ভালোবাসা দিবসে শুরু হচ্ছে মিমির নাটক

‘সায়ংকাল’ নাটকের দৃশ্যে আফসানা মিমি ও শহীদুজ্জামান সেলিম। ছবি : সংগৃহীত
‘সায়ংকাল’ নাটকের দৃশ্যে আফসানা মিমি ও শহীদুজ্জামান সেলিম। ছবি : সংগৃহীত

এক দশক পর নতুন নাটক বানালেন আফসানা মিমি। করোনাকালের এই নাটকের প্রচার শুরু হচ্ছে ভালোবাসা দিবসে। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে শুরু হতে যাওয়া এই নাটকটি সপ্তাহে তিন দিন প্রচারিত হবে বলে জানালেন পরিচালক ও অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি।

‘সায়ংকাল’ শিরোনামের নাটকটি সপ্তাহের প্রতি রবি, সোম ও মঙ্গলবার রাত নয়টায় প্রচারিত হবে। সৈয়দ নজরুল ইসলামের কথায় এই ধারাবাহিকের সূচনা সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন অর্ণব। আর নাট্যরূপ দিয়েছেন মনসুর রহমান চঞ্চল ও আফসানা মিমি।

অভিনয় ও নির্মাণ—দুই মাধ্যমে সফল একটি নাম আফসানা মিমি। মাঝে খানিকটা সময় দুই মাধ্যম থেকে কিছুটা দূরে সরে ছিলেন তিনি। নতুন ধারাবাহিকের মাধ্যমে আবারও দুটি ধারায় ফিরলেন। কথাশিল্পী শওকত আলীর ত্রয়ী উপন্যাস ‘দক্ষিণায়নের দিন’ অবলম্বনে এই নাটকের চিত্রনাট্য করা হয়েছে। একই উপন্যাস অবলম্বনে তিন দশক আগেও একবার নাটক প্রচার করেছে বিটিভি।

‘সায়ংকাল’ নাটকের দৃশ্যে আফসানা মিমি ও খায়রুল আলম সবুজ। ছবি : সংগৃহীত

এক দশক আগে দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘পৌষ ফাগুনের পালা’ বানিয়েছিলেন অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতা আফসানা মিমি। তিনি বললেন, ‘৩০ থেকে ৩৫ বছর আগে “দক্ষিণায়নের দিন” বাংলাদেশ টেলিভিশনে একবার প্রচারিত হয়েছিল। উপন্যাসটি আবার নতুন প্রজন্মের দর্শককে পরিচয় করিয়ে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য।’

‘সায়ংকাল’ ধারাবাহিকের শুটিং শুরু হয় নতুন স্বাভাবিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বছরের অক্টোবরে ধারাবাহিক নাটকটির শুটিং শুরু হয়। নতুন স্বাভাবিকে শুটিং প্রসঙ্গে মিমি বলেন, ‘কাজের সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেছিলাম। বিটিভি থেকে যখন নতুন নাটক তৈরির ব্যাপারে আলাপ হচ্ছিল, তখন মহাপরিচালক স্যার সাহিত্যনির্ভর কাজের ব্যাপারে আগ্রহ দেখালেন। আমি তখন “দক্ষিণায়নের দিন” নতুন করে দর্শকের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে পারি কি না, বলতেই তিনি বেশ উৎসাহ দেন। এখন একটাই চিন্তা—সুন্দরভাবে কাজটি শেষ করা।’

‘সায়ংকাল’ প্রযোজনা করেছেন এল রুমা আকতার। দীর্ঘ এই ধারাবাহিকে আফসানা মিমি ছাড়াও অভিনয় করেছেন খায়রুল আলম সবুজ, শহীদুজ্জামান সেলিম, সানজীদা প্রীতি, শাহাদাৎ হোসেন, শামস সুমন, নাঈম, সুষমা সরকার, স্বাগতা, শর্মীমালা, মীর রাব্বি, রাজীব সালেহীন, মুবিদুর সুজাত, জয়িতা মহলানবীশ প্রমুখ।

‘সায়ংকাল’ নাটকের একটি দৃশ্যে। ছবি : সংগৃহীত

বিনোদনজগতে পথচলার ৩০ বছরের বেশি সময় অতিক্রম করেছেন আফসানা মিমি। অভিনয়ে তাঁর অভিষেক হয়েছিল মঞ্চে। ১৯৮৬ সালে ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর হয়ে প্রথম মঞ্চে ওঠেন তিনি। অভিনয় করেন মনোজ মিত্রের ‘রাজদর্শন’ নাটকের রানি চরিত্রে। টেলিভিশনের পর্দায় আফসানা মিমির মিষ্টিমুখ প্রথম দেখা যায় বিজ্ঞাপনচিত্রে। প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল–মামুনের ‘জিরো পয়েন্ট’ নাটকের মাধ্যমে ছোট পর্দায় প্রথম অভিনয় করেন তিনি। বড় পর্দায়ও নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন আফসানা মিমি। নিজে চলচ্চিত্রে অভিনয় খুব কম করলেও দীর্ঘদিন সিনেমার অনেক তারকার ডাবিং করেছেন।

১৯৯২ সালে আজিজুর রহমানের ‘দিল’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় তাঁর। এরপর বেশ কটি আলোচিত ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি। সেগুলোর মধ্যে ‘নদীর নাম মধুমতী’, ‘চিত্রা নদীর পাড়ে’, ‘কাজলের দিনরাত্রি’ ও ‘প্রিয়তমেষু।’ দীর্ঘদিন পর চলচ্চিত্রে ফিরেছেন আফসানা মিমি, চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘পাপ-পুণ্য’ সিনেমায়। নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসানা মিমি ২০০০ সালে ধারাবাহিক নাটক ‘বন্ধন’ দিয়ে পরিচালনায় আসেন। একুশে টিভিতে প্রচারিত ‘বন্ধন’ ধারাবাহিকটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এটি বিনোদনমাধ্যমে তৈরি করে দীর্ঘ ধারাবাহিক নির্মাণের রেওয়াজ। আফসানা মিমি এরপর একে একে নির্মাণ করেন দীর্ঘ ধারাবাহিক ‘গৃহগল্প’, ‘সাড়ে তিনতলা’, ‘কাছের মানুষ’ ও ‘ডলস হাউস’।