আহমেদ রুবেলের অভিনয়ের ভক্ত নন, এমন কম দর্শকই পাওয়া যাবে। হুমায়ূন আহমেদের ঈদনাটক ‘পোকা’তে গোরা মজিদ বা ‘প্রেত’ নাটকে রহস্যময় সেই চরিত্রই হোক—মঞ্চে থেকে টেলিভিশনে আসার পর দ্রুতই জনপ্রিয়তা পান অভিনেতা। অভিনয় তো বটেই, কণ্ঠের জন্যও আলাদা পরিচিতি ছিল অভিনেতার। তবে কয়েক বছর ধরেই পর্দায় কম দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু কেন? ২০২২ সালে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেটাই জানিয়েছিলেন অভিনেতা।
ঢাকা থিয়েটার করতেন আহমেদ রুবেল। সেলিম আল দীনের ‘হাতহদাই’ নাটক দিয়ে মঞ্চে অভিষেক। এরপর একুশে টেলিভিশনে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘স্বপ্নযাত্রা’ নাটক দিয়ে ছোট পর্দায় অভিনয় শুরু। একে একে ‘পোকা’, ‘প্রেত’, ‘অতিথি’, ‘নীল তোয়ালে’, ‘বিশেষ ঘোষণা’, ‘প্রতিদান’, ‘নবাব গুন্ডা’, ‘এফএনএফ’সহ অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন।
‘আখেরি হামলা’ চলচ্চিত্র দিয়ে সিনেমায় অভিনয় শুরুর পর তাঁকে দেখা গেছে ‘চন্দ্রকথা’, ‘ব্যাচেলর’, ‘গেরিলা’, ‘দ্য লাস্ট ঠাকুর’, ‘পারাপার’, ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’সহ অনেক ছবিতেই।
তারপরও আগের চেয়ে কয়েক বছর ধরে পর্দায় খুব কম পাওয়া গেছে আহমেদ রুবেলকে। এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছিলেন, ‘আমি ক্যারিয়ারে কম সিনেমা-নাটকে অভিনয় করেছি। এর প্রধান কারণ, চরিত্রের ধরন বুঝে বেছে বেছে অভিনয় করেছি। বৈচিত্র্যময় চরিত্র ছাড়া কাজ করিনি। একই ধরনের চরিত্রে বারবার অভিনয় করিনি। ভবিষ্যতেও অবশ্যই দর্শকেরা আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে আমাকে দেখবেন।’
একই সাক্ষাৎকারে আহমেদ রুবেল কথা বলেছিলেন ঢাকাই সিনেমার দুরবস্থা নিয়েও। ঢাকাই সিনেমা নিয়ে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে পচন ধরেছে নানা কারণে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দায়ী চলচ্চিত্রশিল্পের মানুষের ঘৃণ্য রাজনীতি। ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণের নাম নেই, শুধু শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে হাউকাউ করেন। প্রযোজক-পরিচালক সমিতির পদ দখলের হুড়োহুড়ি করেন। পদ নিয়ে কাদা-ছোড়াছুড়িতে এ শিল্প এখন ধ্বংসের মুখে। চলচ্চিত্রে এখন গুণী পরিচালক, গুণী প্রযোজক, গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রী নেই। খ্যাতিমান নির্মাতা, প্রযোজকেরা এখন এ শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।’
আহমেদ রুবেল চাইতেন, কম কাজ করলেও মনে রাখার মতো চরিত্রে অভিনয় করবেন। কিন্তু আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে তাঁর অভিনয়ের ইচ্ছা অপূর্ণই রয়ে গেল। আজ সন্ধ্যায় হঠাৎই জানা যায় অভিনেতার মৃত্যুর খবর।