‘দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান’, তরুণদের জন্য ‘তারুণ্যের উৎসব’সহ সাতটি অগ্রাধিকার কার্যক্রম ঘোষণা করেছে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
সাতটি কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ‘রিমেম্বারিং মুনসুন রেভল্যুশন’, ‘তারুণ্যের উৎসব’, ‘দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান’, ‘ডিজিটাল ওরাল হিস্ট্রি প্রকল্প’, ‘বাংলা একাডেমি সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালা ও গবেষণা প্রকল্প’, ‘জাতীয় জাদুঘরে আধুনিক ভিডিও প্রক্ষেপণ ব্যবস্থা স্থাপন’ এবং ‘শো-ক্রিয়েটর ওয়ার্কশপ’।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা এবং নবতরঙ্গ সৃষ্টি করবে ‘রিমেম্বারিং মুনসুন রেভল্যুশন’। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের ৮ জন শীর্ষ নির্মাতার মাধ্যমে ৮টি বিভাগে ৮টি ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরির কর্মশালার আয়োজন করা হবে। কর্মশালার আউটপুট হিসেবে ৮টি মাঝারি দৈর্ঘ্যের ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট তৈরি করা হবে।
এ ছাড়া ৮টি নতুন থিয়েটার প্রোডাকশন তৈরি করা হবে। দেশের তরুণদের কাছে জনপ্রিয় শীর্ষস্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে নজরুলের গানের একটি অ্যালবাম তৈরি করা হবে এবং এর প্রকাশনা উপলক্ষে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে একটি কনসার্ট আয়োজন করা হবে। এই কনসার্টটি সারা দেশে সম্প্রচার করা হবে। তা ছাড়া ফটোগ্রাফি পেইন্টিং ও কার্টুন প্রদর্শনী করা হবে।
৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘তারুণ্যের উৎসব’ আয়োজন করবে বাংলাদেশ সরকার, যেখানে দেশজুড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশি শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং যুবক-যুবতীদের মধ্যে নতুন সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রতিভা সন্ধান কর্মসূচি আয়োজন করবে মন্ত্রণালয়।
‘ডিজিটাল ওরাল হিস্ট্রি প্রকল্পের’ অংশ হিসেবে একটা বৃহৎ ডিজিটাল আর্কাইভিং করা হবে। ‘রিমেম্বারিং মুনসুন রেভল্যুশন’–এ যে লাখো মানুষ যুক্ত হয়েছে, তাদের অংশগ্রহণের ইতিহাস ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ড করে সংগ্রহ করা হবে। এই ভিডিওগুলো প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলা একাডেমি প্রতিশ্রুতিশীল লেখকদের জন্য সৃজনশীল লেখালেখি কর্মশালা এবং বই প্রকাশনা করবে। পাশাপাশি ৫০টি গবেষণা প্রবন্ধ ও ১০টি ১ বছর মেয়াদি গবেষণা বৃত্তি প্রদান করবে।
জাতীয় জাদুঘরের অডিটরিয়ামে প্রক্ষেপণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ করা হবে, যাতে স্টেজ পারফরম্যান্সসহ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র/ডকুমেন্টরি ও অন্যান্য ভিজুয়্যাল কনটেন্ট ও সারা বছরব্যাপী প্রদর্শন করা যায়।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মের অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দিয়ে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ-তরুণীদের জন্য শো-ক্রিয়েটর কর্মশালা আয়োজন করা হবে।
নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘বিপ্লবের পর এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে “কালচারাল ব্রিজ” তৈরি করা। আমরা বলতে চাই, এই বাংলাদেশটা সবার। এখানে ধর্মের ভিত্তিতে কাউকে আলাদা করা যাবে না। আমাদের সাংস্কৃতিক পলিসির মূলে থাকবে বহুজন, বহু ধর্ম, বহু ভাষা, সবার সংস্কৃতি এবং সবার সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানোর জন্য আমরা কাজ করতে চাই।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম, নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলীসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধান এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।