এক দশক আগে দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘পৌষ ফাগুনের পালা’ বানিয়েছিলেন অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা আফসানা মিমি। করোনাকালে ১০৪ পর্বের নতুন ধারাবাহিক দিয়ে আবার পরিচালনায় ফিরলেন তিনি। কথাশিল্পী শওকত আলীর উপন্যাস ‘দক্ষিণায়নের দিন’ অবলম্বনে এই নাটকের নাম রাখা হয়েছে ‘সায়ংকাল’।
আফসানা মিমি বলেন, ‘৩০ থেকে ৩৫ বছর আগে “দক্ষিণায়নের দিন” বাংলাদেশ টেলিভিশনে একবার প্রচার হয়েছিল। উপন্যাসটি আবার নতুন প্রজন্মের দর্শককে পরিচয় করিয়ে দেওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য।’
নাটকটি পরিচালনার পাশাপাশি এতে অভিনয়ও করছেন মিমি। এটি তাঁর পরিচালিত ৮ নম্বর ধারাবাহিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ৫ ও ৬ অক্টোবর ‘সায়ংকাল’ নাটকের শুটিং শুরু হয়েছে। মিমি বলেন, ‘দেশে করোনার প্রকোপের শুরুর দিকে “রুম নাম্বার ফোর জিরো ফোর” নামে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি বানিয়েছিলাম। নতুন স্বাভাবিকে এটিই প্রথম কাজ। নজরুল সৈয়দ এবং আফসানা মিমির প্রাথমিক পরিকল্পনা থেকে এর চিত্রনাট্য লিখেছেন মনসুর আহমেদ।
নতুন স্বাভাবিকে শুটিং প্রসঙ্গে মিমি বলেন, ‘কাজের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টা মাথায় রাখছি। বিটিভি থেকে যখন নতুন নাটক তৈরির ব্যাপারে আলাপ হচ্ছিল, তখন মহাপরিচালক স্যার সাহিত্যনির্ভর কাজের ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেন। আমি তখন “দক্ষিণায়নের দিন” নতুন করে দর্শকের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি কি না, বলতেই তিনি বেশ উৎসাহ দেন। এখন একটাই চিন্তা—সুন্দরভাবে কাজটি শেষ করা।’
‘সায়ংকাল’ নাটকের প্রথম লটের শুটিংয়ে অংশ নিচ্ছেন খায়রুল আলম সবুজ, শহীদুজ্জামান সেলিম, আফসানা মিমি, সানজীদা প্রীতি, শাহাদাৎ হোসেন, নাঈম, আনিসুর রহমান মিলন, সুষমা সরকার, স্বাগতা, শর্মীমালা, রাজীব সালেহীন, জয়িতা মহলানবীশ ও মীর রাব্বি।
বিনোদন জগতে পথচলার ৩০ বছরের বেশি সময় অতিক্রম করেছেন আফসানা মিমি। অভিনয়ে তাঁর অভিষেক হয়েছিল মঞ্চের মাধ্যমে। ১৯৮৬ সালে ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর হয়ে প্রথম মঞ্চে ওঠেন তিনি। অভিনয় করেন মনোজ মিত্রের 'রাজদর্শন' নাটকের রানী চরিত্রে। টেলিভিশনের পর্দায় আফসানা মিমির মিষ্টিমুখ প্রথম দেখা যায় বিজ্ঞাপনচিত্রে। প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল মামুনের ‘জিরো পয়েন্ট’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় প্রথম অভিনয় করেন।বড় পর্দায়ও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন আফসানা মিমি। নিজে চলচ্চিত্রে অভিনয় খুব কম করলেও দীর্ঘদিন সিনেমার অনেক তারকা নায়িকার ডাবিং করেছেন।
১৯৯২ সালে আজিজুর রহমানের ‘দিল’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। এরপর অনেকগুলো আলোচিত ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। তার মধ্যে ‘নদীর নাম মধুমতী’, ‘চিত্রা নদীর পাড়ে’, ‘কাজলের দিনরাত্রি’ ও ‘প্রিয়তমেষু’ উল্লেখযোগ্য। দীর্ঘদিন পর চলচ্চিত্রে ফিরেছেন আফসানা মিমি; চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘পাপ-পুণ্য’ চলচ্চিত্রে।নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসানা মিমি ২০০০ সালে ধারাবাহিক নাটক ‘বন্ধন’ দিয়ে পরিচালনায় আসেন। টেরিস্ট্রিয়াল একুশে টিভিতে প্রচারিত ‘বন্ধন’ ধারাবাহিকটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি মিডিয়ায় তৈরি করে দীর্ঘ ধারাবাহিক নির্মাণের ট্রেন্ড। আফসানা মিমি এরপর একে একে নির্মাণ করেন দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘গৃহগল্প’, ‘সাড়ে তিনতলা’, ‘কাছের মানুষ’ ও ‘ডলস হাউস’।