জন্মদিন নিয়ে আলাদা আগ্রহ, উচ্ছ্বাস নেই অভিনেতা কচি খন্দকারের। নিজের জন্মদিনের তারিখটাও মনে থাকে না এই অভিনেতার। এবারও মনে ছিল না। স্বাভাবিকভাবেই গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বাসায় গিয়ে চমকে ওঠেন ভক্তদের কচি ভাই। দেখেন এই অভিনেতার স্ত্রী জন্মদিনের উপহার হিসেবে লুঙ্গি, গামছা ও শার্ট উপহার নিয়ে বসে আছেন। জন্মদিনে এবার স্ত্রীর কাছে থেকে উপহার পেয়ে কচি খন্দকার বললেন, ‘আমার জীবনের সেরা উপহার।’
এর আগের জন্মদিনে স্ত্রী স্বপ্না খন্দকারের কাছ থেকে কখনো পাঞ্জাবি, ফতুয়া, কখনোবা আবার শার্ট উপহার পেয়েছেন। এবারের উপহার প্রসঙ্গে এই অভিনেতা বলেন, ‘লুঙ্গি, গামছা—এগুলোই আমি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি। এগুলোই আমাকে শান্তি দেয়। আমার এই পছন্দকে সে যে ভালোবেসে উপহার দেবে, এই চিন্তাটা আমাকে অবাক করেছে। আমি কিছুই জানতাম না। কিন্তু আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছি তাঁর এই রুচি দেখে। সাধুবাদ না জানিয়ে পারিনি। আমরা দিন দিন নিজেদের সংস্কৃতির কথা ভুলে যাচ্ছি। সেখানে বাঙালিয়ানা চিন্তার উপহার অবশ্যই আমার সেরা প্রাপ্তির একটি হয়ে থাকবে।’
জন্মদিনেও শুটিং করতে হচ্ছে। কচি খন্দকার জানালেন, অনেক আগে নাটকটির শিডিউল দেওয়া ছিল। তখন জন্মদিনের কথা মনে ছিল না। তবে দিনটি পরিবারের সঙ্গে থাকলে আরও ভালো কাটত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শুটিংয়ে অনেকেই জানত না আজ আমার জন্মদিন। সবাই আসছে আর জানছে। এটা নিয়ে প্রতিবারই বেশ মজা হয়। কেক কাটা, কিছু কথা বলা। সবার ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করে। শুটিংয়েও ভালো সময় কাটে। তবে মনটা পরিবারের কাছে থাকে। বিশেষ এই সময় পরিবারের সঙ্গেই থাকা দরকার।’
১৯৬৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনেতা। সেই হিসাবে এবার ৬০ পেরিয়ে গেলেন কচি খন্দকার। হেসে বললেন, ‘বয়স আমার বেশি না। শোনো, আমি কিন্তু হাসান মাসুদের এক বছরের জুনিয়র, শহীদুজ্জামান সেলিম, ফারুক আহমেদ, ফজলুর রহমান বাবু, লাভলু ভাইয়েরা আমার সিনিয়র। অনেকেই জোর করে অনেক আগে থেকে বাবার চরিত্রে অভিনয় করিয়েছেন। তাঁদের উদ্দেশ্য সিনিয়র বানিয়ে দেবে কিন্তু সফল হয় নাই (হাসি)। সেই কারণে অনেকেই বয়স্ক মনে করে। আমি আসলে এখনো দর্শকদের কাছে কচি ভাই।’
দীর্ঘ সময়ের বেশির ভাগ তিনি কাজ নিয়ে ভেবেছেন। বাংলাদেশের মৌলিক গল্পগুলো তুলে ধরেছেন। এসব তাঁকে মানসিক শান্তি দেয়। তিনি বলেন, ‘আমি যে কনটেন্ট লিখেছি বা করেছি সেগুলো একদমই আলাদা। এই গল্পগুলো অন্য কারও সঙ্গে মিলবে না। “কবি”, “ক্যারাম”, “ভূগোল”, “এফডিসি”সহ অনেক কাজ একেবারেই আলাদা করা যায়। এটা নিয়ে আমার দীর্ঘদিনের চেষ্টা ছিল। সেখানে আমি হয়তো কিছুটা সফল হতে পেরেছি।’
নাটক রচনা, অভিনেতা ও পরিচালক—সব জায়গাতেই তাঁর সফলতার ছাপ আছে। তবে নিজেকে নির্মাতা হিসেবেই তিনি পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনায় কম দেখা যায়। চরিত্রের বৈচিত্র্য না থাকার কারণে তিনি অভিনয়ও কমিয়ে দিয়েছেন। চলচ্চিত্রে অভিনয় নিয়েও তাঁর অভিমান আছে। এখানেও তিনি মনের মতো চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ডাক পাননি। টেলিভিশনে তাঁর প্রায় দুই যুগের ক্যারিয়ার। তবে মঞ্চে কাজের অভিজ্ঞতা আরও আগের। ১৯৭৯ সালে তিনি মঞ্চনাটক লেখা ও নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেন। তাঁর থিয়েটারের নাম ছিল অনন্যা নাট্যদল। তিনি জানান, নির্মাতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছিলেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল চলচ্চিত্র বানানোর। এখন সেদিকেই তিনি হাঁটছেন।