মাকে খুশি দেখার শেষ দিন, তখনো মা জানতেন না ক্যানসার চতুর্থ স্টেজে...

মায়ের সঙ্গে ঈশিতা। ছবি: ফেসবুক
মায়ের সঙ্গে ঈশিতা। ছবি: ফেসবুক

১৯৯১ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ‘নতুন কুঁড়ি’ অনুষ্ঠানে তিনি গানে প্রথম স্থান অর্জন করেন। অল্প সময়েই মিডিয়া অঙ্গনে পরিচিত হয়ে ওঠেন রোমানা রশিদ ঈশিতা। একসময় অভিনয়প্রতিভা ও মডেলিং দিয়ে দেশের মানুষের মনে জায়গা করে নেন। দীর্ঘ এই পথ চলায় সব সময় তাঁর পাশে ছিলেন মা জাহানারা রশীদ। মা ছিলেন তাঁর কাছে আস্থার জায়গায়। মায়ের কাছে কখনোই কোনো কিছু লুকাননি। কিন্তু চার বছর আগে মায়ের সামনে লুকোচুরির আশ্রয় নিতে হয় রোমানা রশিদ ঈশিতাকে। ক্ষত হৃদয়ে সেদিন মাকে বলতে পারেননি, ‘মা তোমার ক্যানসার হয়েছে। এখন চতুর্থ স্টেজে আছে।’

অভিনেত্রী ঈশিতা। ছবি: প্রথম আলো

পরবর্তীকালে দীর্ঘ তিন বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করেন ঈশিতার মা। বিদেশে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে গত বছর ১০ অক্টোবর মারা যান। এ সময়ে তেমন একটা কাজে দেখা যায়নি এই অভিনয়শিল্পীকে। মায়ের শোক ঘুরে ফিরে স্ট্যাটাসে উঠে এসেছে। মায়ের মৃত্যুর আজ এক বছর। দীর্ঘদিন পরে ফিরে গেলেন মায়ের স্মৃতিতে; মায়ের সঙ্গে কাটানো সুখের শেষ দিনের কথা। সেই দিনটাই ছিল মাকে হাসিখুশি দেখার শেষ দিন।

মায়ের সঙ্গে ঈশিতা। ছবি: ফেসবুক

সেই দিনটি নিয়ে অভিনেত্রী ঈশিতা তাঁর মায়ের উদ্দেশে ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এটা ছিল তোমাকে খুশি দেখার শেষ দিন। সেদিন আমি তোমাকে তোমার পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেদিন শুধু আমিই জানতাম, তোমার ক্যানসার ধরা পড়ার খবর। তোমার সেই ক্যানসার শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটা তখন চতুর্থ স্টেজে ছিল। সোমবার ছিল আমাদের ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট। পরবর্তী দুই দিন আমি কাউকে কিছুই বলিনি। আমি চেয়েছিলাম তোমার মতো করে একটা সেরা সপ্তাহ কাটাতে দিতে। আমি জানতাম, এই দুই দিনে তুমি সবকিছু জানলে তোমার জীবনটা চিরতরে বদলে যেত।’ এই দিনটি ছিল তাঁর জন্য স্মরণীয়।

অভিনয়জগৎ থেকে দীর্ঘ সময় ধরে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন ঈশিতা। নিজেকে আড়াল রাখলে কী হবে, প্রায়ই অভিনয়ের প্রস্তাব পান। কিন্তু মনের মতো গল্প না পাওয়ায় অভিনয়টা নিয়মিত করা হয়ে উঠছে না তাঁর। এখন ছেলেমেয়ের পেছনে বেশি সময় দিচ্ছেন তিনি। পরিচিতিটা অভিনেত্রী হলেও তিনি গান-নাচেও পারদর্শী। ইদানীং অভিনয় কমিয়ে দিলেও হঠাৎ হঠাৎ গান প্রকাশ করে থাকেন।

ঈশিতা l ​ছবি: প্রথম আলো