'গ্রিনরুমের আড্ডাটা মিস করছি'

অভিনেত্রী নাবিলা ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
অভিনেত্রী নাবিলা ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

নাটকে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য থাকবে না, তা তো হয় না। দৃশ্যের প্রয়োজনে নায়ক-নায়িকা ধরতেই পারেন পরস্পরের হাত। হাত ধরলেই করোনা হবে না। কারণ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো শুটিং সেটে থাকেই। তা ছাড়া অভিনয়শিল্পীদের হাতব্যাগে জায়গা করে নিয়েছে সুরক্ষা উপকরণটি।

টানা ৯৮ দিন ছুটি শেষে শুটিংয়ে ফিরতে হলো অভিনেত্রী নাবিলা ইসলামকে। বিজ্ঞাপনের শুটিং দিয়ে কাজ শুরু করেছেন তিনি। কিনেছেন এক বাক্স মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রী। করোনাকালীন এই নিরাপত্তাসামগ্রী নিয়ে শুটিংয়ে গেলেও ঝুঁকি অনুভব করছেন এই অভিনেত্রী। করোনার সংক্রমণের আতঙ্ক নিয়ে গতকাল বুধবার ঈদের নাটকের শুটিং শেষ করলেন নাবিলা।

নির্মাতাদের ফোন পেলেই মনে উঁকি দিত দুটি প্রশ্ন। যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, এর মধ্যে শুটিংয়ে যোগ দেওয়া কি নিরাপদ হবে? কাজ ছাড়া বাসায় আর কত দিন? শুটিংয়ের অনুমতি পাওয়া গেলেও বাসা থেকে বের হননি তিনি। নাবিলা বলেন, ‘তিন মাস পর বাসা থেকে বের হয়েছি কেবল শুটিংয়ের জন্য। আগেই মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, গ্লাভস, চশমা কিনেছি। কাজে বের হওয়ার সময় বারবার ভাবতে হচ্ছে, এগুলো ঠিকঠাক সঙ্গে নিয়েছি কি না।’ শুধু কি তাই? নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে শুটিংয়ে খাবার, প্লেট-গ্লাস, পানির বোতলও সঙ্গে নিতে হচ্ছে তাঁকে।

নাবিলা ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

করোনার কারণে বদলে গেছে তারকাদের রূপসজ্জাকক্ষের আড্ডা। শুটিংয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যতটুকু অবকাশ পাওয়া যেত, সেখানে চলত তাঁদের আড্ডা। সামাজিক দূরত্বের বাধ্যবাধকতা শুরু হওয়ার পর তারকাদের সেই আড্ডা এখন আর আগের মতো নেই। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা থেকে নাবিলা বলেন, ‘গ্রিনরুমে সহকর্মীদের সঙ্গে সেই আড্ডা এখন আর নেই। আড্ডাটা মিস করছি। এখন কোনো দৃশ্যের শুট শেষে অন্য একটা রুমে চলে যাচ্ছি। অন্যদের থেকে আলাদা থাকার চেষ্টা করছি। অনেক দিন পর সবার সঙ্গে দেখা হলেও দূর থেকে হাই-হ্যালো করতে হচ্ছে।’

সতর্ক থাকতে হচ্ছে আরও একটি দিকে। সেটি হচ্ছে চিত্রনাট্য। সহশিল্পীর কাছাকাছি যেতে হবে কি না, সেটাও খুব করে জেনে নিচ্ছেন তিনি। নাবিলা বলেন, ‘এখন যে নাটকের শুটিং করছি, এটা একটা স্টোরি বেইসড স্ক্রিপ্ট। কোনো রোমান্টিক দৃশ্য নেই। অবশ্য নাটকে সেভাবে রোমান্টিক দৃশ্য থাকেও না। সামনে কিছু রোমান্টিক গল্পের কাজ আছে। সেখানে নির্মাতা যেভাবে ডিরেকশন দেবেন, সেভাবেই করতে হবে। হাত ধরলেই তো আর করোনা হবে না। হাত তো আমরা স্যানিটাইজ করেই রাখছি।’

নাটকের দৃশ্য ধারণের ফাঁকে জাহিদ হাসানের সঙ্গে নাবিলা। ছবি: সংগৃহীত

অন্য সময় মাসের পর মাস মানসিক চাপ নিয়ে যেভাবে কাজ করেন, এখন আর সেভাবে করবেন না নাবিলা। কারণ, এখন মানসিকভাবে শক্ত থাকা ভীষণ জরুরি বলে মনে করেন তিনি। ‘কেবল একটা ঈদের নাটক করেছি। মানসিকভাবে স্ট্রং থাকার জন্য গ্যাপ দিয়ে দিয়ে শুটিং করব’, ঈদুল আজহার একটি নাটকের শুটিং সেট থেকে কথাগুলো বলেছেন নাবিলা ইসলাম। ওই নাটকে তাঁর সহশিল্পী জাহিদ হাসান, সাজু খাদেম, আরফান প্রমুখ।

গত ২১ মার্চ থেকে করোনার কারণে ছোট পর্দার সব শুটিং স্থগিত করা হয়। পরে ১ জুন স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার শুটিং শুরু করার অনুমতি দেয় নাটকের সংগঠনগুলো। তিন মাস বাড়িতে কাটানোর পর অনেকের মতো কাজে যোগ দিয়েছেন নাবিলা ইসলাম।