দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে ‘ইত্যাদি’ ধারণের ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছিল সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত পুরাকীর্তিসমৃদ্ধ নগরী বাগেরহাটে। মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছিল দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্রবন্দর মোংলা বন্দরে। আলোচিত এই পর্বটির পুনঃপ্রচার করা হবে ৬ ডিসেম্বর, শুক্রবার রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল বাগেরহাটকে নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে স্থানীয় শতাধিক শিল্পীর নৃত্য।
গানটির সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীত আয়োজন করেছেন মেহেদী। এবার সংগীত পরিবেশন করেছেন বাগেরহাটেরই সন্তান কণ্ঠশিল্পী নাসির এবং প্রতিশ্রুতিশীল শিল্পী সানজিদা রিমি। লিখেছেন কবির বকুল। সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন কিশোর দাস।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান বাগেরহাটকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে উপস্থিত দর্শকের মাঝখান থেকে তিনজন দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন বাগেরহাটের জনপ্রিয় লোক বাদ্যযন্ত্রশিল্পী নিখিল কৃষ্ণ মজুমদার ও তাঁর বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ইত্যাদির এবারের পর্বে রয়েছে কয়েকটি প্রতিবেদন। রয়েছে বাগেরহাটের ওপর একটি তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন। সুন্দরবন, মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ বাগেরহাটের বিভিন্ন দর্শনীয়, আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র ও প্রত্নসম্পদ এবং হজরত খানজাহান (রহ.)–এর অসংখ্য কীর্তি ও স্থাপনার ওপর প্রতিবেদন। এসব প্রতিবেদনের জন্য ইত্যাদির টিম মোংলা থেকে নদীপথে হিরণ পয়েন্ট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে যায়। বাগেরহাটের একদল নারী তাঁদের ব্যতিক্রমী চিন্তা আর কর্মসৃজনে ফেলনার সামগ্রী কাজে লাগিয়ে নানান উপকরণ তৈরি করার পাশাপাশি এখন তৈরি করছেন বিদেশে রপ্তানিযোগ্য মানুষের বসবাসের জন্য বাড়ি। তাঁদের ওপর রয়েছে একটি প্রতিবেদন।
তারিখ ও সময়সংক্রান্ত একটি ব্যতিক্রমধর্মী মনস্তাত্ত্বিক জাদু প্রদর্শন করেন জাদুকর ম্যাজিক রাজিক। চিঠিপত্র বিভাগে বাগেরহাটের এক ব্যতিক্রমী নারী উদ্যোক্তার জীবনসংগ্রামের চিত্র তুলে ধরা হয়। বিদেশি প্রতিবেদন পর্বে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা রাজ্যের উত্তরে অবস্থিত গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ওপর একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন।
বাগেরহাটের ঢাংমারী গ্রামের অধিকাংশ মানুষেরই জীবিকার প্রধান উৎস সুন্দরবন। তবে মাঝেমধ্যে বন সুরক্ষায় বন বিভাগ প্রদত্ত নিষিদ্ধ সময়েও কেউ কেউ সুন্দরবনে প্রবেশ করে বিপদের সম্মুখীন হন, কেউ কেউ মৃত্যুবরণও করেন। তেমনই একজন স্থানীয় বনজীবী মোশারফ গাজী, যিনি কুমিরের আক্রমণে নিহত হন। এ বিষয়েই ইত্যাদির এবারের পর্বে রয়েছে একটি প্রতিবেদন।
এ ছাড়া সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও প্রসঙ্গ নিয়ে সামাজিক অসংগতি ও সমাজ সংস্কারের ওপর ছিল বেশ কিছু তির্যক নাট্যাংশ। নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও যথারীতি ছিল নানি-নাতি পর্ব। এবারের ইত্যাদিতে উল্লেখযোগ্য শিল্পীরা হলেন সোলায়মান খোকা, বাবুল আহমেদ, আবদুল আজিজ, আবদুল্লাহ রানা, শুভাশিস ভৌমিক, শবনম পারভীন, কাজী আসাদ, জিল্লুর রহমান, কামাল বায়েজিদ, জামিল হোসেন, মুকিত জাকারিয়া, আনোয়ার শাহী, আবু হেনা রনি, আনোয়ারুল আলম সজল, আনন্দ খালেদ, আমিন আজাদ, নজরুল ইসলাম, শাহেদ আলী, মামুনুল হক টুটু, ইকবাল হোসেন, জাহিদ শিকদার, বিলু বড়ুয়া, সিলভিয়া কুইয়া, মতিউর রহমান, বেলাল আহমেদ মুরাদ, তারিক স্বপন, সাদিয়া তানজিন, অশোক বড়ুয়া, সাবরিনা নিসা, সুবর্ণা মজুমদার, সিয়াম নাসির, শামীম আহমেদ, নিপুসহ অনেকে।