‘সাবটাইটেলে সিনেমা চলছে। তারপরও মনে হচ্ছিল, প্রতিটি দৃশ্যই যেন ভিনদেশি দর্শকেরা কানেক্ট করতে পারছিলেন। হাসির জায়গায় হাসছেন, সিরিয়াস মুহূর্তে চুপচাপ। আমার জন্য এটা দারুণ একটা ব্যাপার ছিল।’ বলছিলেন মেহজাবীন চৌধুরী। অভিনেত্রীর প্রথম সিনেমা ‘সাবা’র প্রিমিয়ার হয়েছে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। সেখান থেকে দর্শকের সঙ্গে বসে সিনেমা দেখার অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন বাংলাদেশি অভিনেত্রী। গত বুধবার রাত আটটার দিকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে অভিনেত্রী জানান প্রিমিয়ারের নানা অভিজ্ঞতা।
টরন্টো উৎসবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর পরপর দুদিন প্রদর্শিত হয় ‘সাবা’। উৎসবের ডিসকভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছে ছবিটি। প্রিমিয়ার উপলক্ষে মেহজাবীন ছাড়াও টরন্টো গিয়েছেন ছবির নির্মাতা মাকসুদ হোসেন, প্রযোজক ও শিল্পীরা। অভিনীত প্রথম সিনেমা টরন্টো উৎসবে মনোনয়ন পাওয়ায় খুশি মেহজাবীন।
তিনি বলছিলেন, নতুন টিমের সঙ্গে কাজ করা তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। অভিনেত্রীর ভাষ্যে, ‘কেন সিনেমা করছি না, কবে করব—এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আমি একটা গল্প, একটি চরিত্রের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সময় নিয়ে এ ছবিতে যুক্ত হই। ছবিটি আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল, কারণ পরিচালকেরও এটি প্রথম ছবি। বলতে গেলে পুরো টিমই নতুন। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে অনেক অপেক্ষার পর সিনেমা পছন্দে ভুল করিনি।’
‘সাবা’র প্রদর্শনী শেষে দর্শকের সাড়া দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘শো শেষে অনেক দর্শককে কাঁদতে দেখেছি। আগে ভাবতাম, আমরা বাঙালিরা বেশি আবেগপ্রবণ। সিনেমা দেখে কাঁদি। ওখানে সেদিনের পরিবেশ দেখে মনে হয়েছে, পৃথিবীর সব মানুষের আবেগ–অনুভূতি একই। গল্প, চরিত্র তাদেরও ভাবায়, কাঁদায়।’ প্রদর্শনী শেষে দর্শকের সরাসরি প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি জানান, মিলনায়তনে উপস্থিত দর্শকেরা তাঁর কাছে বাংলাদেশে সিনেমার গল্প, সিনেমা তৈরির পদ্ধতি নিয়ে জানতে চেয়েছেন।
এ ছাড়া উৎসবে বিভিন্ন দেশের প্রযোজক, পরিচালক ও শিল্পীদের কাছে থেকে দেখা, কথা বলার সুযোগ হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলছিলেন, ‘একদিন খুব কাছে পেয়ে গেলাম ব্রিটিশ অভিনেত্রী নাওমি ওয়াটসকে। ছোটবেলা থেকেই তাঁর অভিনয়ের ভক্ত। সেটি জানালাম তাঁকে। আমার সিনেমার কথা শুনে তিনি খুশি হলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে, ভাবিনি। এই উৎসবে জীবনের একটা সেরা সময় পার করছি।’
উৎসবে এই ক্যাটাগরিতে সেরা সিনেমার পুরস্কার আছে। ‘সাবা’ পুরস্কার পাবে কি—জানতে চাইলে মেহজাবীন বলেন, ‘পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এত এত দুর্দান্ত সব গল্পের সিনেমা উৎসবে এসেছে, তাই খুব একটা আশা করি না। তবে দর্শকের (পিপলস চয়েজ) পছন্দের সেরা ছবির আরেকটি পুরস্কার আছে, দর্শক ভোট দিলে অবশ্যই পেতে পারি। এই বিভাগের ২৫টি সিনেমার মধ্যে সাবা আছে। এটিই আমাদের জন্য বড় পুরস্কার।’
উৎসবে অংশ নেওয়া পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কিছু সিনেমা দেখার আগ্রহ আছে মেহজাবীনের। টিকিট পেলে কান উৎসবে পুরস্কার পাওয়া অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট দেখার আগ্রহ আছে। টরন্টো উৎসবের পর্দা নামবে ১৫ সেপ্টেম্বর। এরপর ঢাকায় ফেরার কথা মেহজাবীনের।