ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে রয়েছে মহিন খান পরিচালিত নাটক ‘বিয়ে করবো সিলেট’। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন সামিরা খান মাহি। এই নাটকসহ অন্যান্য প্রসঙ্গে গত রোববার তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন
ভালোবাসা দিবসের কয়টি নাটকে দেখা যাবে আপনাকে?
মাস দুয়েক ধরে যে কয়টা নাটকে অভিনয় করেছি, এখন শুনছি সব কটি ভালোবাসা দিবসে প্রচার হবে। এগুলো যে ভালোবাসা দিবসে প্রচার হবে, একটা ছাড়া বাকি কোনোটার খবর জানতামই না। এখন শুনছি পাঁচটা নাটক অন এয়ার হবে। ভালোবাসা দিবসের দিন দেখব আরও তিন-চারটা যোগ হবে। সবাই যখন একের পর এক বলছে, অবাক হচ্ছি। এসব নাটকে আমি অভিনয় করেছি মুশফিক ফারহান, শাশ্বত, খায়রুল বাশার, নিলয় আলমগীর, ফারহান জোভান।
যাঁদের সঙ্গে কাজ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো কাজের অভিজ্ঞতা কার সঙ্গে?
সবচেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা কার সঙ্গে, বললে তো দোষী হয়ে যাবে। তবে এটা বলতে পারি, একেকজনের সঙ্গে একেক রকম অভিজ্ঞতা। যেমন ফারহানের সঙ্গে আমি অনেক বেশি স্বস্তি অনুভব করি, পর্দার বাইরেও সে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। খায়রুল বাশারের সঙ্গে ইদানীং অনেক কাজ হচ্ছে। ওকে আমার খুবই জেনুইন টাইপের মানুষ মনে হয়েছে। যদিও কম কাজ হয়েছে, তারপরও বন্ধুর মতোই। নিলয় ভাই তো খুবই চমৎকার মানুষ, শুটিং সেটে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন। জোভান ভাই খুবই ঠান্ডা, চুপচাপ স্বভাবের। একটা ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলেন। তৌসিফ ভাইয়ের সঙ্গেও বেশ কয়েকটি কাজ হয়েছে। তিনি ভীষণ সক্রিয়। সম্প্রতি শ্যামল মাওলা ভাইয়ের সঙ্গে কাজ হয়েছে। তাঁর সঙ্গে প্রথমবার কাজ হয়েছে, এই অভিজ্ঞতা সত্যি অবিশ্বাস্য। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতেও পেরেছি। শুটিং সেটে সিনিয়র কেউ থাকলে অনেক প্রেরণা পাওয়া যায়। শ্যামল মাওলা ভাইও তেমনই।
নিলয়ের কথা বলছিলেন। তাঁর সঙ্গে ‘বিয়ে করবো সিলেট’ নামের একটি নাটক এখন ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ১ নম্বরে আছে। এটা আনন্দের নাকি চিন্তার?
অবশ্যই ভালো লাগার, কারণ অনেক দিন পর এমন ঘটনা ঘটল। মাঝে অনেক দিন আমার নাটক প্রচার হচ্ছিল না। মন খারাপ ছিল। কেন প্রচার হচ্ছিল না, তা–ও বুঝতে পারছিলাম না। চলতি মাসে টানা চারটি নাটক প্রচার হয়েছে। সব কটি নাটকের ভিউজ অ্যান্ড ফিডব্যাক খুব ভালো। সিলেটি ভাষার নাটকে সব সময় দর্শক আমাকে পছন্দ করে। এটা নিয়ে সব সময় আশাবাদী থাকি।
একটি নাটক ট্রেন্ডিংয়ে আছে। আরেক নাটক থাকল না। তখন কি মন খারাপ হয়?
আসলে সব নাটক তো আর ট্রেন্ডিংয়ে থাকবেও না। এটা নির্ভর করে নাটকটির দর্শক গ্রহণযোগ্যতার ওপর। এখনকার দর্শকের পছন্দ বোঝাটাও খুব কঠিন। যেমন খুব ভালো মানের একটা নাটক, করেও আনন্দ পেয়েছিলাম—কিন্তু ভিউ সেভাবেই নেই। আবার একটা গল্প হলো, যেটার প্রত্যাশাই নেই, সেটা দেখা গেল অনেক অনেক ভিউজ।
এই নাটক নিয়ে প্রত্যাশা কেমন ছিল?
এই নাটকের প্রথম পর্ব আমরা শুটিং করেছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে। কয়েক মাসে ২৫ মিলিয়নের বেশি ভিউ হয়েছে। সে হিসেবে দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে একটা প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু এত ভালো প্রত্যাশা করিনি।
আপনার অভিনীত চরিত্র একই ধরনের হচ্ছে, এমনটা কি শুনতে হয়?
এ জন্যই ইদানীং আমি বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করছি। গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। একজন শিল্পীর অভিনয়ের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য থাকাটা খুব দরকার মনে করি। শুরু থেকেই যেহেতু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একই টাইপের চরিত্রে দর্শক দেখেছে, তাই এখন ভাবতে হচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, আরও অনেক বৈচিত্র্যময় কাজ করি, হয়তো সেই কাজগুলো অতটা জনপ্রিয় হয় না। তাই অনেক মানুষের কাছে পৌঁছায় না। ইদানীং সিরিয়াস টাইপ কাজ করছি, যে ধরনের চরিত্রে আমাকে মানুষ কম দেখে। একই ধরনের অভিনয় করি, এটা শুনতে চাই না।
আপনার সঙ্গে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা মানসিকভাবে কতটা নাড়িয়ে দিয়েছিল? এ বিষয়ে কিছু বলতে চান?
সত্যি বলতে, এই ভিডিও নিয়ে মানুষের মধ্যে যে এত আলোচনা, এতে মনে হয়েছে, সবাই ছোট মনের পরিচয় দিয়েছে। কার চামড়ার রং কেমন, এটা নিয়েও আমরা কথা বলব? অদ্ভুত একটা সমাজে বসবাস করছি। আমার কাছে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলতেই বিরক্ত লাগে। হতে পারে আমার চোখে ইনফেকশন, আমার মুখে কিছু একটা ছিল—আমি যেকোনো কারণে মুখটা ঢাকতেই পারি।
ঘটনাটা কবেকার?
খুব বেশি দিন হয়নি। যেদিন ভিডিওটা ভাইরাল হয়েছে, তার ঠিক দুই দিন আগে এই ভিডিওটা করা হয়। যিনি ভিডিও করেছেন তিনি আমারই সহশিল্পী। শুটিং সেটে এই ভিডিওটা তিনি করেছেন। তিনি আমার ভিডিও করছিলেন না, এমনি ফোনের ক্যামেরা অন করে রেখেছিলেন। হঠাৎ করে আমি রুমে ঢোকায়, তার ভিডিওতে চলে আসি; তাই মুখটা ঢেকে ফেলেছি। তিনিও একটু দুষ্টামি করছিলেন। তাকে বলছিলাম, আপু আমাকে ভিডিও কইরো না। তারপরও তিনি করেছেন। আমার মনে হয়েছে, বিষয়টা তিনি সিরিয়াসলি নেননি। তারপর ফেসবুকে আপলোড দিয়েছেন। দুই দিন পর আমি দেখলাম, ভিডিওটা ভাইরাল। তারপর আমি ওই আপুকে টেক্সট করেছি। কল করেছি। তিনি সরি বলেছেন। কিন্তু সরি বলার আগে তো যা হওয়ার হয়ে গেছে। আমার যা ক্ষতি হওয়ার তো হয়েছে।