৪ আগস্ট ঢাকার একটি শুটিংবাড়িতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সামনে আসে অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকদের অসদাচরণ। সহশিল্পীর কাছে অনৈতিক সুবিধা চাওয়াসহ বেশ কিছু অভিযোগ ওঠে অভিনেত্রী চমকের বিরুদ্ধে। সব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিনয়শিল্পী সংঘ অভিনেত্রীর চমকের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করে। তারা জানায়, চমকের কোনো অভিযোগ সত্য নয়। সব অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এমন মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে কয়েক দিন ধরে মানসিকভাবে অস্বস্তিতে ছিলেন আরশ খান। এ ঘটনায় তাঁর পরিবারকেও হেয় হতে হয়েছে বলে জানান আরশ।
আরশ খান বলেন, ‘চমক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথাগুলো ভাইরাল করেছে। সেটি সবার কাছে নানাভাবে ছড়িয়েছে। কিন্তু সেগুলো সবই ছিল মিথ্যা। এটা আমাদের চার সংগঠনেই প্রমাণিত হয়েছে।
আমার কথা হলো, একজন শিল্পী তিনি ছেলে বা মেয়ে হোক, সে যা বলল, সেটিই আমরা সত্য–মিথ্যা যাচাই না করে অনেক সময় বিশ্বাস করি, মিডিয়ায় কাভার করি। দেখা যায়, অনেক মিডিয়াই জাস্টিফাই না করে খবর প্রকাশ করে। এতে একজন শিল্পীর কারণে অন্যজন যে বাজেভাবে অসম্মানিত হন, এটা কি আমরা জানি না? আমার কথা যদি বলি, একজন শিল্পী হিসেবে চমকের মিথ্যা অভিযোগ বাজেভাবে আমাকে মানহানি করেছে। এটা আমার পরিবারের ওপর প্রভাব ফেলেছে।’
আরশের মতে, মিথ্যা অভিযোগের কারণে ১০ দিন তিনি শুটিং করতে পারেননি। এ জন্য তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
আরশ বলেন, ‘এ ঘটনা আমার জন্য প্রফেশনাল ও অর্থনৈতিক ক্রাইসিস তৈরি করেছিল। চমককে সম্মান করে আমি কোথাও কোনো বাজে মন্তব্য করিনি। এখনো বলছি না; কিন্তু অকারণে মিথ্যা মন্তব্য কারও ব্যাপারে সে করতে পারে না। এখন চমকের বলা উচিত, অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা। এখন চমকের প্রেস কনফারেন্স কোথায়, কেন সে বলছে না অনৈতিক সুবিধা চাওয়ার বিষয়টি মিথ্যা ছিল? এটা কত বড় অভিযোগ, যার বিরুদ্ধে করা হয় সে এবং তার পরিবার বুঝতে পারে।’
এ সময় মনঃক্ষুণ্ন হয়ে আরশ আরও বলেন, ‘এই যে হুট করে একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, এ জন্য তো কারও মৃত্যু হতে পারে। এ দায়ভার কারা নেবে? মিথ্যা খরবগুলো তো থেকেই যাবে।
এই মিথ্যা অভিযোগের ঘটনাগুলোর নিউজে অনেকেই শেয়ার দিয়েছে, আমি অপমানিত হয়েছি। কিন্তু এখন যখন সত্য প্রমাণিত হলো, তখন এ ঘটনার সত্যটায় কেউ শেয়ার দিল না। সবাই আমাকে ইনবক্সে অভিনন্দন জানাচ্ছে। কেন? আমি বলব, চমক যা করেছে, এটা কোনো শিল্পীসুলভ আচরণই না। শুটিং সেটে যা হয়েছে, সেটিও শিল্পীসুলভ আচরণ ছিল না। পরবর্তী সময়ে আমার সঙ্গে মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে বারবার যা বলেছে, সেটিও শিল্পীসুলভ আচরণ না। যে শিল্পীসুলভ আচরণই করতে পারে না, তার কাছে আমি সেই আচরণ প্রত্যাশাই করি না।’
৪ আগস্ট আদিব হাসান পরিচালিত ‘শ্বশুরবাড়িতে প্রথম দিন’ নাটকের দ্বিতীয় দিনের শুটিংয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ঘটনা পরবর্তী সময়ে আরও বাড়তে থাকে। অভিনয়শিল্পী ও পরিচালক একে অন্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিয়ে প্রত্যেকে তাঁদের সংগঠনে অভিযোগ করেন। কারণ, সবাই তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো অস্বীকার করছিলেন। পরে এ ঘটনা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) পর্যন্ত গড়ায়। সে ঘটনা নিয়ে অবশেষে গত রোববার ১৩ আগস্ট বিকেল পাঁচটার দিকে ছোট পর্দার পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনয়শিল্পীদের সংগঠন মীমাংসায় বসে। রাত ১০টা পর্যন্ত সেই মিটিং চললেও সেদিন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি সংগঠনগুলো। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে ১৪ আগস্ট সোমবার রাতে সংগঠনগুলো তাদের সিদ্ধান্ত জানায়। অভিযোগ রয়েছে, এই সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি করে নেওয়া হয়েছে। ডিরেক্টরস গিল্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁরা সিদ্ধান্ত মানেনি।