এ ছবিতে কাজ করার চ্যালেঞ্জ ছিল: ইরানি ছবি নিয়ে জয়া

নিয়মিত ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অভিনয়শিল্পী জয়া আহসান। এবার এমন এক দেশের ভাষার চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করছেন, যে ভাষা তাঁর জানা নেই। তারপরও অদ্ভুতভাবে সংযোগ স্থাপন করেছেন তিনি। ইরানি ভাষার এ সিনেমা নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানাতে গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ঢাকার ছোলমাইদের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে সেই সংবাদ সম্মেলনে জয়া বলেন, ‘এ ছবিতে কাজ করার একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। পরিচালকসহ পুরো টিম ওদের দেশের (ইরানি) ভাষায় কথা বলে, তবে কাজটায় আমরাও অদ্ভুতভাবে কমিউনিকেট করছি।’

জয়া আহসান
ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ছবির নাম ‘ফেরেশতে’। বাংলাদেশ ও ইরান দুই দেশেই ছবিটি মুক্তি দেওয়া হবে। এবারই প্রথম বাংলাদেশের জয়াকে নিয়ে কাজ করলেন ইরানি চলচ্চিত্র পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজম। জয়া জানান, এই মাসের শেষের দিকে ছবির শুটিং শেষ হবে। আজ রোববার কমলাপুর স্টেশনে চলছে শুটিং, জানিয়েছেন ইউনিট–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাংলা নববর্ষে ‘ফেরেশতে’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে জয়া আহসান ও নিকিতা নন্দিনী শিমু

কলকাতায় দুটি গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রের শুটিং শেষেই ঢাকায় ফিরে জয়া আহসান ‘ফেরেশতে’ ছবির শুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ঢাকার আনাচকানাচে একটানা শুটিং চলতে থাকায় ছবিটি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমকে জানাতে পারেননি তিনি।

জয়া বলেন, ‘কলকাতায় দুটি ছবির শুটিংয়ের ফাঁকে “ফেরেশতে” নিয়ে কথা হয়। একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম, কাজটি করব। কাজ করতে গিয়ে পরিচালককে আরও বেশি চেনা যায়। অভিনয়টা আসলে কেন করি? ডেফিনিটলি ভালো কাজের আশায় করি। আরেক দেশের কৃষ্টি–কালচার ছবি করার মধ্য দিয়ে কাছ থেকে জানা ও চেনা যায়। তবে এ ছবির কাজ নিয়ে একটা চ্যালেঞ্জও ছিল। ওরা তো ওদের ভাষায় কথা বলে, পুরো ইউনিট। তারপরও আমরা অদ্ভুতভাবে কমিউনিকেট করছি। এ জন্যই হয়তো বলা হয় চলচ্চিত্রের কোনো ভাষা নেই। যেকোনো দেশের, যেকোনো ভাষার চলচ্চিত্র আমরা বুঝতে পারি, দেখতে পারি। সাবটাইটেল না থাকলেও বুঝতে পারি। তাই শুটিংয়ে ভাষার সংযোগ না থাকলেও ঠিক ঠিক বুঝে কাজ করছি। বেশ ইন্টারেস্টিং প্রসেসে শুটিং করছি, খুব অর্গানাইজড। বিশ্বদরবারে ইরানি ছবির কদর আছে। এদের কাজের প্রসেস কেমন, অভিনয় না করার আগে বুঝতাম না। শুটিং প্রায় শেষের দিকে। ছবিতে আমি ছাড়াও দুজন আছে, নিকিতা নন্দিনী, আর ছোট্ট বন্ধু সাথি। সাথি তো এই ছবির খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য, দারুণ অভিনয় করেছে। ভীষণ কষ্ট করছে।’

জয়া পরেছেন মায়ের শাড়ি

ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেখান থেকে সম্মান এনেছেন জয়া। তাঁর আশা, এই ছবিও তাঁকে অন্য রকম একটা জায়গা দেবে। তিনি বলেন, ‘আশা রাখছি, ছবিটি নতুন কিছু, নতুন ফ্লেভার অবশ্যই আপনাদের দেবে এবং আমাকেও দেবে। শিল্পমাধ্যমে আমরা তো কিছু কাজ করি জীবনের জন্য, কখনো কখনো শিল্পের জন্য—ছবিটি আমার প্রোফাইলে “কিছু একটা” যুক্ত করবে। আশা করছি, ছবিটি সে রকম একটা জায়গায় নিয়ে যাবে।’
চরিত্র সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে জয়া আহসান বললেন, ‘চরিত্র নিয়ে খুব একটা বলতে চাইনি। দর্শকেরা জেনে গেলে আগ্রহ কমে যাবে। তবে এটুকু শুধু বলব, আমাদের আন্ডার প্রিভিলেজড যে মানুষগুলো আছে, তাদের একটা চরিত্র, সংগ্রামী ও সাহসী চরিত্র, আমাদের চারপাশে এমন চরিত্র অনেক দেখা যায়। আমাদের জীবনের সঙ্গে চরিত্রগুলো মিশে আছে। সে রকম একটি চরিত্রে অভিনয় করছি।’

এ ছবির জন্য কেন জয়া আহসানকে বেছে নিলেন? পরিচালক মুর্তজা অতাশ জমজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জয়া সম্পর্কে অনেক কিছু শুনেছি। বাংলাদেশে এই ছবি করার সিদ্ধান্ত যখন নিলাম, তখন জয়ার কথাই ভেবেছি। এরপর জয়ার ছবিগুলো দেখেছি এবং জয়াও আমার ছবিগুলো দেখেছেন। তাই আমাদের কাছে জয়াকেই বেস্ট মনে হয়েছে।’