অভিনেতা বাবা শওকত আলীর সঙ্গে শুটিং দেখতে বাংলাদেশ গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটে (নিমকো) গিয়েছিলেন কিশোর শাহেদ আলী সুজন। উদ্দেশ্য, আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনায় সেই নাটকে সুযোগ থাকলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াবেন। শুটিংয়ে প্রধান অভিনয়শিল্পী ছিলেন জাহিদ হাসান ও বিপাশা। প্রথম দিন শুটিং দেখতে গিয়েই শাহেদ আলীর ঝামেলা বেধে যায় অভিনেতা জাহিদ হাসানের সঙ্গে। ২৩ বছর আগে আজকের এই দিনে অভিনয় শুরু করেছিলেন শাহেদ আলী। প্রথম অভিনয় শুরুর সেই সময়ের মজার ঘটনা ভাগাভাগি করলেন এই অভিনেতা।
সেদিন কী ঘটেছিল, জানতে চাইলে এই অভিনেতা বলেন, ‘আমার বাবা এমনিতে মিশুক, চঞ্চল ছিলেন, মাঝেমধ্যে অভিনয় করতেন। তিনি ছিলেন পরিচালকের বন্ধু। কিন্তু বাবা ক্যামেরার সামনে খুবই নার্ভাস থাকতেন। বাবার নার্ভাসনেস দেখে হাসছিলেন জাহিদ হাসান। ছেলে হিসেবে এটা আমার ইগোতে লাগে। আমি তখন জাহিদ ভাইয়ের সঙ্গে ঝাগড়া বাধিয়ে দিয়েছিলাম। একটা বাচ্চা ছেলের আচরণ দেখে জাহিদ হাসান হঠাৎ হকচকিয়ে গেলেন। বাবা তখনই আমার ওপর প্রচণ্ড রাগারাগি করলেন। আমি তরুণ ছিলাম, জাহিদ ভাইয়ের আচরণ মানিয়ে নিতে না পেরে মাথা গরম হয়েছিল। রিয়্যাক্ট করি। আর তখন আমি জাহিদ ভাইকে সেভাবে চিনতাম না। দেখেছিলাম কিন্তু সরাসরি জাহিদ ভাইকে প্রথম দেখি। জাহিদ ভাইয়ের মনে হয় সেই ঘটনা মনে নেই। এখন আমরা প্রায়ই একসঙ্গে অভিনয় করি।’
শাহেদ আলী সেদিন আর অভিনয় করতে পারেননি। তাঁর বাবাও তাঁকে শাসন করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘মাথা গরম করলে অভিনেতা হতে পারবে না।’ শাহেদ আলী বুঝতে পারেন, ভুল করেছেন। কারণ, শুটিংয়ে এমনটা হতেই পারে। ‘তখন আমি সবার আগে ভাবতে থাকি, অভিনয় করতে হলে ক্যামেরার সামনে নার্ভাস থাকা যাবে না। বুদ্ধি বের করি, কীভাবে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তখন মাথায় আসে, অভিনয় পরে করব। আগে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করব। আবু সাঈদ খান ও গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করি। পরে অভিনয়ে আসি। প্রথম দিনের অভিনয়ের পর থেকে এখনো প্রতিদিন শিখছি। তবে কী করলাম, এটা কখনো ভাবি না। আমি কখনো লাভ–ক্ষতির হিসাবও করি না, পেছনে ফিরেও তাকাই না।’
ক্যারিয়ারে প্রথম অভিনয় করেন ১৯৯৮ সালের ৭ ডিসেম্বর। প্রাচ্যনাটের ‘দড়ির খেলা’ নামের নাটকটির পরিচালক ছিলেন আজাদ আবুল কালাম। অভিনেতা হওয়া নিয়ে মজার ঘটনা শেয়ার করে শাহেদ আলী বলেন, ‘আমি তখন দশম শ্রেণিতে পরি। স্যার ক্লাসের শেষ দিনে বললেন, “তোমরা কে কী হতে চাও?” সেদিন কেউ বলেছিল ডাক্তার, কেউ ব্যারিস্টার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। আমি বলেছিলাম, “অভিনেতা হতে চাই।” তখন সবাই চুপ হয়ে গিয়েছিল। আমরা ৫২ জনের মতো সহপাঠী ছিলাম। এখনো বন্ধুদের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলে, “কেউ পছন্দমতো কিছুই হতে পারিনি। তুই একমাত্র অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখে সফল হয়েছিস।”’