ঠিক ৩৭ দিন আগে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন অপি করিমের বাবা কবি ও লেখক সৈয়দ আবদুল করিম। বাবার মৃত্যুর তিন মাস আগে অপির কোল আলোকিত করে পৃথিবীতে আসে তাঁর একমাত্র মেয়ে রশ্মি। এরপরই মনে মনে অপি ভেবে রেখেছিলেন, তাঁর এবারের জন্মদিন মেয়ে, মা–বাবা, স্বামীসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে অন্য রকম কাটবে। কিন্তু সৃষ্টিকর্তার অমোঘ নিয়মে এ বছরের ২৪ মার্চ অপি করিম তাঁর বাবাকে চিরদিনের জন্য হারান। পূরণ হয়নি তাঁর মনের ইচ্ছা।
আজ ১ মে অপি করিমের জন্মদিন। এবারের জন্মদিনে তাঁকে সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। ফোন করছেন। এসএমএস দিচ্ছেন। ফেসবুকে কত কী লিখছেন। অপি বললেন, ‘তারপরও কেমন জানি লাগছে। আমার জীবনে এখন রশ্মি আছে, আমি এখন রশ্মির মা। একটা নতুন পরিচয়। রশ্মি কোলে আছে। তারপরও কী যে এক শূন্যতা, এটা কোনোভাবেই আসলে বোঝানো যাবে না (কাঁদছিলেন)।’ কিছুক্ষণ পর নিজেকে সামলে নিয়ে অপি বললেন, ‘আমি কোনো দিনও ভাবতে পারিনি, বাবাকে দেখতে পাব না। অথবা আমার বাবা আমাকে কোনো দিন উইশ করবে না, এটা হতেই পারে না!’
অপি জানালেন, ‘আমি জানি যে মা–বাবা সব সময় থাকবে না। জীবনটা এ রকম হবে বুঝিনি। আমি তো আরও ভাবছিলাম, এবারের জন্মদিনটা অন্য রকম হবে। রশ্মি থাকবে কোলে, মা–বাবা পাশে থাকবেন। আমরা সবাই মিলে ছবি তুলব। কিন্তু তা আর হলো কই। আমি তো ভাবতেই পারছি না, পৃথিবীতে আমার বাবা নেই।’
রাত ১২টা বাজার আগে থেকেই ভক্ত, অগ্রজ-অনুজ শিল্পী, পরিচালক-প্রযোজক থেকে শুরু করে সবারই ভালোবাসার উষ্ণতা আলিঙ্গন করছেন অপি করিম। তিনি বললেন, ‘মানুষের ভালোবাসার মধ্যে একধরনের উষ্ণতা থাকে। এটা কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়াটা সম্ভব নয়। এই উষ্ণতা ছুঁয়ে যাবেই। অগ্রজ-অনুজ-ভক্তরা সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। গতকাল শুক্রবার রাত থেকেই টের পাচ্ছি। আমি সবার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি তো মনে করছি, এ ভালোবাসাই থাকুক, যত দিন বেঁচে থাকি। কাজ করি বা না করি, এ ভালোবাসা থাকুক আমার জন্য।’
কয়েক মাসে অপি করিমের জীবনটাই অন্য রকম হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমার মা–বাবা পুরো জীবনভর ছিলেন। কদিন আগে বাবা চলে গেলেন। এরপরই মায়ের কোভিড-১৯ পজিটিভ হলো। এমন পৃথিবী তৈরি হয়েছে, করোনার কারণে মায়ের কাছে যেতে পারিনি। এ অবস্থা হবে, কখনো ভাবতে পারিনি। সত্যিই এ এক অন্য রকম পৃথিবী।’