নাটক–সিনেমার মতোই বদলে গেছে এই অভিনেতাদের জীবন
নাটক–সিনেমার মতোই বদলে গেছে এই অভিনেতাদের জীবন

নিজের সঙ্গ দোষে ক্যারিয়ারের ক্ষতি করেছি

শুটিংয়ের কলাকুশলীদের কখন কী লাগবে দেখভাল করতেন শামীম

অভিনয় করবেন এমন স্বপ্ন তাঁরা দেখেননি। অথচ সেই অভিনয়ই তাঁদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। এখন তাঁরা পর্দার নিয়মিত মুখ। তাঁদের অভিনয়ে আসার গল্প যেমন নাটকীয়, তেমনি তাঁদের ভাগ্যবদলের গল্পও নাটকের মতোই। এই অভিনয়শিল্পীরা কেউ আগে প্রোডাকশন সহকারী, কেউ শুটিং টিমে চা-বিস্কুট সরবরাহ করতেন, কেউ শুটিংয়ে ভাড়া দিতেন নানা কিছিমের জিনিস। এ ছাড়া শুটিংয়ের গাড়ি চালাতেন এমন ব্যক্তিও এখন অভিনেতা। আগে স্বপ্ন না দেখলেও তাঁরা এখন চেষ্টা করে যাচ্ছেন অভিনয়শিল্পীর পরিচয়টা ধরে রাখতে। পর্ব–১

১৯৯৯ সালে শামীম প্রথম অভিনয় করেন।

গল্পের শুরুটা করা যাক শামীম হোসেনকে দিয়ে। ১৯৯৯ সালের কথা। তখন শুটিং ইউনিটের প্রোডাকশনের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন শামীম। শুটিংয়ের কলাকুশলীদের কখন কী লাগবে দেখভাল করতেন। আরও করতেন শুটিংয়ের সেট প্রস্তুতসহ নানা কাজ। আফসানা মিমির ‘বন্ধন’ ধারাবাহিকের শুটিংয়ে সহকারী প্রোডাকশন বয়ের কাজ করতে গিয়ে একদিন হঠাৎ শুনলেন, অভিনয় করতে হবে। ভয়ে জড়োসড়ো অবস্থা। নাটকের রতন চরিত্রটি যাঁর করার কথা, তিনি পরীক্ষার কারণে আসতে পারেননি। কিন্তু দৃশ্যটির শুটিং নাহলেই নয়। সেদিন বাধ্য হয়েই ক্যামেরার সামনে আসেন শামীম।

অভিনেতা শামীম

তিনি বলেন, ‘আমার কোনোকালেই ইচ্ছা ছিল না অভিনয় করব। লেখাপড়া জানি না, আমাদের আবার অভিনয় কিসের। কিন্তু মিমি আপার কথা তো রাখতে হবে। এ কারণেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। কয়েক পর্বে অভিনয় করার পরে শুনলাম, মিমি আপা, চ্যানেল ও প্রযোজকেরা আমার অভিনয় পছন্দ করেছেন। তখন যে কেউ অভিনয়ে সুযোগ পেত না। এভাবে অভিনয় করতে থাকি। কিন্তু পড়াশোনা না থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়ি। তারপরও অভিনয় আমার ভাগ্য খুলে দেয়।’

একটি নাটকের দৃশ্যে শামীম

শামীমের শুরুটা অনেক ভালো ছিল। তিনি মনে করেন, অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে আরও অনেক দূর যাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নিজের দোষে পারেননি। দীর্ঘদিন পর কেন এমনটা মনে করেন? তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা আছে। আমি নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছিলাম। সঙ্গ ভালো ছিল না। বিয়েশাদি, সংসার নিয়েও মাঝে নানা কথা রটেছিল। একবার গুজবও উঠেছিল আমি নিখোঁজ। সেটা না বলি। অভিনয়ে ভালো করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু নিজের সঙ্গ দোষে ক্যারিয়ারের ক্ষতি করেছি। তা না হলে আরও এগিয়ে যেতে পারতাম। কারণ, আমি যে পড়ালেখা করিনি সেটা কাজের ক্ষেত্রে বাধা হতে পারেনি। শুটিংয়ে সবাই আমাকে সহযোগিতা করেছে। এখন চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

২০০৬ সাল থেকে তিনি নিয়মিত কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত তাঁর বায়োডাটায় যুক্ত হয়েছে এক হাজারের বেশি নাটকের নাম। ‘বউ বিরোধ’, ‘জাদুনগর’সহ একাধিক টিভি ও ইউটিউবনির্ভর কাজ করছেন। মাসে ২০ দিন শুটিং করেন। নিয়মিত অভিনয় করলে মাসে এক লাখ টাকার মতো আয় হয়।