‘আমি যে আন্দোলনে গিয়েছি, আব্বু–আম্মু সেটা জানতই না’

সাফা কবির। ছবি: ফেসবুক
সাফা কবির। ছবি: ফেসবুক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তন আসে। অনেক শিক্ষার্থী পরবর্তী সময়ে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করেন। কেউ কাজ করেন নিজের এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, কেউ কেউ আবার দিনের পর দিন ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁদের কষ্টের সঙ্গে নিজের কষ্ট ভাগাভাগি করলেন অভিনেত্রী সাফা কবির। তিনি বলেন, ‘ফ্যান ছাড়া রোদে শুটিং করি, আমরা বুঝি রোদে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিকের কাজের কষ্ট।’

কারওয়ান বাজারে খাবার দিয়েছেন সাফা কবির

সাফা কবির আজ সন্ধ্যায় এসেছিলেন প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ থেকে সম্প্রচারিত মেরিল ক্যাফে লাইফ অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি বলেন, ‘ট্রাফিকের কাজ; কিন্তু শিক্ষার্থীরা এটা করছে। এ জন্য তাদের বাহবা দেওয়া উচিত। আমরা যারা শিল্পী তারা কিন্তু এভাবেই মাঠঘাটে রাস্তায় দাঁড়িয়ে শুটিং করি। সারা দিন ফ্যান ছাড়া রোদে শুটিং করি, আমরা বুঝি শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকার কষ্ট। স্টুডেন্ট যারা এটা করছে, তাদের আমরা অ্যাপ্রিশিয়েট করি। পরে রেদওয়ান রনি ভাই বললেন আমরা কীভাবে তাদের উৎসাহিত করতে পারি। সেই কারণেই পানি দিয়ে হলেও তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি।’

আন্দোলনে এসে বক্তব্যও দেন সাফা। ছবি: ফেসবুক

শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পাশে ছিলেন সাফা কবির। পরে দেশে পরিবর্তন এলে দেশকে নিয়ে নতুন করে ভাবনার কথা জানালেন মেরিল ক্যাফে লাইভে। এই সময়ে শিক্ষার্থীদের প্রশংসা করে এই তরুণ অভিনেত্রী বলেন, ‘দেশটা পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। বাংলাদেশি হিসেবে আমরা সব সময় অন্যের ভুল ধরার সুযোগ খুঁজি। এভাবে ভুল না ধরে আমি যতটুকু জানি, সেটা শেখানো হলে বা কেউ ভুল করলে শুধরে দিতে পারি। যে কিছু পারছে তাকেও কিন্তু শেখানো যায়। আমাদের ধ্যানধারণায় পরিবর্তন আনতে হবে।’

সাফা কবির। ছবি: সংগৃহীত

গত মে মাসে এই অভিনেত্রীর মা একটা অনুষ্ঠানে সেরা মা হিসেবে পুরস্কার পান। সেটা সাফার কাছে খুব গর্বের। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আমার কাজের জন্য সম্মাননা না পাইলেও কোনো আফসোস নাই। মা সম্মাননা পেয়েছে, এটাই চিরস্মরণীয় ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

আন্দোলনে অংশ নেওয়া নিয়ে মজার ঘটনা ভাগাভাগি করলেন সাফা। তিনি বলেন, ‘আমি যে আন্দোলনে গিয়েছি, আম্মু-আব্বু সেটা জানতই না। একদমই না। কারণ, বাবা জার্মানি থাকেন। বাবা সব সময় বলতেন, দরজা–জানালা বন্ধ করে রাখতে। কিন্তু আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। কারণ, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। ১৯ জুলাই যখন আমি বাইরে যাই তখন মা-বাবা মনে করেছিলেন আমি ঘুমাচ্ছি।’
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের কারণে দীর্ঘদিন শুটিং থেকে দূরে ছিলেন এই অভিনেত্রী। অবশেষে বিরতি দিয়ে আগামীকাল থেকে শুটিং শুরু করছেন সাফা।