ভারতের বাংলা টিভি চ্যানেলগুলোয় প্রচারিত সিরিয়ালগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় জি বাংলার ‘কৃষ্ণকলি’। গত বছর ১৮ জুন সিরিয়ালটির প্রচার শুরু হয়। জানা গেছে, প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই সিরিয়ালটির ব্যাপারে দর্শকের আগ্রহ বাড়তে থাকে। এক শ্যামাঙ্গী মেয়েকে নিয়ে এই সিরিয়ালের গল্প। প্রধান চরিত্র ‘শ্যামা’। এই চরিত্রে যিনি অভিনয় করছেন, তাঁর নাম তিয়াসা রায়। দর্শকদের কাছে এখন তিনি খুবই জনপ্রিয়। আর এই জনপ্রিয়তার কারণেই নাকি তাঁর সংসারে ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে। স্বামী সুবান রায় ছোট পর্দার খুব পরিচিত মুখ। ২০১৭ সালে শারদোৎসবে পঞ্চমীর দিন প্রথম তিয়াসাকে দেখেন সুবান। অষ্টমীতে সুবানের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানানো হয় তিয়াসাকে। তার কিছুদিনের মধ্যেই বাজে তাঁদের বিয়ের সানাই। বিয়ের মাত্র ছয় মাস পর স্বামীর হাত ধরে ছোট পর্দায় আসেন তিয়াসা।
সুবান আর তিয়াসার ঘনিষ্ঠ একজন ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তিয়াসা আর সুবানের ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল। ভালোই চলছিল তাঁদের সংসার। কিন্তু কয়েক মাস হলো ভালো নেই তাঁরা। হয়তো বিয়েটা ভেঙে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বড়দিনের দিন তিয়াসা থানায় যান। এ সময় তাঁর মা ছিলেন সঙ্গে। পুলিশের কাছে তিয়াসা লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে কোনো মামলা দায়ের করেনি। এরপর সুবান আর তাঁর বাবাকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়।’
যেহেতু তাঁদের সংসার ভালোই চলছি, তাহলে কী এমন হলো, যার কারণে মাকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যেতে হলো তিয়াসাকে? ছোট পর্দার সঙ্গে জড়িত এই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিয়াসা বনগাঁর মেয়ে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায়। বিয়ের পর থেকে তিয়াসা শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন। শ্বশুরবাড়ির সবাই তাঁকে ভালোবাসে। কিন্তু কয়েক মাস ধরে শ্বশুরবাড়ির সবাই নাকি তাঁর ওপর অত্যাচার শুরু করেছে। সিরিয়ালে কাজ করে তিনি যে পারিশ্রমিক পান, তার পুরোটাই তাঁকে শাশুড়ির হাতে দিতে হয়। তখন বলা হয়েছে, তাঁকে অবশ্যই সংসারের খরচ দিতে হবে। হাতখরচের জন্য তাঁকে সামান্য কিছু দেওয়া হতো। খবর পেয়ে তিয়াসার মা মেয়েকে বনগাঁয় নিজের কাছে নিয়ে যেতে চান। এরপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
দ্রুত এই খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপর সংবাদমাধ্যম থেকে তিয়াসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, ‘কোন সংসারে অশান্তি হয় না বলুন তো! এটা তো স্বাভাবিক। তবে এমন বড় কিছু ঘটেনি। খুব সামান্য একটা ব্যাপারকে বড় করে দেখানো হচ্ছে। আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তা নিজেরাই মিটিয়ে নিতে পারব। আর একটা কথা বলব, আমরা একসঙ্গে ছিলাম এবং থাকব।’
আর সুবান রায় বলেছেন, ‘ছোটখাটো টুকরো অশান্তি তো হয়ই। কিন্তু তাই বলে সম্পর্কে ভাঙন নিয়ে যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে, তা একেবারেই সঠিক নয়।’ সুবানের তুলনায় তিয়াসা এখন বেশি জনপ্রিয়। এ কারণেই তিয়াসার প্রতি সুবানের ঈর্ষা হচ্ছে। সুবান বলেন, ‘বিয়ের পর আমিই তো তিয়াসাকে অভিনয়জগতে নিয়ে এসেছি। তা-ই নয়, তিয়াসা এখন জনপ্রিয়, স্বামী হিসেবে তাঁকে নিয়ে আমার গর্ব হয়। প্রথমে যেভাবে স্ত্রীর পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও সেভাবেই তাঁকে এগিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতা করব।’
বিয়ের ছয় মাসের মধ্যেই ‘কৃষ্ণকলি’ সিরিয়ালে কাজ করার অফার পান তিয়াসা। তিনি বললেন, ‘এক শ্যামাঙ্গী মেয়ের চরিত্রে আমাকে অভিনয় করতে হবে, তাই শুরুতে আমার স্বামী রাজি ছিলেন না। কারণ তিনি চাননি, আমি এই লুকে ক্যারিয়ার শুরু করি। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সবাই তখন উৎসাহ দেন। ফলে স্বামীও আর আপত্তি করেননি।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সুবান বা তিয়াসা কেউই তাঁদের সম্পর্কে ছেদ টানতে চান না।
সুবান রায়ও অভিনেতা হিসেবে ছোট পর্দার পরিচিত মুখ। ‘আমার দুর্গা’ আর ‘মিলন তিথি’ সিরিয়ালে কাজ করেছেন। রাইমা সেন অভিনীত ‘নটবর নট আউট’ ছবিতেও অভিনয় করেছেন তিনি।