সতর্কতার সঙ্গে শুটিং শুরু

নিরাপত্তা মেনে ঈদের জন্য তৈরি হচ্ছে মেষ রাশি নাটকটি। ছবি: সংগৃহীত
নিরাপত্তা মেনে ঈদের জন্য তৈরি হচ্ছে মেষ রাশি নাটকটি।  ছবি: সংগৃহীত

শুটিংয়ে আর বাধা নেই। তাই প্রায় আড়াই মাস পর ১ জুন শুরু হয়েছে ছোট পর্দাসংশ্লিষ্ট কাজের শুটিং। ধারাবাহিক নাটকের মাধ্যমে কাজ শুরু করেছেন নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা। এদিকে পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ইতিমধ্যে অনেকেই ধারাবাহিকের পাশাপাশি শুরু করেছেন ঈদের নাটকের শুটিং। তাঁরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপত্তার সঙ্গে কাজ করছেন। তবে কিছু তারকা এখনো শুটিংয়ে যোগ দেওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।

১০ জুন থেকে দুই দিন জিম জসীম নামে একটি ঈদের নাটকের শুটিং করেছেন অভিনেতা ও নির্মাতা শামীম জামান। ঈদে ১২ থেকে ১৪টি নাটক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। সেসব নাটকে মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরীর মতো বেশ কিছু তারকাকে নিতে চান এই নির্মাতা। তিনি বলেন, 'সুরক্ষা, ভয় এবং মানসিক কষ্ট নিয়ে নিয়ম মেনে কাজ করছি। করোনার কারণে স্ক্রিপ্টে অনেক ছাড় দিতে হচ্ছে। এটুকু বুঝতে পারছি, অনেক কিছু মেনে ভালো কাজ করাটা কঠিন হবে। তবে নির্মাতা ও অভিনেতা হিসেবে মনে করি, স্ক্রিনে থাকা জরুরি।'
এ মুহূর্তে কোনো প্রযোজক বা টিভি চ্যানেলের কাছে নতুন কোনো নাটক নেই। যা ছিল তার প্রায় সবই ঈদুল ফিতরে প্রচার হয়ে গেছে। নতুন করে শুটিং না করলে আসছে ঈদে অনুষ্ঠানসংকটে পড়বে চ্যানেলগুলো। সে কারণে টেলিভিশনগুলোতেও বাড়ছে ব্যস্ততা। এনটিভি, বাংলাভিশন, চ্যানেল আই, আরটিভি, এটিএন বাংলাসহ বেশ কিছু টিভি চ্যানেল ইতিমধ্যে ঈদের নাটক নিয়ে পরিকল্পনা অনেকটাই পাকাপাকি করে ফেলেছে। এনটিভির অনুষ্ঠান বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আলফ্রেড খোকন বলেন, 'বিগত বছরগুলো থেকে এবারের ঈদ অনুষ্ঠানে কিছুটা ভিন্নতা আনার চেষ্টা করছি। আপাতত আমাদের ২১টি নাটক, ৭টি টেলিছবি ও ২টি ধারাবাহিক প্রচারের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি ধারাবাহিক এবং কিছু একক নাটকের শুটিং শুরু করেছেন নির্মাতারা।'
১৩ জুন গাজীপুরের একটি অবকাশযাপন কেন্দ্রে শুরু হয়েছে মেষ রাশি নামে সাত পর্বের ঈদের ধারাবাহিকের শুটিং। তাতে অভিনয় করছেন জাহিদ হাসান, নাদিয়া আহমেদ, ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, সাজু খাদেম প্রমুখ। নাটকটির নির্মাতা আদিবাসী মিজান জানান, ধারাবাহিকটি দিয়ে দীর্ঘদিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন জাহিদ হাসান। এই অভিনেতা বলেন, 'খুব ছোট টিম নিয়ে শুটিং করছি। টানা পাঁচ দিন শুটিং করলেই কাজটি শেষ হয়ে যাবে। লোকেশনের বাইরে থেকে কারও আসা-যাওয়ার ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যতটা সম্ভব নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা যায়, সেটাই করছি।'

ঊর্মিলা বলেন, 'এমন একটা জায়গায় শুটিং করছি, যেখানে গত দু–তিন মাস কেউ আসেনি। তা ছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে আমি নিরাপদ থাকতে চেষ্টা করি।'
নির্মাতা সকাল আহমেদ, আকাশ রঞ্জন, তপু খানসহ বেশ কিছু নির্মাতা ঈদের কাজ চূড়ান্ত করেছেন। সকাল আহমেদ জানান, ঈদের জন্য চার-পাঁচটি নাটক চূড়ান্ত করেছেন। আগামী মাসে শুটিং শুরু করবেন।

ইতিমধ্যে শুটিং শুরু করেছেন এফ এস নাঈম, আনিসুর রহমান মিলন, মাজনুন মিজান, সাজু খাদেমসহ বেশ কিছু তারকা। তবে মোশাররফ করিম, অপূর্ব, মেহ্‌জাবীন, আফরান নিশোর মতো বেশ কয়েকজন তারকার এখনো শুটিং শুরুর খবর পাওয়া যায়নি। মোশাররফ করিম বলেন, 'শুটিং নিয়ে দোটানায় আছি। একবার ভাবি করব, কিন্তু করোনা যেভাবে বাড়ছে, তাতে করব ভেবে ভয়ও করে। কনফিউজড হয়ে আছি। বেশ কিছু খণ্ড ও ঈদের ধারাবাহিকের কথা চলছে। জুলাইয়ে হয়তো এগোতেও পারি।'

প্রতি ঈদে টিভি ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে নাটকের সংখ্যা ৬০০ থেকে ৭০০ ছাড়িয়ে যায়। গত ঈদুল ফিতরে করোনা সতর্কতায় শুটিং স্থগিত থাকায় নাটকের সংখ্যা কমে দেড় শতে নামে। এর বেশির ভাগ নাটকের দৃশ্য ধারণ করা হয়েছিল করোনার আগে। নাটক না থাকায় রোজগার কমে যাচ্ছে এ অঙ্গনের পেশাজীবীদের। কাজ চলমান থাকলে কিছু লোক অন্তত বেকার হবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট