বৃহস্পতিবার বিকেলে মারা গেছেন বরেণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান। বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন এই বয়োজ্যেষ্ঠ শিল্পী। গুণী এ অভিনেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শোবিজ অঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ অভিনেতার সঙ্গে কাজের স্মৃতি স্মরণ করছেন নির্মাতা থেকে অভিনেতারা।
মাসুদ আলী খানের সন্তান চরিত্রে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন অভিনেতা শহীদুজ্জামান সেলিম। পর্দার বাইরেও মাসুদ আলী খানকে বাবার মতোই শ্রদ্ধা করতেন তিনি। দুজনের এতই হৃদ্যতা ছিল যে ‘তুমি’ বলে সম্বোধন করতেন শহীদুজ্জামান সেলিম। এ ছাড়া তাঁর পরিচালনায় নাটকেও অভিনয় করেছেন মাসুদ আলী খান।
গতকাল বিকেলে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় শহীদুজ্জামান সেলিমের সঙ্গে, সেখানেই মাসুদ আলী খানকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুলে বসেন তিনি। সেখানেই তিনি জানান, একসময় বক্সার হিসেবেও বেশ সুনাম ছিল মাসুদ আলী খানের।
শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘একটা মানুষের এত বর্ণাঢ্য জীবন। চাকরি থেকে অভিনয়, সব জায়গাতেই তিনি একজন হিরো ছিলেন। এর বাইরে বক্সার হিসেবেও বেশ সুনাম ছিল তাঁর। বছর পাঁচেক আগে আমার পরিচালনার এক নাটকে বক্সিং নিয়ে কিছু একটা করার পরিকল্পনা করি। এর জন্য বক্সিংয়ের বিভিন্ন সরঞ্জাম যেমন বক্সিং গ্লাবস, পাঞ্চিং ব্যাগসহ আরও কিছু জিনিস কিনেছিলাম। যদিও নাটকটি কমেডি ঘরানার ছিল, তা–ও অনেক খুশি হয়েছিলেন মাসুদ ভাই।’
পর্দায় শহীদুজ্জামান সেলিম নামে পরিচিতি পেলেও তাঁর সার্কিফিকেটে নাম শহীদুজ্জামান খান। আর তা নিয়ে ভীষণ অভিমান করেছিলেন মাসুদ আলী খান। নামের শেষে খান ছেঁটে ফেলার বিষয়ে শহীদুজ্জামান সেলিমকে প্রায়ই বিভিন্ন সময়ে প্রশ্ন করেছেন মাসুদ আলী খান। এ বিষয়ে শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমার সার্টিফিকেট নাম শহীদুজ্জামান খান। কিন্তু পর্দায় খান বাদ দিয়ে শুধু শহীদুজ্জামান সেলিম ব্যাবহার করি। আর এতেই ভীষণ অভিমান করেছিলেন মাসুদ ভাই। প্রায়ই আমাকে বলতেন, “এই তুই খান বাদ দিলি কেন?”’
শহীদুজ্জামানের বাসাতেও আসা–যাওয়া ছিল মাসুদ আলী খানের। শুটিংয়ের বাইরেও অনেক দিন-রাত একসঙ্গে কেটেছে আড্ডায়। শহীদুজ্জামান সেলিমের কথায়, ‘আমার বাসায় মাসুদ ভাইয়ের আসা–যাওয়া ছিল। বেশ হৃদ্যতা ছিল আমার পরিবারের সঙ্গে। কত আড্ডায় যে রাত–দিন কেটে গেছে আমাদের, তাঁর হিসেব নেই।’