নাটক, সিনেমা বা সিরিজ নয়, এবার গান গেয়ে আলোচনায় তাসনিয়া ফারিণ। ঈদে ইত্যাদিতে গাওয়া কবির বকুলের লেখা এবং ইমরান মাহমুদুলের সুর ও সংগীত পরিচালনায় ‘রঙে রঙে রঙিন হব’ গানটি এখন ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে ৩৯ নম্বরে রয়েছে। বাংলাদেশের ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে শীর্ষে। ফারিণের সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে লিখেছেন মনজুরুল আলম
তখন দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়েন ফারিণ। পরিবারের সঙ্গে থাকেন যশোরে। ফারিণকে হঠাৎ তাঁর মা গান শেখানোতে মনোযোগী হন। অনেকটা জোর করেই গান শেখানো। মায়ের আগ্রহেই শিক্ষকের কাছে গান শিখতে শিখতে গানের প্রেমে পড়েন। পরবর্তী সময়ে ঢাকায় এসেও সেই গানের চর্চা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই অভিনয়ে পা বাড়ান। অল্প সময়েই খ্যাতি পেয়ে যান। অভিনয়ে ব্যস্ত হওয়ার কারণে গানের প্রতিভা সামনে আনার সুযোগ পাচ্ছিলেন না।
গায়িকা, নাকি নায়িকা
ফারিণের নামের আগে কেউ কেউ যোগ করছেন ‘ভাইরাল গায়িকা’। এ কথা শুনেই হাসলেন ফারিণ। বললেন, ‘আমি কিন্তু নায়িকার আগে গায়িকা। যশোর থেকে ঢাকায় এসেও আমি গানের গানের চর্চা করেছি। দিনের পর দিন গান শিখেছি। জাতীয়, বিভাগীয় পর্যায়ে গান করেছি। গান গেয়ে অনেক পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু অভিনয়ের কারণে গানের প্রতিভা এত দিন কেউ জানতে পারেনি।’
তবে এটা জানতেন, প্রতিভা যদি থেকেই থাকে, সেটা মানুষ জানবেই। ভালো প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষায় ছিলেন। সেই সুযোগ এবার ঈদের ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে পেয়ে গেলেন। কিন্তু দর্শকেরা তাঁর গান এতটা পছন্দ করবে, এটা ভাবনার বাইরে ছিল। এখন নায়িকার পাশাপাশি গায়িকা পরিচয়েও সমানতালে এগিয়ে যেতে আপত্তি নেই তাঁর।
‘তাহসান ভাই, প্লিজ...’
একসঙ্গে নাটকে অভিনয় করলেও প্রথমবার একসঙ্গে গান করার অনুভূতি ছিল একেবারেই আলাদা। দুজনই আলাদা করে রেকর্ডিং করেছেন। কিছুটা ভয়ে ভয়ে রেকর্ডিংয়ে গেলেন ফারিণ। গিয়ে তাহসানের অংশের গান শুনেই চমকে উঠলেন। এত উচ্চ স্বরে গান করেছেন, সেভাবে মিলিয়ে দ্বৈত গান করা অসম্ভব ফারিণের জন্য। কিছু ভেবে না পেয়ে তাহসানকে ফোন দিয়ে অনুরোধ করতে হয়। ফারিণ বলেন, ‘আমি কী করব, বুঝতে পারছিলাম না। পরে তাহসান ভাইকে ফোন করি বলি, তাহসান ভাই, প্লিজ, এত লাউডে আমি গাইতে পারব না। পরে ভাইয়া আবার এসে গানটি গেয়ে যান।’ এবার ফারিণের কাছে প্রশ্ন, নায়ক, নাকি গায়ক তাহসানকে পছন্দ? ‘তাহসান ভাইয়ের গানের আমি ভক্ত বলা যায়। ভাই তো অভিনয়ও করেছেন। কিন্তু আমি তাহসান ভাইয়ের গানকে অবশ্যই এগিয়ে রাখব। গায়ক তাহসানই আমার পছন্দ,’ বলেন ফারিণ।
ফারিণ বনাম ফারিণ
নিজেকেই সব সময় ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা থাকে ফারিণের। এর আগে বঙ্গর অরিজিনাল ফিল্ম ‘অসময়’ কিংবা চরকির ওয়েব ফিল্ম ‘কাছের মানুষ দূরে থুইয়া’সহ ধারাবাহিকভাবে মুক্তি পাওয়া কাজগুলো সেই কথাই বলে। এ জন্য তাঁকে বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এমনকি এ জন্য দিনের পর দিন ধৈর্য ধরতে হয়। ফারিণ বলেন, ‘আমি অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিই। চরিত্র, গল্পে এমন কী নতুনত্ব আছে, যা আমার জন্য নতুন, আমার ক্যারিয়ারে কী প্রভাব ফেলবে—এসব লক্ষ করতে হয়। অনেক সময় দেখা যায়, কাছের অনেকের প্রজেক্ট ভালো না লাগলে না করতে হয়। তখন তাঁরা মন খারাপ করেন। কেউ শত্রু হয়ে যান। এখন তাঁরা হয়তো মন খারাপ করেন কিন্তু আমার ক্যারিয়ারের ভালোটা তো আমাকেই বুঝতে হবে। আমার ক্যারিয়ার না থাকলে কেউ আমাকে ডাকবে না।’
এই দেশে তো এই বিদেশে
ফারিণ যে কখন কোথায়, এটা বলা মুশকিল। তাঁর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের অনুসারীমাত্র তা ভালোই জানেন। একটু অবসর পেলেই ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন ফারিণ। সম্প্রতি তিনি তুরস্ক গিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক জায়গাগুলো তাঁর সবচেয়ে বেশি পছন্দের। পছন্দের জায়গাগুলোতে বারবার যেতে চান। ফারিণের কথায়, ‘আমার ঘুরতে খুবই ভালো লাগে। যখন বিরতি থাকে, তখন সময় করে চলে যাই। এর মধ্য দিয়ে রিক্রিয়েশন হয়, ভ্রমণ মনটাকে অনেক ফ্রেশ করে দেয়। যেটা পরবর্তী কাজে ঢুকতে সহায়তা করে।’