১৯৯২ সালের ৩০ মার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসে ৬৪তম অস্কারে বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। চলচ্চিত্রশিল্পী সারা জীবনের অবদানের জন্য বিশেষ অস্কার পেয়েছেন তিনি। তাঁর নাম ঘোষণা করেন অড্রি হেপবার্ন।
মাস তিনেক আগেই তাঁকে খবরটি দিয়েছিল অস্কার কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সত্যজিৎ রায় ভেবেছিলেন, তিনি পুরস্কারটি গ্রহণ করতে লস অ্যাঞ্জেলস যাবেন। পুরস্কার গ্রহণের পর ভালো চিকিৎসক দেখাবেন।
তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় অস্কারে যোগ দিতে পারেননি, অস্কারই হাজির হয়েছিল তাঁর দোরগোড়ায়। অস্কার ঘোষণার আগেই কলকাতায় সত্যজিৎ রায়ের হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয়; তখনো তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
সেই ভিডিও অস্কারের মঞ্চে দেখানো হয়েছিল। সত্যজিৎ রায়ের অস্কার পাওয়ার খবরে ভারতজুড়ে আনন্দের ঢেউ নেমেছিল। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীরাও আনন্দে ভেসেছিলেন।
ভয়েস অব আমেরিকার বরাতে ১৯৯২ সালের ১ এপ্রিল দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেই সময় দূরদর্শনে সপ্তাহ ধরে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা দেখানো হয়। পাশাপাশি তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা বিশেষ সংখ্যা বের করে। এসব সংখ্যা কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়তেন পাঠকেরা।
ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও সত্যজিৎ রায়কে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়া হয়েছিল।
পুরস্কার ঘোষণার কিছুদিন পর ১৯৯২ সালের ২১ এপ্রিল ৭০ বছর বয়সে মারা যান সত্যজিৎ রায়। তাঁর ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপরাজিত’, ‘অপুর সংসার’–এর মতো সিনেমা আজও অমলিন।