শিকাগোর হোটেলে আগুন–আতঙ্কে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা, কী হয়েছিল জানালেন চঞ্চল

চঞ্চল, স্বস্তিকা, শ্রাবন্তী, পরমব্রত ও সোহিনী
কোলাজ

ঘড়ির কাঁটায় তখন স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার ভোর সাড়ে চারটা। যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোর একটি পাঁচতারা হোটেল। এ হোটেলেই ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকজন শিল্পী। হঠাৎ আগুন লাগার সংকেত বেজে উঠল। এই শব্দ চলতেই থাকল। থামার কোনো লক্ষণ নেই। মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল। সবাই যাঁর যাঁর মতো করে নিরাপদে সরে যাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করেন। বেরিয়ে পড়েন যাঁর যাঁর রুম থেকে। এমনই এক অবস্থায় গতকাল কেটেছে বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের, যা রীতিমতো ভয়াবহ আতঙ্কের বলে জানালেন চঞ্চল চৌধুরী।

নর্থ আমেরিকার বঙ্গ সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে সংগীতশিল্পী অদিতি মহসীন ও অভিনয়শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় যান। স্থানীয় সময় ৪, ৫ ও ৬ জুলাই তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে ভারত থেকে স্বস্তিকা মুখার্জি, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, সোহিনী সরকার, সৌরসেনী মৈত্র, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, অর্জুন চক্রবর্তী, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, উজান গঙ্গোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, অরিন্দম শীল, ব্যান্ড ফসিলস, সোমলতা, ইমন চক্রবর্তী ছিলেন। সবাই সেখানকার হায়াত রিজেন্সি হোটেলে উঠেছিলেন। তিন দিনের এই সম্মেলনে ভালোই সময় কাটছিল তাঁদের। কিন্তু গভীর রাতে হঠাৎ আগুন–আতঙ্কে সবাই ভীত হয়ে পড়েন।

বঙ্গ সম্মেলনে আমন্ত্রিত হন কলকাতার শ্রাবন্তী, স্বস্তিকা ও সোহিনী

বঙ্গ সম্মেলনের এটি ৪৪তম আসর। তিন দিনের সম্মেলন এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে চঞ্চল শিকাগো থেকে প্রথম আলোকে বললেন যা, তা হলো, ‘ভোরবেলা হোটেলের প্রতিটি রুমের অ্যালার্ম বেজে গেল। কেউ হয়তো রুমে সিগারেট খেয়েছিল। ওইটা নিয়ে। কলকাতা ও ঢাকা থেকে একটা বিশাল টিম আসছি। সবাই শুধু পাসপোর্ট নিয়ে বের হতে পারলেই বেঁচে যায়। লাগেজ রেখে নিচে নেমে পড়ি। লিফট বন্ধ হয়ে গেল। পরে সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয়। এই অ্যালার্ম ২০ মিনিটের মতো বাজতে থাকল। তারপর থামল। এর মধ্যে সবাই লবিতে জড়ো হলো। পরে অ্যালার্ম যখন থামল, তখন সবাই আবার সিঁড়ি বেয়ে যার যার রুমে যায়।’

বঙ্গ সম্মেলনে চঞ্চলের হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন পরমব্রত

শিকাগো থেকে চঞ্চল এ–ও বলেন, ‘পরে জানতে পেরেছি, এটা কারিগরি ত্রুটি ছিল, কোনো একটা কারণে বেজে ওঠে। সাধারণত হোটেলে ধূমপান করলে এভাবে বেজে ওঠে। পুরোপুরি টেকনিক্যাল সমস্যা। অত রাতে রিসিপশনেও কাউকে পেলাম না। যখন অ্যালার্ম বন্ধ হয়ে গেল, যার যার মতো করে যার যার রুমে চলে গেলাম আরকি।’

অরিন্দম শীল ও চঞ্চল চৌধুরী

জানা গেছে, কেউ তখন গভীর ঘুমে, কেউ রাতের পার্টি সেরে মাত্র ঘুমোতে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই হইচই কাণ্ড! আগুন লাগার সংকেত শুনে রীতিমতো আতঙ্কিত সবাই! রাতের পোশাকেই হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে প্রাণভয়ে দৌড়াচ্ছেন সবাই।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে অরিন্দম শীল জানান, গরম পোশাক গায়ে না জড়িয়েই পাঁচতলার হোটেল রুম থেকে নিচে নামেন তিনি। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় থেকে সোহিনী—প্রাণ বাঁচানোর দৌড় লাগালেন সবাই।