বিচ্ছেদের পর সম্পর্কের শেষটাও সুন্দর হতে পারে। সে রকমই প্রত্যাশা অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার। সাবেক স্বামীর সঙ্গে পাঁচ বছরের সম্পর্কটাকে ছোট করতে চান না তিনি। গত শুক্রবার বিবাহবিচ্ছেদ হয় ফারিয়া-অপু দম্পতির। বিয়ে নিয়ে মুখরোচক খবর না ছড়াতে গতকাল শনিবার ফেসবুকে এক যৌথ বিবৃতি দেন তাঁরা। এরপর আজ রোববার আবারও নিজেদের ডিভোর্স নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন শবনম ফারিয়া।
২০১৫ সালে ফেসবুকে ফারিয়া-অপুর পরিচয়। সেখান থেকে বন্ধুত্ব ও প্রেম। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁরা আংটিবদল করেন। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ধুমধাম করে বিয়ে হয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকরিজীবী হারুন অর রশীদ অপুর। সেই হিসাবে তাঁদের সম্পর্কের বয়স পাঁচ বছর। হঠাৎ করেই অপুর স্মৃতি ভোলা যাবে না উল্লেখ করে ফারিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে মানুষটার সঙ্গে গত পাঁচ বছর আমার জীবন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে ছিল, সেই মানুষটার অসংখ্য স্মৃতি রয়েছে, যা চাইলেই হঠাৎ করে মুছে ফেলা সম্ভব নয়। বিচ্ছেদের পরে তাঁকে কীভাবে ছোট করি।’
শুরুতে নিজেদের বিচ্ছেদের খবর কাউকে জানাতে চাননি ফারিয়া-অপু। পরে তাঁদের মনে হয়, বিচ্ছেদ নিয়ে পরিষ্কার ধারণা না দিলে পোর্টালগুলো ইচ্ছেমতো মুখরোচক খবর প্রকাশ করবে। এ জন্যই যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিচ্ছেদের খবর জানান। এ নিয়ে ফেসবুকে ফারিয়া লিখেছেন, কাউকে অসম্মান করে কেউ বড় হতে পারে না। বিচ্ছেদ হলেও এখনো অপুর প্রতি সম্মান আছে তাঁর। তবে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসার পেছনের আসল ঘটনা তাঁদের পরিচিতজন ও পরিবারে সদস্যরা জানেন। তবে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘যথেষ্ট কারণ না থাকলে মানুষটার সঙ্গে বিচ্ছেদের সিদ্ধান্তে আসতাম না।’
গতকাল ফারিয়া লিখেছিলেন, বিচ্ছেদের পর তাঁরা বন্ধু হয়ে থাকতে চান। তাঁর এ সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করছেন অনেকে। ফারিয়া মনে করেন, ‘মানুষ ব্লেইম গেম, গালিগালাজ, মানুষকে ছোট করতে পছন্দ করে। বিচ্ছেদের পর কোনো সম্পর্ক কেন সুন্দর হবে না? কেন আমরা বলতে পারব না বিচ্ছেদের পরও আমরা বন্ধু।’ ফারিয়া বলেন, ‘প্লিজ মাথায় নেন, শেষটাও সুন্দর হতে পারে। শেষটাও সম্মান দিয়ে, ভালোবাসার সঙ্গে শেষ হতে পারে। আমার কষ্ট, আমার অভিমান—সব আমার কাছেই থাক।’
আনুষ্ঠানিক বিয়ের ঠিক ১ বছর ৯ মাসের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন হন ফারিয়া ও অপু। কেন এমন হলো? জানতে চাইলে প্রথম আলোকে ফারিয়া বলেন, ‘সমস্যা যতটা না আমাদের দুজনের, তার চেয়ে বেশি আমাদের দুই পরিবারের। আমার বাবা নেই, মাকে নিয়ে আমার পরিবার। তার ওপর আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করি। আর দশজন মেয়ের বিবাহবিচ্ছেদ আর আমার বিবাহবিচ্ছেদ একেবারে ভিন্ন। আমি একটা মেয়ে, আমাদের সমাজ মেয়েদের দোষটাই আগে দেখবে জানি। সে কারণে অনেকভাবে চেষ্টা করেছি, যাতে সংসারটা টেকে। কিন্তু কোনোভাবেই সেটা সম্ভব হয়নি।’
তাঁদের বিচ্ছেদকে অন্যভাবে না দেখার অনুরোধ জানিয়ে ফারিয়া লিখেছেন, ‘দয়া করে “মিডিয়ার বিয়ে টেকে না” ধরনের কথা বলে আমাদের কারণে আমার অন্য সহকর্মীদের ছোট করবেন না। আমরা সম্পূর্ণ “পারিবারিক কারণে”, পারিবারিকভাবে, পারিবারিক সম্মতিতেই বিয়ের মতো ইনস্টিটিউশন থেকে বের হয়ে এসেছি। আমাদের কখনো ভালোবাসা বা বিশ্বাসের অভাব ছিল না, হবেও না। দুজন মানুষের বিবাহবিচ্ছেদ মানে দুটো পরিবারের বিচ্ছেদ, অনেক স্মৃতির বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদটা কারও জন্য সুখকর অনুভূতি না। তবু আমরা পরস্পরের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে চাই।’