এখন জন্মদিন মানে উৎসব। দিনভর বন্ধু–সহকর্মীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। যে কারণে নাকি বিশেষ দিনটিতে বাসায় থাকতে ভালো লাগে না। তাই জন্মদিনে বাসার পাশেই শুটিংয়ে ব্যস্ত। সন্ধ্যা পর্যন্ত শুটিং করে দিনটি পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। তৌসিফ জানালেন, বিশেষ এই দিনে আগের সেই তৌসিফকেই খোঁজেন তিনি। সেই জন্মদিনগুলো মিস করেন।
‘বাসায় ভালো লাগে না, এ কথা আপনার স্ত্রী জানে? এমন প্রশ্নে হেসে এই অভিনেতা বলেন, ‘জানে জানে। কারণ, এই দিনে বাসায় থাকলে তারা আরও বিরক্ত হবে। কারণ, একের পর এক বন্ধু–সহকর্মীরা আসতেই থাকবে। আর আমিও এই দিনে বাসায় থাকতে চাই না। কারণ, বাসায় থাকলে অনেকেই আমার সঙ্গে দেখা করতে আসতে পারে না। এই যে শুটিংয়ে আছি। এখানে অনেকেই আসছে। দেখা করছে। কেক কাটছি, কেউ কেউ ফোন করছেন। সবার সঙ্গে দিনটি ভালো কাটছে।’
অভিনয়ে পরিচিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তৌসিফের আলাদা একটি ভক্তশ্রেণি তৈরি হয়েছে। জানালেন, তিনি না চাইলেও দিনটির শুরুটা তাদের সঙ্গেই হয়। ‘দেখা যায় ঢাকার আশপাশের জেলা গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ থেকে ভক্তরা রাত ১২টা ১ মিনিটে দেখা করতে আসে। তাদের নিষেধ করলেও শোনে না। তাদের কথা, রাত ১২টা ১ মিনিটে দেখা করবেই। ভক্তদের পাশে থাকা, এই ভালোবাসা সব সময়ই মুগ্ধ করে,’ বলেন তৌসিফ।
পরিচিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে তৌসিফের জীবন। নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অভিনয়শিল্পী, অভিনেতা, তারকার মতো বিশেষণ। কিন্তু সেই আগের তৌসিফকে এখনো মিস করেন। তাঁর কথায়, সেই দিনগুলোতে বন্ধু ও আত্মীয়স্বজনের ভালোবাসা ছিল নিখাদ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এখন তিনি অনেকের কাছে হয়ে উঠেছেন প্রয়োজনীয়।
তৌসিফের ভাষ্যে, ‘আমি এটি বুঝতে পারি, অনেকেই মনে করে আমাকে উইশ করা প্রয়োজন, হয়তো সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে এদের ভালোবাসা পরিবর্তন হবে। কিন্তু আগের সেই দিনগুলো যখন ১০–১২ জন বন্ধু, কাছের মানুষ আমাকে শুভকামনা জানাতেন, ছোট ঘরোয়া আয়োজন থাকত, এই নিয়ে কত মজার ঘটনা ঘটত। এখানে কিন্তু আমি প্রয়োজনীয় না। সবার আসল অনুভূতি। মজা–মাস্তিতে সময় কাটানো এখন আর তেমন হয় না। সেই তৌসিফের জন্মদিনগুলো খুব মিস করি।’
শৈশব থেকেই দুষ্টুমির জন্য নিয়ম করে বকা খেতে হয়েছে তৌসিফকে। তবে জন্মদিন এলে আগেই পরিবারের সঙ্গে হিসাব-নিকাশ মেলাতেন, এই দিনে ভুলেও তাকে বকা দেওয়া যাবে না। তবু স্কুলে পড়ার সময় একদিন জন্মদিনে হঠাৎ দুষ্টুমি করায় তাঁর বাবা সামান্য বকলেন তৌসিফকে। সেই অভিমানে জন্মদিন ভোরে বাসা থেকে পালিয়ে যান তৌসিফ। সারা দিন আর বাসায় আসেননি।
সেই দিনটিই এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি বলেন, ‘জন্মদিনের রাতেই বাবা অল্প বকেছিলেন। সকালে স্কুলে যেতে হবে। তখন দেখেন আমি রুমে নাই। খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। পরে অবশ্য জানতে পারেন, আমি স্কুলে রয়েছি। আশপাশেই সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যায় বাসায় এসেছিলাম। পরে অবশ্য আদর বেশিই পেয়েছিলাম।’
এবার বড় পরিসরে জন্মদিন আয়োজনের কথা থাকলেও সেগুলোকে না করে দিয়েছেন এই অভিনেতা। তিনি মনে করেন, এখনো বড় করে জন্মদিন উদ্যাপনের সময় হয়নি। ক্যারিয়ারে আরও ভালো কাজ করতে চান। তৌসিফ জানালেন, আজ ‘স্পাইসি অব লাভ’ নামের একটি নাটকের শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকবেন। সন্ধ্যার পর সময় পরিবারের সঙ্গে কাটাবেন। নাটকে সহশিল্পী কেয়া পায়েল। নাটকটি পরিচালনা করছেন সাজ্জাদ হোসাইন বাপ্পী। তৌসিফ অভিনীত ‘চক্র’ ওয়েব সিরিজ এখনো আলোচনায় রয়েছে।