দীর্ঘদিন ধরেই ‘সালাহউদ্দিন লাভলু’ নামে ফেসবুকে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি। এই সালাহউদ্দিন লাভলু একজন প্রতারক। তিনি ফেসবুক ব্যবহার করে উঠতি অভিনয়শিল্পীদের কাছে কখনো কখনো অর্থ দাবি করতেন। কাউকে বলেছেন, টাকা দিলে অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক সমিতিতে সদস্য করে নেবেন। এমন অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিব্রত ছিলেন অভিনেতা ও নির্মাতা সালাহউদ্দিন লাভলু। অবশেষে বাধ্য হয়ে এই মাসের মাঝামাঝিতে তিনি ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে মামলা করেন। সেই মামলায় গত রাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ভুয়া `সালাহউদ্দিন লাভলু'।
নির্মাতা ও অভিনেতা সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘আমার নাম ব্যবহার করে অভিনয়ের সুযোগ দেবে, অভিনয়শিল্পী বানাবে, কাউকে তারকা বানাবে, এসব বলে ফেসবুকে প্রতারণা করা হতো। বহুদিন ধরেই এটা চলছিল। পরে আমি অতিষ্ঠ হয়ে নিজেই ফেসবুক ব্যবহার করে সচেতন করতে থাকি, যেন কেউ প্রতারণার শিকার না হয়। সেই ভুয়া ব্যক্তি আমার আসল আইডি থেকে ছবি ও কাজের খবর নিয়ে ফেসবুকে প্রচার করত। পরে আমি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত লোকদের সঙ্গে আলোচনা করি। আগে একাধিকবার অভিযোগ করে ফল পেয়েছিলাম। এবার তাঁরা বলেন মামলা করতে। ১০–১২ দিন আগে মামলা করেছিলাম। শুনলাম, গতকাল সেই ভুয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একটা আতঙ্ক থেকে বাঁচলাম। সাইবার টিমকে ধন্যবাদ।’
ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনপ্রিয় নাট্য ব্যক্তিত্ব, পরিচালক ও অভিনেতা সালাহউদ্দিন লাভলুর ছদ্ম পরিচয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি পরিচালনা এবং অভিনয়ের সুযোগপ্রত্যাশী তরুণ–তরুণীদের নাটকে অভিনয়ের সুযোগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের একজনকে গতকাল ৩১ আগস্ট মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রতারণার বিষয়টি সালাহউদ্দিন লাভলুর নজরে এলে তিনি সম্প্রতি বনানী থানায় মামলা করেন। ডিএমপির সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন মামলাটি তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে সালাহউদ্দিন লাভলুর নামে খোলা ভুয়া আইডির বিশ্লেষণ ও উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রতারক চক্রটির ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট শনাক্ত করা হয়। পরে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক মো. মোখলেছুর রহমানকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
বেশির ভাগ সময়ই তারকা নির্মাতাদের নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে অনেকেই তরুণ অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতাদের নাটক, বিজ্ঞাপন ও ছবিতে অভিনয় ও নির্মাণকাজে যুক্ত করার লোভ দেখান। মিডিয়ায় তারকা বানিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। এই প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘এটা একধরনের প্রতারণা। যারা এই ধরনের কাজে যুক্ত, তাদের মূল টার্গেট মিডিয়ার প্রতিষ্ঠিত কারও নাম ব্যবহার করে নিজেদের সুবিধা আদায় করা। সে জন্য মানসম্মান নিয়েও অনেক ভয়ে থাকতে হয়।’ তিনি আরও বলেন, দুই দিন আগে তাঁর ফেসবুক পেজ ভেরিফায়েড হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এখন হয়তো এমন প্রতারণা আর কেউ করবে না।