নব্বইয়ের দশকে নাটকে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা পান। পরে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েও আলোচনায় আসেন। বলা যায়, দুই মাধ্যমেই সমান জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তবে শুরুর পথ চলাটা সহজ ছিল না। এই অভিনেতাকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, অদম্য সাহস সঞ্চয় করে অভিনয়ের পথে হাঁটতে হয়েছে। একের পর এক বাধা পেরিয়ে আজ তিনি ভক্তদের কাছে হয়ে উঠছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান। এই অভিনেতার আজ ৫৬তম জন্মদিন। বিশেষ এই দিনে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, সুখ নিয়ে উপলব্ধির কথা জানতে।
‘কোনো অর্জনই সহজ নয়’, শুরুতেই বললেন এই অভিনেতা। আরও বললেন ধৈর্য ধরার কথা। অভিনয়ের শুরুতে ধৈর্য না ধরলে পথ পেরোনো সহজ হতো না। তিনি জানান, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হওয়ার পরে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করতে হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে অভিনয়ের প্রেমে পড়েন। মঞ্চে অভিনয় শিখতে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে পরিচিত অনেকের সহায়তা পাননি। কখনো মেসে থেকেছেন। খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিন পার করেছেন। এমন সময়ও গেছে, ভালো জামাকাপড় পরতে পারেননি। এগুলো তাঁকে এগিয়ে চলার প্রেরণা দিয়েছেন। অচেনা পথে হেঁটে সফল হয়েছেন। জীবনকে নিজের মতো করে সাজিয়েছেন।
শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো কম হয়। তবে জানা গেল, এখন পরিবারের সঙ্গেই বেশির ভাগ সময় কাটানোর চেষ্টা করেন। জন্মদিনে বেড়িয়েছেন পরিবার নিয়েই।
জাহিদ হাসান বললেন, ‘পরিবারের সবার সঙ্গে লাঞ্চ করলাম। ব্যস্ততায় একসঙ্গে তেমন সময় কাটানো হয় না। এটাই আমার কাছে সব সময় বিশেষ। সবার সঙ্গে অনেক কিছু নিয়ে কথা হয়। ছেলের মেয়েদের অনেক আগ্রহ থাকে। তাঁরা সারপ্রাইজ দেওয়ার চেষ্টা করে। মৌয়ের থাকে। সব মিলিয়ে ভালো সময় কাটছে। অনেক দিন পরে সবাই একসঙ্গে বের হয়েছি। ভালো সময় কাটছে।’
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে একের পর এক অভিনয় করে ভক্তদের ভালোবাসা পেয়েছেন। এখনো পেয়ে যাচ্ছেন ভালোবাসা। তিনি মনে করেন, এটাই তাঁর জীবনের সেরা প্রাপ্তি। তবে সফলতার পেছনে ছোটেননি। তারকা হবেন, এমনটাও কোনো দিন ভাবেননি।
পরিশ্রমের পর সফল হয়েছেন। এটাই ছিল তাঁর সফলতার পেছনে একমাত্র রহস্য।
আলাপচারিতার শেষের দিকে এই অভিনেতার কাছে প্রশ্ন ছিল জীবনে সুখে থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কী? তিনি বলেন, ‘কম্প্রোমাইজ করা শিখতে হবে। কৃতজ্ঞতা বোধ থাকতে হবে। স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিতে হবে। সফল হওয়ার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভালো মানুষ হওয়া। হাসিখুশি থাকা, যা পেয়েছি তাতেই শুকরিয়া করা, পরিশ্রমী হওয়া, নিজের ভুলগুলো কাছ থেকে দেখা। আমার মনে হয়, ভালো থাকার জন্য সব সময় অর্থের দরকার নেই। অনেকের প্রচুর টাকা আছে, কিন্তু সুখী না। আবার টাকা না থেকেও অনেকেই ভালো আছে। কে কীভাবে দেখছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’