হুমায়ুন ফরীদি তাঁর কয়েক দশকের কর্মময় জীবনে অসংখ্য বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবি: সংগৃহীত
হুমায়ুন ফরীদি তাঁর কয়েক দশকের কর্মময় জীবনে অসংখ্য বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

হুমায়ুন ফরীদি: এক কিংবদন্তির কথা

‘মহিলা সমিতির সামনে দেখলাম ছোটখাট একটা জটলা, এগিয়ে গিয়ে দেখলাম, এক যুবক চা খাচ্ছে, আর একদল যুবক তাকে ঘিরে ধরে চা খাওয়া দেখছে, যুবকটি হুমায়ুন ফরীদি। আমার এই বইটি সেই যুবককে উৎসর্গ করলাম’, হুমায়ূন আহমেদ তাঁর একটি বইয়ের উৎসর্গপত্রে এমনটিই লিখেছেন। হঠাৎ মনে এল, হুমায়ুন নামের প্রায় সবাই তো দেখি কিংবদন্তি। হুমায়ূন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন কবির, হুমায়ুন ফরীদি। মোগল সম্রাট হুমায়ুন সম্পর্কে খুব বেশি না জানলেও শিল্পসাহিত্যের এই প্রবাদপ্রতিম পুরুষদের আমরা ভালো করেই চিনি, জানি। আজ শুধু জীবনের নাট্যমঞ্চ থেকে আচানক ঝরে পড়া ওই ফরীদির কথাই বলব। অন্যদের কথা অন্যদিন।
২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি শতকোটি ভক্তকে বেদনার সাগরে ডুবিয়ে বিদায় নিয়েছিলেন হুমায়ুন ফরীদি। প্রিয় অভিনেতাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি। জীবনভর শুধু অভিনয়ই করে গেছেন। নিজেই বলতেন, ‘অভিনয় ছাড়া আর কিছুই পারি না আমি।’ ভীষণ কৌতুকপ্রিয় মানুষ ছিলেন। নাটকের সেটে  নাকি সদা সবাইকে কৌতুকে মাতিয়ে রাখতেন। ‘এত কৌতুক মনে রাখেন কীভাবে’, প্রশ্নের উত্তরে একবার বলেছিলেন, ‘জীবনটাই তো কৌতুক, আমরা কেউ থাকব না, থাকবে শুধু কৌতুক।’ নিজের জীবনের সঙ্গে কৌতুক করতে করতে অস্তাচলে যাওয়া হুমায়ুন ফরীদির অভাব কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। জানা যায়, অভিনয়জীবনের মতোই জীবনাচারেও ফরীদি ছিলেন সাবলীল-স্বতঃস্ফূর্ত।

আজন্ম শিল্পী হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ২৯ মে, ১৯৫২; নারিন্দা, ঢাকা। বাবা এ টি এম নুরুল ইসলাম ছিলেন জুরিবোর্ডের কর্মকর্তা। বাবার বদলির চাকরির সুবাদে ফরীদিকে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ অসংখ্য জেলায় ঘুরতে হয়েছে। মা বেগম ফরিদা ইসলাম গৃহিণী। ছোটবেলায় ছন্নছাড়া  স্বভাবের জন্য ফরীদিকে ‘পাগলা’, ‘সম্রাট’, ‘গৌতম’—এমন নানা নামে ডাকা হতো। প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রাম কালীগঞ্জে।

টেলিভিশন নাটকের দৃশ্যে সুবর্ণা ও হুমায়ুন ফরীদি

মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুল পাস দিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হলেন। এল একাত্তর, চলে গেলেন যুদ্ধে। ৯ মাসের যুদ্ধ পরে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ঢাকায় ফিরলেও ঢাকা ভার্সিটিতে ফেরেননি। টানা পাঁচ বছর বোহিমিয়ান জীবন কাটিয়ে শেষে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অনার্সে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল দীনের সংস্পর্শে আসেন। এই ক্যাম্পাসেই ‘আত্মস্থ ও হিরণ্ময়ীদের’ বৃত্তান্ত’ নামে একটি নাটক লিখে নির্দেশনা দেন এবং অভিনয়ও করেন ফরীদি। ছাত্রাবস্থায়ই ১৯৭৬ সালে তিনি ঢাকা থিয়েটারের সদস্য হন। জড়িয়ে যান মঞ্চের সঙ্গে। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বাঙালির নিজস্ব নাট্য-আঙ্গিক গঠনে গ্রাম থিয়েটারের ভূমিকা ছিল অসামান্য, ফরীদি এর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। মঞ্চনাটককে প্রসারিত করতে তিনি নাটককেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তোলেন। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন এর অন্যতম। ১৯৯০-এর দশকে তিনি সিনেমার রুপালি জগতে পা বাড়ান।

সেলিম আল দীনের ‘সংবাদ কার্টুন’-এ একটি ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করে ফরীদি মঞ্চে উঠে আসেন। অবশ্য এর আগে ১৯৬৪ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে কিশোরগঞ্জে মহল্লার নাটক ‘এক কন্যার জনক’-এ অভিনয় করেন। মঞ্চে তাঁর সু-অভিনীত নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য  ‘শকুন্তলা’, ‘ফণীমনসা’, ‘কীত্তনখোলা’, ‘মুন্তাসির ফ্যান্টাসি’, ‘কেরামত মঙ্গল’ প্রভৃতি। ১৯৯০ সালে স্বনির্দেশিত ‘ভূত’ দিয়ে শেষ হয় ফরীদির ঢাকা থিয়েটারের জীবন।

‘সংশপ্তক’ নাটকে হুমায়ুন ফরীদি ও খলিল

আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় ‘নিখোঁজ সংবাদ’ ফরীদির অভিনীত প্রথম টিভি নাটক। আশির দশকের দর্শকদের নিশ্চয়ই বিটিভির ‘ভাঙ্গনের শব্দ শুনি’তে (১৯৮৩) সেরাজ তালুকদারের কথা মনে আছে। সেলিম আল দীনের রচনা ও নাসির উদ্দীন ইউসুফের পরিচালনায় এই নাটকে ফরীদিকে দেখা যায় টুপি-দাড়িওয়ালা শয়তানের এক জীবন্ত মূর্তিরূপে। ‘আরে, আমি তো জমি কিনি না, পানি কিনি, পানি’, ‘দুধ দিয়া খাইবা না পানি দিয়া খাইবা বাজান’, এই ডায়ালগ তখন তুমুল জনপ্রিয়। এরপর শহীদুল্লা কায়সারের ‘সংশপ্তক’-এ (১৯৮৭-৮৮) ‘কান কাটা রমজান’ চরিত্রে ফরীদির অনবদ্য অভিনয় কেউ ভোলেনি। ভোলা কি যায়! অসম্ভব! ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘নীল নকশার সন্ধানে’ (১৯৮২), ‘দূরবীন দিয়ে দেখুন’ (১৯৮২),‘বকুলপুর কতদূর’ (১৯৮৫), ‘মহুয়ার মন’ (১৯৮৬), ‘সাত আসমানের সিঁড়ি’ (১৯৮৬) ‘একদিন হঠাৎ’ (১৯৮৬), ‘ও যাত্রা’ (১৯৮৬) ‘পাথর সময়’, ‘সমুদ্রে গাঙচিল’ (১৯৯৩), ‘চন্দ্রগ্রস্থ’ (২০০৬), ‘কাছের মানুষ’ (২০০৬), ‘কোথাও কেউ নাই’ (১৯৯০), ‘মোহনা’ (২০০৬), ‘ভবের হাট’ (২০০৭), ‘জহুরা’, ‘আবহাওয়ার পূর্বাভাস’, ‘প্রতিধ্বনি’, ‘শৃঙ্খল’(২০১০), ‘প্রিয়জন নিবাস’ (২০১১), ‘অক্টোপাস’, ‘আরমান ভাই দি  জেন্টেলম্যান’সহ (২০১১) আরও অনেক নাটকে বিরামহীনভাবে দর্শকদের হাসিয়েছেন, কাঁদিয়েছেন।

উত্তেজনার উত্তুঙ্গে নিয়ে দর্শক-শ্রোতাকে দিবা-নিশি মাতিয়ে রেখেছেন। অসম্ভব ইম্প্রোভাইজ করতে পারতেন। কখনোই স্ক্রিপ্টের গণ্ডিতে আটকা থাকেননি। টেলিভিশন নাটকের সব আঙ্গিক ভেঙে গড়ে তোলেন নতুন ধারা।

‘বিশ্বপ্রেমিক’ সিনেমায় মৌসুমী ও হুমায়ুন ফরীদি

নব্বইয়ের গোড়া থেকেই হুমায়ুন ফরীদির বড় পর্দার পথচলা শুরু হয়। বাণিজ্যিক আর বিকল্প ধারা মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে প্রথম ছবি তানভীর মোকাম্মেলের ‘হুলিয়া’। এরপর তাঁর অভিনীত সিনেমার মধ্যে ‘সন্ত্রাস’, ‘বীরপুরুষ’, ‘দিনমুজুর’, ‘লড়াকু’, ‘দহন’, ‘বিশ্বপ্রেমিক’, ‘কন্যাদান’ (১৯৯৫), ‘আঞ্জুমান’(১৯৯৫), ‘দূর্জয়’ (১৯৯৬), ‘বিচার হবে’ (১৯৯৬), ‘মায়ের অধিকার’ (১৯৯৬), ‘আনন্দ অশ্রু’(১৯৯৭), ‘শুধু তুমি’ (১৯৯৭), ‘পালাবি কোথায়’, ‘একাত্তরের যীশু’, ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’, ‘মিথ্যার মৃত্যু’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘ব্যাচেলর’ (২০০৪), ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়া’ (২০০৪), ‘রূপকথার গল্প’ (২০০৬), ‘আহা!’ (২০০৭), ‘প্রিয়তমেষু’ (২০০৯), ‘মেহেরজান’ (২০১১) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। নেগেটিভ-পজিটিভ; অর্থাৎ নায়ক-খলনায়ক—দুই চরিত্রেই তিনি ছিলেন সাবলীল, এককথায় ভার্সেটাইল। একসময় মানুষ আর নায়ককে নয়, এক ভিলেনকে দেখতেই হলে যেতেন। সেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী খলনায়ক ফরীদি। প্রায় দেড় দশক তিনি দর্শকদের চুম্বকের মতো সিনেমা হলে আটকে রাখেন। ২০০৩ সালের পর সিনেমা প্রায় ছেড়ে দিলে দর্শকও হল বিমুখ হতে শুরু করেন। তাঁর অভিনীত শেষ সিনেমা ‘এক কাপ চা’ ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। নাটকে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি মেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মাননা। আর ২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ ছবিতে সেরা অভিনেতা হিসেবে পান ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগে কিছুদিন অতিথি শিক্ষক হিসেবেও পাঠদান করেন।
আমরা যাঁরা নব্বই দশকের সিনেমার দর্শক, তাঁরা যেন ফরীদির একটু বেশিই ভক্ত। রেডিওতে তখন গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কণ্ঠে  সদ্য মুক্তি পাওয়া সিনেমার কথা শুনতাম। মাঝেমধ্যে হুমায়ুন ফরীদির ডায়ালগ শোনানো হতো। রেডিওতে ফরীদির নাম শুনলেই কান উৎকর্ণ হয়ে উঠত। নিকটবর্তী হলে সেই সিনেমা এলেই হামলে পড়তাম। মনে পড়ছে, একটি সিনেমায় অসংখ্যবার ফরীদির সংলাপ ছিল, ‘আরে মাফ দে রে মাফ দে, লাশের মাফ দে’। ভিলেন হিসেবে কোনো শত্রুর চেহারা মনে পড়লেই চোখ দুটি কাচের গুলির মতো ঘুরাতেন আর খ্যাঁক খ্যাঁক করে হাসতে হাসতে বলতেন, ‘আরে মাফ দে রে...।’ অসংখ্য সিনেমার ডায়ালগ মনে পড়ছে, কিন্তু তা লেখার মতো যথেষ্ট পরিসর কোথায়।

‘বাঁচো এবং বাঁচতে দাও’, প্রায়ই এমন একটা ফিলোসফিক্যাল কথা বলতেন ফরীদি। সহ-অভিনেতাদের কাছে তাঁর দরাজ দিলের কথা শোনা যায়। নাট্যাঙ্গনে নাকি একটি কথা প্রচলিত ছিল যে যদি টাকা লাগে, তবে হুমায়ুন ফরীদির কাছ থেকে ধার নাও। কারণ ফেরত দিতে হবে না। কাউকে টাকা দিলে তা নাকি বেমালুম ভুলে যেতেন। তাই কোনো দিন ফেরতও চাইতেন না। একবার সেটে নাকি চঞ্চল চৌধুরীকে দুপুরের খাবারে ভর্তা দিয়ে ভাত খেতে দেখেছিলেন। চঞ্চলের ভর্তা পছন্দের কথা শুনে একদিন বাসায় নানা রকমের ভর্তা বানিয়ে তাঁকে আসতে বলেন। চঞ্চল তখন পাবনাতে। রাত দুইটায় তিনি ঢাকা ফিরলে ওই রাতেই নাকি ফরীদির বাসায় যেতে হয় দাওয়াত রক্ষা করতে। গিয়ে দেখেন, প্রায় ৫০ রকমের ভর্তা সামনে করে বসে আছেন ফরীদি। আরেকবার নাকি হোতাপাড়া থেকে সুবর্ণার জরুরি ফোন পেয়ে রাত দুইটার পর ঢাকায় রওনা হন। হঠাৎ মনে পড়ে, প্রোডাকশন বয় ইসমাইলকে কোনো টিপস দেওয়া হয়নি। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে বহুদূর এসে নিজে গাড়ি চালিয়ে আবার সেটে ফিরে গিয়ে ওই রাতেই তাঁকে কিছু দিয়ে ঢাকায় ফেরেন। এমন বহু গল্প আছে, যা তাঁর হৃদয়ের বিশালতা প্রমাণ করে।

হুমায়ুন ফরীদি। ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার পর সহপাঠীর বোন নাজমুন আরা বেগম মিনুর গলায় বেলি ফুলের মালা দিয়ে বিয়ে করেছিলেন। মিনু তাঁকে বোহিমিয়ান জীবন থেকে সংসারের সাজানো শয্যা পেতে দিয়েছিলেন। ধরে রাখতে পারেননি। টেকেনি। প্রথম প্রেমের সেই মালা ছিঁড়ে সুবর্ণা মুস্তাফার গলায় পরিয়েছিলেন। না-ফেরার দেশে পারি জমানোর বছর চারেক আগে সে বন্ধনও ভেঙে যায়।

৬০তম জন্মদিনে শেক্‌সপিয়ারের ‘কিং লিয়ার’-এ অভিনয়ের বাসনা ব্যক্ত করেছিলেন। হলো না। তার আগেই বহু অজানা অপূর্ণ বাসনা নিয়ে চলে গেলেন এই জাত অভিনেতা। দেশের সিনেমা-নাটক নির্মাণজগতের বোদ্ধারা কেউ কেউ দাবি করেন যে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার আর নির্মাণের ক্যারিশমা দিয়ে যদি ফরীদিকে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা যেত, তবে উপমহাদেশের শীর্ষ সারির একজন অভিনেতা হিসেবে তাঁর স্বীকৃতি মিলত। একান্ত ব্যক্তিজীবনে অসম্ভব অভিমানী এই শিল্পী জীবনকে পিষে-ঘষে-পুড়িয়ে জীবন ধরার চেষ্টা  করে গেছেন। এখনো চোখ মুদলে তাঁর অট্টহাসিতে কাচ ভাঙার শব্দ শুনি। বিস্ময়জাগানিয়া অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি এখনো আমাদের ঘোরের মধ্যে নিয়ে যান। এমন ক্ষমতা কজনের আছে, কজনের থাকে।

মঞ্চে দিয়ে শুরু করলেও হ‌ুমায়ূন ফরীদি মঞ্চের চেয়েও তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন চলচ্চিত্রে

দিন যায়, মাস যায়, পেরোয় বছর। মিডিয়ার জগৎ থেকে টেলিভিশন, সিনেমার পর্দা থেকে মঞ্চের রহস্যঘেরা দুনিয়া—সবখানেই তাঁর অনুপস্থিতি যেন দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে। জাহাঙ্গীরনগরের মুক্তমঞ্চ, বেইলি রোডের নাটকপাড়া, এফডিসির রংমহল—সব খাঁ খাঁ করে। সর্বত্রই বেদনার নীল পাখিদের ডানা ঝাপটানি শুনি। ফরীদি নেই। নেই হুমায়ুন ফরীদি। তিনি ঠাঁই নিয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়ে, মগজে। ফরীদি আছেন পৃথিবীর সব নাট্যমঞ্চের ড্রেসিংরুমে, পাটাতনে। আছেন রুপালি পর্দার আড়ালে, থাকবেন অনন্তকাল।
মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, অধ্যাপক ইতিহাস বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়