প্রায় ১৪ বছরের ক্যারিয়ার। এই সময়ে ক্যারিয়ার নিয়ে যে অবস্থানে থাকার কথা ছিল, সেখানে থাকতে পারেননি, এমনটাই মনে করেন মৌসুমী হামিদ। তবে হাল ছাড়েননি, নিজের মতো করেই এগিয়ে চলেছেন। জানালেন, ভিউয়ের জোয়ারে শুরু থেকে গা ভাসাননি। ঝুলিতে যে কাজ রয়েছে, সেগুলো নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট।
ধারাবাহিক ‘রোশনি’ দিয়ে প্রথম আলোচনায় আসেন মৌসুমী হামিদ। পরে একাধিক ধারাবাহিকে নাম ভূমিকায় দেখা গেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেশির ভাগ নাটকই পছন্দ না হওয়ায় কাজের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন। এর মধ্যেই আজ থেকে এনটিএন বাংলায় শুরু হচ্ছে ‘হাউস হাসবেন্ড’ নামের ধারাবাহিক নাটকের প্রচার। আরেকটি ধারাবাহিকেও নাম লিখিয়েছেন।
মৌসুমী হামিদ বলেন, ‘এখন “শিউলিমালা” নামে যে ধারাবাহিকে কাজ করছি, সেখানেও প্রধান চরিত্রে রয়েছি। কাল (আজ) থেকে শুরু হচ্ছে “হাউস হাসবেন্ড”, এখানেও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছি। এখন এমন একটা সময় পার করছি, যে সময়টা আমার জন্য হয়তো ভালো না। এখন নাটকে বাণিজ্যিক দিকটা বেশি। এর মধ্যে বাজেট কমছে। মান কমছে। মনের মতো চরিত্র পাওয়া যায় না। সেখানে ধারাবাহিকগুলো আমাকে আশাবাদী করছে।’ জানালেন চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে সকাল আহমেদের পরিচালনায় নতুন আরেকটি ধারাবাহিকে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আসছেন।
একসময় আলোচনায় থাকলেও বর্তমানে ধারাবাহিক নাটকগুলো দিন দিন তার জায়গা হারাচ্ছে, মনে করেন এই অভিনেত্রী। এখানে পেশাদারত্বের অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। কারণ হিসেবে মৌসুমী জানালেন, এখন অনেক সময়েই শুধু গ্ল্যামার, গল্প, চরিত্র খোঁজা হয়। যে কারণে একসময়ের জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পী অনেকেই পর্দা থেকে দূরে। তিনি বলেন, ‘আমরা যাঁদের কাছ থেকে কাজ শিখেছি, যাঁদের কাছ থেকে শিল্পকে ধারণ করেছি, সেই শিল্পচর্চার জায়গায় এখন অনেক ব্যবধান। একই মানের অভিনয়শিল্পীর এখন সংকট। দক্ষ অভিনয়শিল্পী এখন আগের মতো কি তৈরি হচ্ছে? আমরা কিন্তু ধারাবাহিক নাটক থেকেই শিখেছি, তৈরি হয়েছি।’
মৌসুমী হামিদ বললেন, ‘এরপরও আমি হতাশ নই, আশাবাদী। আমি মনে করি, একটা দরজা বন্ধ হলে দশটা দরজা খুলে যায়। তারকা হওয়ার চেয়ে অভিনেত্রী হতে চেষ্টা করছি। যে কারণে কখনোই কারও সঙ্গে জুটি বেঁধে শিল্পী হতে চাইনি, অন্য কোনো কিছুর মধ্যেও থাকিনি। পরিচয় দেওয়ার মতো কম হলেও আমার পছন্দের কাজ রয়েছে। যেগুলো আমাকে শিল্পী কথাটা মনে করিয়ে দেয়।’
‘হাউস হাসবেন্ড’ নিয়ে তিনি আশাবাদী। ধারাবাহিকটি পরিচালনা করেছেন ফরিদুল হাসান। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে সিনেমা ‘নয়া মানুষ’ ও ‘রংবাজার’। মৌসুমী হামিদ বলেন, ‘সিনেমা, ওটিটির কাজ নিয়ে এখনো স্বপ্ন দেখি। এখানে “গুটি”সহ যত কাজ করেছি—সবই প্রশংসা এনে দিয়েছে। শৈল্পিক কাজের প্ল্যাটফর্ম এখন বদলে যাচ্ছে। কারণ, দিন শেষে অভিনয়টাই মনে রাখে মানুষ।’