নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন এই সময়ের আলোচিত টিভি তারকা সাদিয়া আয়মান
নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন এই সময়ের আলোচিত টিভি তারকা সাদিয়া আয়মান

আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না, বিটিভি পরিদর্শনে যাওয়া শিল্পীদের উদ্দেশে সাদিয়া আয়মান

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে সমাবেশ করেছেন দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীরা। ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের কঠোর দমনপ্রক্রিয়া ও গুলিতে ছাত্র-জনতা হত্যার’ প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশ থেকে হত্যার বিচার চেয়েছেন দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীরা। অন্যদিকে একই দিন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) পরিদর্শন করেছেন চলচ্চিত্র, নাটক ও সংগীতাঙ্গনের শিল্পী-পরিচালকেরা। এ সময় বিটিভিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন শিল্পীরা।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা নিয়ে প্রতিবাদ না করে বিটিভি প্রাঙ্গণে যাওয়া শিল্পীদের নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন এ প্রজন্মের অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান।

অবশ্যই তাঁদের জীবন ও ক্যারিয়ারের সঙ্গে বিটিভি–কেন্দ্রিক স্মৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের দুঃখ পাওয়াটা হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতগুলো ছাত্র, ছাত্রী, শিশু, মা, বোন, সাধারণ মানুষ যে মারা গেল, তা নিয়ে একবারও কিচ্ছু বললেন না! একবারও দুঃখ প্রকাশ করলেন না। একবারও এই মানুষগুলোর হত্যার বিচার চেয়ে কিছু বললেন না। কেন?
সাদিয়া আয়মান

গত শুক্রবার রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন এই সময়ের আলোচিত এই টিভি তারকা।

সাদিয়া আয়মান। অভিনেত্রীর ফেসবুক থেকে

সাদিয়া লিখেছেন, ‘একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা–অভিনেত্রীরা বিটিভির প্রাঙ্গণে গিয়ে চোখের পানি ঝরিয়েছেন। অবশ্যই তাঁদের জীবন ও ক্যারিয়ারের সঙ্গে বিটিভি–কেন্দ্রিক স্মৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের দুঃখ পাওয়াটা হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতগুলো ছাত্র, ছাত্রী, শিশু, মা, বোন, সাধারণ মানুষ যে মারা গেল, তা নিয়ে একবারও কিচ্ছু বললেন না! একবারও দুঃখ প্রকাশ করলেন না। একবারও এই মানুষগুলোর হত্যার বিচার চেয়ে কিছু বললেন না। কেন?’

শিল্পীদের একাংশের নীরবতার সম্ভাব্য কারণও নিজেরও স্ট্যাটাসে ব্যাখ্যা করেছেন সাদিয়া।

সাদিয়া আয়মান

তাঁর ভাষ্যে, ‘কারণ, যাঁরা এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা আপনাদের কেউ না। তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের দ্বারা আপনাদের কোনো লাভ হবে না, স্বার্থ হাসিল হবে না এবং ক্ষমতাও পাবেন না। তাই কি? নিজেদের লাভক্ষতি চিন্তা করে, ক্ষমতার স্বার্থে কিংবা কাউকে দেখানোর জন্য আপনারা যে কথাগুলো ক্যামেরার সামনে বলেছেন, এগুলো সারা জীবন আর্কাইভে তো থাকবেই, আমাদের মনেও থেকে যাবে।’

নব্বইয়ের দশকের যেসব শিল্পীর কাজ দেখে বড় হয়েছেন, তাঁদের একাংশের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশাও প্রকাশ করেন সাদিয়া। এই অভিনেত্রী লিখেছেন, তিনি ‘বিস্মিত ও লজ্জিত’।

দীর্ঘ পোস্টের শেষে সাদিয়া লিখেছেন, ‘জেনারেশন টু জেনারেশন জানবে, নব্বইয়ের দশকের যাঁদের অভিনয় টিভি স্ক্রিনে দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি, এখন তাঁদের বাস্তব জীবনের কর্ম দেখে আমরা বিস্মিত ও লজ্জিত! দুঃখের সহিত জানাচ্ছি যে আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না।’