৪ আগস্ট একটি শুটিং ইউনিটে তোলপাড়। যথারীতি শুটিং বন্ধ। সেই ঘটনা প্রসঙ্গে অভিনেত্রী রুকাইয়া চমক তির ছুড়েছেন অভিনেতা আরশ খানের দিকে। অভিনেত্রীর অভিযোগ, তাঁরা সহকর্মী থেকে দীর্ঘদিনের বন্ধু। কিন্তু এই বন্ধুত্ব থেকে আরও বেশি কিছু চাইছিলেন আরশ। এ নিয়ে আরশ জানালেন ভিন্ন কথা। তাঁর কথায় উঠে এল অসৎ কোনো চিন্তা কখনোই ছিল না। আরও যা বলেন আরশ—আরশের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগের কথা বলেছেন অভিনয়শিল্পী চমক। সকালে ফোন করার কারণ প্রসঙ্গে এ অভিনেতা বলেন, ‘আমি সকালে উঠে জিমে যাই। এর মধ্যে সাড়ে নয়টার দিকে পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়। তাকে সবকিছু রেডি করতে বলি। পরে সাড়ে ১০টার দিকে সহকারী পরিচালক ফোন দিয়ে বলেন, চমক ফোন ধরছে না। আমি যেন একটা ফোন দিই। সে কারণেই আমি তাকে ফোন দিয়েছি। সে ফোন ধরে না। এখন আমি কি তাকে ফোন দিতে পারি না। আমাদের একসঙ্গে শুটিং। সে এলেই তো আমাদের দৃশ্যে শুটিং করতে পারব। এখানে অন্যায়টা কী?’
ফোন দেওয়া নিয়ে শুটিংয়ের মেকআপ রুমে দুই অভিনয়শিল্পীর কথা হয়। আরশ বলেন, ‘এর মধ্যে আমি হঠাৎ শুনি, চমক চিল্লাচিল্লি করছে। গিয়ে শুনলাম, একজন প্রোডাকশন বয় নাকি তাকে দেখে চমৎকার বলেছে। চমক মনে করেছে, এটা বলে তাকে টিপ্পনী কেটেছে। সেটাও সেই প্রোডাকশনের ছেলেকে শাসন করে মিটমাট করে দিলাম। পরে আমি ক্যামেরাম্যান নাজমুল হাসানের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলাম। এর মধ্যে আবার শুনি, চমক চিল্লাচিল্লি করছে। সে শুটিং করবে না। এ নিয়ে পরিচালকের সঙ্গেও কথা হয়।’
আরশ আরও বলেন, পরিচালক সরাসরি জানিয়ে দেন, ‘সে চলে গেলে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে। দুজনকে ডেকে তিনি বিষয়টি মীমাংসা করতে চান; কিন্তু ঘটনা বেড়ে চলে। চমক অনেক চিল্লাচিল্লি করতে থাকে। পরে সে অভিনয়শিল্পী সংঘে বিষয়টি জানায়। “শ্বশুরবাড়িতে প্রথম দিন” নামের সেই নাটকের পরিচালক আদিব হাসান ডিরেক্টরস গিল্ডে বিষয়টি জানান।’
আরশের দাবি, ‘চমক আমার সামনে অভিনয়শিল্পী সংঘে ফোন দিয়ে বলে তাকে আটকায়ে রাখছে। টাকা না দিলে বের হতে দেবে না। কথা বলা শেষ হলে আমি চমককে বলি, এটা কী বলতেছ। কারণ, তেমন কিছু ঘটেনি। তখন সে আমাকে এ নিয়ে কথা বলতে নিষেধ করে। আমি আবারও বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করি। সবার সঙ্গে কথা হয়। শুটিং করতে যাব। এর মধ্যে দেখি পুলিশ।’
পুলিশ দেখে শুটিংয়ের সবাই অবাক হয়ে যান। পরে জানা যায়, পুলিশ এনেছেন চমক। আরশের ভাষ্য, শুটিংয়ের মধ্যে পুলিশ আসায় সিনিয়র অভিনেতা মাসুম বাশার কিছুটা বিরক্ত হন। তিনি বলেন, পুলিশ আসার মতো তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এতে তাঁকে ছোট করা হয়েছে।
আরশ বলেন, ‘এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে চমক রেগে চিৎকার দিয়ে বলেন, “হাউ ডেয়ার ইউ...।” তখন মাসুম বাশার বলতে থাকেন, “তুমি আমার সঙ্গে কেন জোরে কথা বলছ।” আমি আবার তাদের হাত ধরে চুপ করাই। আঙ্কেল দেখি কাঁপছেন। পরে পুলিশ এলে তাকে ধরে কান্না করতে করতে চমক বলে, “আপনারা আমাকে সেভ করেন। আমি একটা ফাঁদে পড়েছি। আপনারা না এলে আমাকে উনি মারতেন। আরশ আমাকে বাঁচায়ছে।” আমি শুনে থ। আমি সঙ্গে সঙ্গে বলি, এটা মিথ্যা কথা, এমন কিছু হয়নি। পরে পুলিশ মাসুম বাশার আঙ্কেলের ফোন চেক করেন। একজন সিনিয়র অভিনয়শিল্পীকে এটা অনেক বড় অপমান করা। সে বারবার বলতে থাকে নিরাপত্তা বোধ করছে না। কেন সেটা সে নিজেও মনে হয় জানে না।’
ঘটনা এখানেই শেষ নয়। সেদিন সংগঠনগুলোর সদস্যরা শুটিংয়ে উপস্থিত অনেকের সঙ্গে কথা বলে। তাঁরা মীমাংসা করবেন। এরপর দুই দিন ধরে আরশ শুনছেন, তাঁকে ঘিরে আপত্তিকর কথা বলছেন তাঁর সহ–অভিনেত্রী চমক। এটা নিয়ে তাঁর মন খারাপ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভালো সম্পর্ক। তাকে আমার মায়ের শাড়ি দিয়েছি কস্টিউম হিসেবে। এ নাটকে একদিন শুটিং করে রাতে চমক আমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়েছে। আগেও দিয়েছে। সে এখন বলছে উল্টাপাল্টা কথা। আমি নাকি তার কাছে বাড়তি সুবিধা চেয়েছিলাম। আমার নাকি ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। আমি সুবিধা পাওয়ার জন্য এ রকম করেছি। আমি যদি আসলেই তেমন হতাম, তাহলে আগেই স্বার্থ হাসিল করে শুটিং করতাম। সবই ঠিক ছিল, কিন্তু যখন মাসুম বাশার আঙ্কেল প্রসঙ্গে সবার সামনে মিথ্যা বলছিল, তখন সে চেয়েছিল তার সঙ্গে আমি যেন সায় দিই। না দেওয়ার কারণে সে আমাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলছে। তা ছাড়া শুটিংয়ের শেডে সে এর আগেও এমন অনেকের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। তার প্রমাণ আছে।’