‘সময় সব জানে’ নাটকে অভিনয়ের জন্য ‘মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৩’-এ সেরা সমালোচক বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন তানজিম সাইয়ারা তটিনী। এই প্রথম কোনো পুরস্কার পেলেন তিনি। এই পুরস্কারসহ নানা প্রসঙ্গে গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে শফিক আল মামুনের সঙ্গে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।
বাইরে?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : মানিকগঞ্জে ‘নয়ন তারা’ নামে একটি এক ঘণ্টার নাটকের শুটিংয়ে করছি। পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ। নব্বই দশকের প্রেমের গল্পের নাটক এটি। মনে হচ্ছে, ওই সময়ে প্রেমটা অনেক সুইট ছিল। এ ধরনের গল্পে আগে কখনো কাজ করিনি। মজা পাচ্ছি কাজটি করে।
‘মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার ২০২৩’-এ সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন...
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। এ এক অন্য রকমের অনুভূতি। কয়েক দিন হয়ে গেল, এখনো আমি এই পুরস্কার প্রাপ্তির খুশি, আনন্দ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে, প্রথমেই আমি সমালোচক পুরস্কার পেয়েছি। বিজ্ঞ জুরিবোর্ড আমার কাজকে পছন্দ করে পুরস্কৃত করেছেন।
নাটকটি করার সময় কি মনে হয়েছিল, এটি এত বড় একটি পুরস্কার বয়ে আনবে?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : একদমই মনে হয়নি। আমি কল্পনাই করিনি এই নাটক এত বড় পুরস্কার বয়ে আনবে। এটি আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের নাটক। এটি গত বছর ভালোবাসা দিবসে প্রচারিত হয়েছিল। শুটিংয়ের আগে নিজের চরিত্রটি পড়ে একটু ভয় পেয়েছিলাম। এত ভারী একটি চরিত্র টানতে পারব কি না! পরিচালকের পরামর্শে সাত দিন মহড়া করি। মহড়ায় চরিত্রটি যেভাবে অনুশীলন করেছিলাম, ক্যামেরার সামনে গিয়ে কাজটি আরও ভালো হয়ে যায়।
আপনি কোনো অভিনেত্রীকে আদর্শ মানেন কি?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : অভিনয়ের ক্ষেত্রে কাউকে অনুকরণ, অনুসরণ করি না। অনুসরণ করতে গেলে আরও বাজে হয়ে যায় অভিনয়; বরং নিজের মতো করে কাজ করলে অভিনয়টা ফুটিয়ে তুলতে পারি। তবে অনেকের অভিনয়ই ভালো লাগে। অর্ষা (নাজিয়া হক) আপা, তিশা (নুসরাত ইমরোজ) আপা, মেহজাবীন (চৌধুরী) আপার অভিনয় ভালো লাগে। তবে মেহজাবীন আপাকে একটু আলাদা করে বলতেই হয়। শূন্য থেকে আজকের মেহজাবীন চৌধুরী হওয়া, এটি একটি দৃষ্টান্ত। তিনি আমাদের প্রজন্মের অনেকের আদর্শ হতে পারেন।
ছোট পর্দার অনেকেই এখন ওটিটি বা বড় পর্দায় ঝুঁকছেন। আপনি?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : আমি নাটকটাই শুরু করেছি বেশি দিন হয়নি। নাটকে আমার আরও দর্শক হোক। বড় পর্দা নিয়ে এখন ভাবছিই না। কারণ, বড় পর্দার জন্য যে পরিমাণ অভিজ্ঞতা, প্রস্তুতি দরকার, তা আমার হয়েছে বলে আমি মনে করি না। নাটকে আমাকে দর্শক অনেক ভালোবাসা দিচ্ছেন। ভালো গল্প, শক্তিশালী চরিত্রে কাজের সুযোগ হলেই বড় পর্দায় কাজ করব। সেটি আরও পরে।
অভিনয়ে আসার ইচ্ছা কখন হলো?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : ২০১৯ সালে বিজ্ঞাপনে কাজ শুরু করি। টানা দু-তিন বছর বিজ্ঞাপনে কাজ করেছি। ওই সময় অভিনয়ের প্রতি তেমন দুর্বলতা ছিল না। একটা সময় চরকির অ্যান্থলজি সিনেমা ‘এই মুহূর্তে’-এ অভিনয় করি। কাজটি করার পরই মনে হয়েছে অভিনয়কে সিরিয়াসলি নেওয়া যাই। তখন থেকেই অভিনয়ে নিয়মিত হলাম।
অভিনেত্রী না হলে কী হতে চাইতেন?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : ছোটবেলা থেকে ইচ্ছা ছিল গাইনির ডাক্তার হব। মেডিকেলে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। নীলফামারী মেডিকেলে চান্স পাই। ইচ্ছা ছিল বরিশাল মেডিকেল। হলো না। পরে আর আলাদা করে ক্যারিয়ারে কোনো কিছু হব ভাবিইনি। এরপর তো নর্থ সাউথে বিবিএ মার্কেটিং করলাম।
দর্শক ভিউ কি নাটকের মানদণ্ড নির্ধারণ করতে পারেন? আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই?
তানজিম সাইয়ারা তটিনী : ভিউ দিয়ে নাটকের মান নির্ধারণ হয়, আমার কাছে মনে হয় না। দেখা যায়, একটা নাটকে অনেক ভিউ; কিন্তু সেটি যে খুব ভালো নাটক, তা নয়। আড়ালে পড়ে থাকা অনেক নাটক আছে, যেগুলো ওইভাবে দর্শকের কাছে পৌঁছায়নি। আমাদের অনেক দর্শক হালকা কনটেন্ট দেখত পছন্দ করেন। সহজ জিনিস দেখতেই বেশি পছন্দ করি আমরা।