গত বুধবার অভিনেতা আরশ খান ও অভিনেত্রী তাসনুভা তিশার নেতৃত্বে আটজনের একটি দল যায় নোয়াখালীর মাইজদীতে। শিশু খাবার থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের জন্য খাবার, ওষুধ নিয়ে যান। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে ক্যাম্প করেন। দলে দলে ভাগ হয়ে ত্রাণ নিয়ে নিজেরাই নৌকা নিয়ে গ্রামগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করেন।
আরশ খান গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সদর থেকে ভেতরে অনেক জায়গা আছে, সেখানে কোনোরকম থাকার জায়গা থাকলেও খাবারের অভাব। আমরা সেসব জায়গা খুঁজে খুঁজে বের করে সেখানেও ত্রাণ দিয়েছি। এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সদর থেকে নৌকা বা স্পিডবোটে সেখানে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা লাগছে। ফলে একেবারেই অজপাড়াগাঁয়ের খবর এখনো অনেকে জানেন না। যাঁরা এখন যাচ্ছেন, তাঁরা বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখবেন।’
নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে আরশ আরও বলেন, ‘শিশু, বয়স্কদের অবস্থা দেখে সত্যিই খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল পৃথিবীতে তাঁদের মতো অসহায় আর কেউ নেই। এসব দেখে সাঁতার জানি কি জানি না, এটাও মাথায় ছিল না। লাইফ জ্যাকেট গায়ে ৩০ ফুট পানিতেও নেমেছি। ত্রাণের জন্য নিয়ে যাওয়া চিড়া–গুড় খেয়েই আমরা দিন-রাত পার করেছি।’
এ সময় ত্রাণ বহনকারী পিকআপ ভ্যানচালকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আরশ। তিনি বলেন, ‘ড্রাইভার জয় যেভাবে আমাদের সঙ্গে দিনরাত কাজ করেছেন, ভোলার নয়। গরিব মানুষ, দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। অথচ এই বিপদে নিজের আয়ের কথা না ভেবে হাতে হাত রেখে কাজ করেছেন আমাদের সঙ্গে। তাঁকে স্যালুট।’
ত্রাণ দিয়ে ফেরার পথে বিপদেও পড়েছিলেন বলে জানালেন এই অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘নিজেরাই দুটি বড় নৌকা চালিয়ে রাতে সদরে ফিরছিলাম আমরা। আমি আগের নৌকায় ছিলাম। পেছনের নৌকাটি বিদ্যুতের ছেঁড়া তার থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। নৌকার সবাই শক খায়। পরে সেনাবাহিনীর একটি দল চারজনকে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়।’
শুক্রবার দিবাগত রাত চারটার দিকে আরশ, তিশাসহ কয়েকজন ঢাকা ফিরেছেন। তাঁদের একটি টিম এখনো সেখানে কাজ করছেন। আরশ জানান, তাঁরা নিজেরাই অর্থ সহায়তা দিয়ে তহবিল গঠন করেছেন।
জানা গেছে, বন্যাদুর্গত কুমিল্লা অঞ্চলে বেশ কয়েকটি জায়গায় আরেকটি একটি স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্যরা ত্রাণ বিতরণ করছেন।
নিজে যেতে না পারলেও দলটির সঙ্গে কাজ করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী। শুধু অনুদানই নয়, ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করে দিচ্ছেন তিনি। এই স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে আছেন আফরান নিশোও