরা একটা সিনেমা নির্ধারণ করতে বলা হয়।’

কানে আপনাদের কার্যক্রমটা কীভাবে হয়, কীভাবে সিনেমা নির্ধারণ করেন? উত্তরে রীতি বলেন, ‘বড় উৎসবগুলোতে আমি দেখেছি, ওরা আপনাকে পুরোপুরি একটি স্বাধীনতা দিয়ে দেয় যে আপনারা নিজেদের মধ্য থেকে চিন্তা করুন যে কোনটা আপনাদের মনে বেশি দাগ কাটছে।

সাদিয়া খালিদ রীতি

সেটা কীভাবে দাগ কাটছে? সেটার ব্যাপারেও যে ওরা একধরনের অঙ্ক কষে দেয়, সেটাও না। ওরা যেটা বলে দেয় সেটা হচ্ছে, কোন চলচ্চিত্রটা আসলে সীমানা অতিক্রম করছে, সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা আগে কখনো দেখিনি বা খুব সময়োপযোগী সিনেমা। মৌলিকত্ব আছে, বিশ্বাসযোগ্যতা, সত্যবাদিতা আছে—এই জিনিসগুলো আসলে সব বড় উৎসবেই খুঁজে থাকে। আমরাও আসলে সে রকমই খুঁজে থাকি।’

বাংলাদেশে তো আরও অনেকেই আছেন, কেন আপনাকেই জুরি মেম্বার করা হলো? এই প্রসঙ্গে রীতি বলেন, ‘ক্রিটিক জুরি, এটার জন্য অবশ্যই সিনেমা সমালোচক হতে হবে। যারা নিয়মিত সিনেমা সমালোচকের কাজটা করছে এবং যারা এই ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকসের সদস্য, সংস্থাতে আছে সেখান থেকে নেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আবেদনের পর বাছাই করে সিলেক্ট করা হয়। পুরো বিশ্ব থেকে ৯ জনকে সিলেক্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আমি আছি।’

জুরিদের মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে রীতি বলেন, ‘অবশ্যই মতবিরোধ হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, দুটো সিনেমার মধ্যে কোনটা সিলেক্ট করা হবে সেটা নিয়ে হয়। কারও একটি বেশি ভালো লেগেছে, কারও অন্যটি। শেষের দিকে দেখা যায়, এটা নিয়েও তর্ক হয়। আবার অনেক সময় একটাই সবার পছন্দ হয়ে যায়। এখানে সবার মতামত প্রাধান্য পায়। বিষয়টা খুবই স্বচ্ছ। পক্ষপাতিত্বের কোনো সুযোগ নেই।’

ইতালি, ভারত, ইংল্যান্ড, নেপাল, ফ্রান্স, রাশিয়া এবং শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন চলচ্চিত্র সমালোচক রীতি। ২০১৯ সালের কান চলচ্চিত্র উৎসবেও জুরি সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।