দৈত্য সাজতে মেকআপ রুমে যেতেই হলো

‘তিন দৈত্য’ নাটকের দৃশ্যে অভিনেতা ফারুক আহমেদ, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, জামিল হোসেন। ছবি সংগৃহীত।
‘তিন দৈত্য’ নাটকের দৃশ্যে অভিনেতা ফারুক আহমেদ, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, জামিল হোসেন। ছবি সংগৃহীত।

করোনায় এই সময়ে শুটিংয়ে মেকআপ নিয়ে বেশ সচেতন তারকারা। কেননা মেকআপ নিতে গেলে অবশ্যই মেকআপম্যানের কাছাকাছি যেতে হবে। থাকতে হকে বেশ খানিকটা সময়। দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হবে না। তবে এমন পরিস্থিতিতেও ভয়ে যে তারকারা নিজেদের মেকআপ নিজেই করতেন তাঁদের এবার বাধ্য হয়ে রূপসজ্জাকারীর কাছে যেতে হলো। সম্প্রতি একটি নাটকের গল্পের প্রয়োজনে অভিনেতা ফারুক আহমেদ, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু এবং জামিলকে ভয়ে ভয়ে মেকআপের চেয়ারে বসতে হয়েছে।

৭ পর্বের এই ঈদ নাটকের নাম ‘তিন দৈত্য’। নাটকের নাম শুনেই বোঝা যায় চরিত্রদের দৈত্য সাজতে হবে। সে জন্য প্রথম থেকেই ভাবনায় ছিলেন অভিনেতা ফারুক আহমেদ। জুন মাসের ২ তারিখ থেকে শুটিং শুরু করলেও এই অভিনেতার সাজসজ্জা রুমের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না। যতটা পারা যায় নীরবে নিজেই নিজের সাজসজ্জা করেছেন। ভেবেছিলেন করোনাকালীন রূপসজ্জাকারীর থেকে দূরে থাকবেন। পারলেন না, এই দৈত্যের চরিত্রটির কারণে। চরিত্র রূপদানের যেতেই হলো মেকআপ রুমে। ভয়ে ভয়ে বসলেন মেকআপের চেয়ারে। ফারুক আহমেদ বলেন, ‘অনেক চেষ্টা করলাম দৈত্যের মেকআপ নিজেই নেওয়া যায় কি না কিন্তু কোনো উপায় পেলাম না। বাধ্য হয়েই মেকআপম্যানের কাছে আসতে হলো। সচেতনতা থেকেই মেকআপম্যানকে বলেছিলাম গোসল করে আসতে। পরে সে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এলে তাঁকে স্যানিটাইজ করে মেকআপ নিয়েছি। মেকআপের বক্স, ব্রাশ যা যা লাগে সবই আলাদা করে ব্যবহার করেছি।’

দৈত্যদের অদ্ভুত সব কাণ্ড নিয়েই পুরো নাটক। এখানে বয়স্ক দৈত্যের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ফারুক আহমেদ। তার বয়স ১৪ হাজার বছর। অভিনেতা মাহমুদুল ইসলাম মিঠু ও সর্বকনিষ্ঠ দৈত্যের চরিত্রের অভিনেতা জামিল হোসেনের বয়স যথাক্রমে ১২ হাজার বছর ও ৬ হাজার বছর। এই দৈত্যরা বিভিন্ন বাড়ি গিয়ে মানুষের একটি করে ইচ্ছে পূরণ করে। এভাবেই এগিয়ে চলে নাটকটির গল্প। এটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন আদিবাসী মিজান।

‘মেকআপম্যান কোথায় থেকে আসে, বা কার সঙ্গে মেশে, সেটা তো আমরা জানি না। সতর্কতা থেকেই, একটু ভয় তো থাকেই। এখন যে পরিস্থিতি দেশের, যে কারোই করোনা হতে পারে। সে জন্য সচেতন থাকতে আগের শুটিংগুলোতে নিজেই আমার মেকআপ করতাম কিন্তু এই নাটকে এমন একটা চরিত্র যেখানে নিজে কোনোভাবেই নিজের মেকআপ নেওয়া সম্ভব ছিল না। একান্ত বাধ্য হয়েই মেকআপের চেয়ারে বসতে হয়েছে’—কথাগুলো বলেন অভিনেতা মাহমুদুল ইসলাম মিঠু। বড়দা মিঠু নামেই তিনি পরিচিত। এই অভিনেতা আরও বলেন, ‘মেকআপের সময় আমি সার্বক্ষণিক নজর রাখছিলাম মেকআপম্যানের দিকে। তিনি কতটা সচেতন হয়ে মেকআপ করছেন সেটা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। তার আগে তাঁকে হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করতে বলেছি। তারপর স্যানিটাইজ করে মেকআপে বসেছি।’

‘তিন দৈত্য’ নাটকের দৃশ্যে অভিনেতা ফারুক আহমেদ, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, জামিল হোসেন। ছবি সংগৃহীত।

সচেতনতায় অনেক শুটিং ইউনিটে নেই মেকআপম্যান। যে মেকআপ রুমে চলত ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা, সেখানে নেই আগের ব্যস্ততা। কমে গেছে মেকআপ রুমের চিরচেনা চেহারা। সেই ধারাবাহিকতায় যতটা পারা যায় মেকআপম্যানের থেকে থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেছেন অভিনেতা জামিল হোসেন। এই অভিনেতা বলেন, ‘চরিত্রের প্রয়োজনে যে মেকআপ না হলেই নয় সেটুকু মেকআপই নিয়েছি। আমি যেটুকু পারি করেছি। বাকি অংশের জন্য মেকআপম্যানের সাহায্য নিয়েছি। সে ক্ষেত্রে সবার আগে মেকআপম্যানের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছি। তিনি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন কি না খেয়াল রাখা হচ্ছে। তাঁকে বলেই দেওয়া হচ্ছে ভাই আপনি ১০-১৫ মিনিট পরপর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন। পারলে পুরো শরীর স্যানিটাইজ করেন। কী আর করার এখন, ভয় আছে ভেবেই কাজ করতে হবে।’