দুই বন্ধু আফরান নিশো ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব
দুই বন্ধু আফরান নিশো ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

অপূর্ব–নিশো: দুই বন্ধুর মান–অভিমানের কারণ

ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় দুই অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও আফরান নিশোর বন্ধুত্বের গল্প কমবেশি সবারই জানা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁদের একসঙ্গে হাসি, আনন্দ ও খুনসুটিতে মেতে থাকতে যেমন দেখা যায়, তেমনি গিটার হাতেও দুজনকে গান গাইতে দেখা গেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, কয়েক মাস ধরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কটা আগের সেই অবস্থায় নেই। অনেক দিন ধরে তাঁদের একসঙ্গে কোথাও দেখা যাচ্ছে না। কী সেই কারণ, তা জানাও যাচ্ছিল না। দুই বন্ধুর নীরবতার পেছনের গল্পটা খোলাসা করলেন অপূর্ব। সম্প্রতি প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে মান–অভিমানের কারণ জানাতে গিয়ে ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’ বাক্য ব্যবহার করলেন অপূর্ব!

দুই বন্ধু আফরান নিশো ও জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

সাধারণত স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাপারে একে অন্যকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’ প্রবাদ বাক্যটি প্রয়োগ করে থাকেন। এবার সেই প্রবাদটি অভিনয়শিল্পী বন্ধু নিশোর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলেন অপূর্ব! বিষয়টা অবাক করার মতো হলেও সত্য। সমসাময়িক কাজকর্ম নিয়ে আলাপের এক ফাঁকে তাঁদের বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ আসতেই নিশো সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন এই অভিনেতা।

জিয়াউল ফারুক অপূর্ব

অভিনয়জীবনের একেবারে শুরুতে আফরান নিশো যাতে ভালো অবস্থানে যেতে পারে, সে ব্যাপারে ভীষণ আন্তরিক ছিলেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। এভাবে পথ চলতে চলতে দুজনে অভিনয়জীবনের দুই দশক পার করে ফেলেছেন। ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ দিয়ে অপূর্বর অনেক আগে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটলেও ‘সুড়ঙ্গ’ দিয়ে গত বছরে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে নিশোর। এই ‘সুড়ঙ্গ’ ছবির প্রচারণায় কলকাতায় গিয়ে নিশো বলেছিলেন, অপূর্ব যদি ছবিতে নিয়মিত হয়, তাতে সে খুশি হবে। কিন্তু কয়েক মাস পর বন্ধু নিশোকে শুনতে হলো, ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’। এমনকি তাঁদের বন্ধুত্বের নতুন কোনো গল্প নেই।

অপূর্ব এর একটা ব্যাখাও এভাবে দাঁড় করালেন, ‘এটা ঠিক, ইদানীং আমাদের একটু মান–অভিমান চলছে। অনেক দিন ধরে কথাবার্তা বলি না। বন্ধুত্বের মধ্যে আসলে শেয়ারিংটা হয়। বন্ধুত্বে আস্থা, বিশ্বাসটা সব থেকে বেশি থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। আমার কাছে কেন জানি মনে হচ্ছে, আমাদের সেই শেয়ারিংটা কম।’ অপূর্ব ও নিশোর মধ্যে কথা কম বলার কারণটা হচ্ছে, অপূর্বর জন্মদিনে নিশোর শুভকামনা না জানানোকে ঘিরে!

আফরান নিশো

অপূর্ব বললেন, ‘বিষয়টা মনে হতে পারে খুবই সিলি (অর্থহীন)। স্বাভাবিকভাবে যেখানে হয়তো আমি শুভকামনা জানাই, সেখানে ওর মনে থাকবে না! ওর চোখের সামনে আমার জন্মদিনের খবরটা আসবে না, এটা তো হয় না। ও কোনো এক্সকিউজ দিলেও তো হবে না। বিষয়টা এমনও না, ভুলে গেছি। বিষয়টা অগ্রহণযোগ্য মনে হতে পারে। আসলে আমার একটা প্রবলেম হচ্ছে, আমি অনেক সময় বড় বড় বিষয় এড়িয়ে যাই। তারপর ভাবতে থাকি যে ইট ডাজেন্ট ম্যাটার। অসুবিধা নাই। হয়তো ভুল হয়ে গেছে। এটা এমন আর কী। কিন্তু কিছু কিছু সময় খুব ছোটখাটো জিনিস আমি ধরে ফেলি আরকি। এই বিষয়টাও ও রকম। অনেকে হয়তো এটা বলতে পারে, এটা খুবই শিশুসুলভ আচরণ। সামান্য একটা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো নিয়ে...। তা ছাড়া এটা কিন্তু একবার হয়নি। বেশ অনেকবারই হয়েছে। ও (নিশো) যতই পাগলাটে ভাব ধরুক, আর যাই হোক না কেন, জাতে মাতাল তালে তো ঠিক তুই, নিশো। যা–ই হোক, বাদ দিই।’

নাটকের অভিনেতা অপূর্ব সম্প্রতি ‘চালচিত্র’ নামের নতুন একটা চলচ্চিত্রের শুটিংয়ে অংশ নেন। কলকাতায় এরই মধ্যে সেই ছবিটির শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফিরেছেন। এদিকে গত বছরের শেষ দিকে অপূর্ব অভিনীত ‘পথে হলো দেরী’ নামের একটি নাটক প্রচারিত হয়েছে। এই নাটকের জন্য অপূর্ব খুব প্রশংসিত হয়েছে। জাকারিয়া সৌখিন পরিচালিত নাটকটিতে অপূর্বর বিপরীতে অভিনয় করেছেন তটিনী। এই জুটিকে নিয়ে একই পরিচালক খুব শিগগিরই আরেকটি নাটকের শুটিং শুরু করতে যাচ্ছেন।