যে কারণে কানাডায় বসে কাঁদছেন তিন্নি

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি
ছবি : প্রথম আলো

কয়েক দিন ধরে মন ভালো নেই মডেল ও অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নির। ক্ষণে ক্ষণে কাঁদছেন। কাজকর্মেও খুব একটা মন বসছে না তাঁর। বাসার বাইরে কোথাও যাচ্ছেন না। দাদিকে হারিয়ে তিন্নির এই অবস্থা হয়েছে। রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হলে তিন্নির এই অবস্থা জানা যায়। সপ্তাহখানেক আগে ৯৫ বছর বয়সে ব্রেন স্ট্রোক করে বাংলাদেশে মারা যান তিন্নির দাদি বাসন্তী রানী দত্ত। কানাডার মন্ট্রিয়েলে থাকা তিন্নি তাঁর দাদির মৃত্যুর শুরুতে বুঝতে পারেননি, জীবনের কী এক অমূল্য সম্পদ হারিয়েছেন।

দাদি বাসন্তী রানী দত্তের সঙ্গে শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি

তিন্নি বলেন, ‘ঠাকুমার বয়স হলেও নিজে থেকেই সবকিছু করতেন। তিনি যে এভাবে চলে যাবেন ভাবতেও পারিনি। তিনি ছিলেন আমার কলিজার টুকরা। আমি যখন বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করি, পরিবারের সবার যেখানে সমর্থন ছিল না, তখন ঠাকুমাই আমাকে সমর্থন করেছেন। সাহস জুগিয়েছেন। আমাকে নিয়ে গর্ব বোধ করতেন। আমার সঙ্গে শুটিংয়ে যেতেন, ছায়ার মতো আগলে রাখতেন। কিন্তু এভাবে যে হঠাৎ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেন, শেষযাত্রায় দেখাও করতে পারিনি—তা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে।’

দাদি বাসন্তী রানী দত্তের সঙ্গে শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি

তিন্নি জানালেন, তাঁর ঠাকুমা বাসন্তী রানী দত্ত মারা যাওয়ার কয়েক দিন পর থেকেই বেশি খারাপ লাগা কাজ করছে। বিনোদন অঙ্গনে কাজ করার সময় তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন স্পটে যাওয়ার সময়ের কথা মনে পড়ছে। এক মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে কানাডার মন্ট্রিয়েল থাকেন তিন্নি। দূরে থাকলেও ফেসবুক আর হোয়াটসঅ্যাপের কল্যাণে বিনোদন অঙ্গনের এক সময়ের সহকর্মী, আত্মীয়স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হয় তাঁর।

তিন্নি। ছবি: খালেদ সরকার

তিন্নি জানালেন, তাঁর ঠাকুমা ছিলেন নেত্রকোনা জেলা মহিলা পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য। নেত্রকোনা জেলা সমাজসেবা বিভাগের শিক্ষিকাও ছিলেন তিনি। এই মানুষটিই তাঁর জীবনের পথচলার অন্যতম অনুপ্রেরণা ছিলেন। তিন্নি বলেন, ‘কিছুদিন ধরেই ঠাকুমার নানা স্মৃতি মনে আসছে। যতই দিন যাচ্ছে, স্মৃতিগুলো যেন আরও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। মনটাকে কোনোভাবেই মানাতে পারছি না।’

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি

২০১৭ সালে তিন্নি ‘কুয়াশার ভিতরে একটি মৃত্যু’ শিরোনামে নাটকে অভিনয় করেন। এই নাটকে তিন্নি অভিনয় করেন সজলের বিপরীতে। এরপর তাঁকে আর অভিনয়ে নিয়মিত পাওয়া যায়নি। বড় মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে চলে যান কানাডা। চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন তিন্নি। শাকিব খানের বিপরীতে ‘সে আমার মন কেড়েছে’ সিনেমায় জুটি হন।

কুয়াশার ভিতরে একটি মৃত্যু নাটকের দৃশ্যে তিন্নি ও সজল

তিন্নি অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘চোখের বাইরে’, ‘স্বপ্নের নীল পরী’, ‘অপেক্ষা’, ‘সুখের অসুখ’, ‘কবি বলেছেন’, ‘দয়িতা’, ‘সেই তুমি’, ‘কাগজের ঘর’, ‘ভালোবাসার শুরু’, ‘চোখে আমার তৃষ্ণা’, ‘তোমায় দিলাম পৃথিবী’, ‘তুমি আমার অহংকার’, ‘লীলাবতী’, ‘জেগে থেকো’, ‘একই বৃন্তে’ ইত্যাদি।