সপরিবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠলেও জুয়েল আইচ এখনো হাসপাতালে। তিনি রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী বিপাশা আইচ।
৪ নভেম্বর থেকে জ্বরে আক্রান্ত হন জুয়েল আইচ। শুরুতে গুরুত্ব না দিলেও পরে জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি কোভিড-১৯ পরীক্ষা করান, পাশাপাশি বুকের সিটি স্ক্যান করান। পরীক্ষার ফল হাতে পেয়ে জানতে পারেন, তিনি কোভিড-১৯ পজিটিভ। তাঁর ফুসফুসও সংক্রমিত হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু সন্তোষজনক সেবা না পাওয়ায় হাসপাতাল বদলাতে বাধ্য হয় তাঁর পরিবার। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিপাশা জানান, জুয়েল আইচের জ্বর, কাশি রয়েছে। শ্বাসকষ্ট না থাকলেও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। কোনো কিছুর স্বাদ-গন্ধ পাচ্ছেন না। খাবারে একরকম অনীহা কাজ করছে। করোনা ছাড়াও জুয়েল আইচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন।
আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বিপাশা আইচ বলেন, ‘শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় জুয়েলকে রাতেই হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ওই হাসপাতালের চিকিৎসাসেবায় আমরা মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। ভাবছিলাম সেখান থেকে কোথায় নেওয়া যায়। এর মধ্যে হঠাৎ মাথায় এল সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের কথা। সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেন। ১০ মিনিটের মধ্যে জুয়েলের ভর্তির পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এই সহযোগিতা আমার কাছে অবিশ্বাস্য ছিল, আমি সত্যিই মুগ্ধ। তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।’
করোনাকালে বই পড়ে সময় কাটাচ্ছিলেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। এই শিল্পী মনে করেন, জীবন এক অমূল্য সম্পদ। কিন্তু বাঁচার সময়টা সংক্ষিপ্ত। জীবনের শুরু ও শেষ অংশে সবাই দর্শক। মাঝের অল্প সময় মানুষ কাজ করতে পারে। জানিয়েছিলেন, করোনার এই সময়ে গ্রেট ডিপ্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করছিলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব বেশি দূর তাকাই না। কিছুদূর তাকানোর পর বলি, আর দেখা যাচ্ছে না।
আপনি যদি ২০ তলা ভবনের ওপর উঠে তাকান, তাহলে অনেক দূর দেখতে পাবেন। এটা আমার উপলব্ধি। আমি এ জন্যই গ্রেট ডিপ্রেশন নিয়ে এখন পড়াশোনা করছি। এই যে এত কিছু হচ্ছে, এর সমাপ্তি তো হবে। আমার জীবদ্দশায় হবে কিংবা আমি মারা যাওয়ার পরে হবে।’