হাসপাতালে মায়ের সেবা করতে গিয়ে অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন শ্রাবন্তী। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার সময় কাছাকাছি চলে আসে। ফেরার টিকিট আসার সময়ই ঠিক করা ছিল। তাই সন্দেহ থেকে কোভিড-১৯ টেস্ট করান। টেনশনে ছিলেন, কী রিপোর্ট আসে। যদি পজিটিভ আসে, তাহলে টিকিট পেছাতে হবে। যাওয়া হবে বিলম্ব। অবশেষে আজ দুপুরে জানতে পারেন, তিনি ও পরিবারের সবার কোভিড-১৯ রেজাল্ট নেগেটিভ। আগামী মঙ্গলবার সকালে এমিরেটস এয়ারলাইনসের বিমানে করে সন্তানদের নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন তিনি। আজ রোববার দুপুরে জানালেন তিনি।
অসুস্থ মায়ের সেবা করতে গত অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন শ্রাবন্তী। ডায়াবেটিস ও লিভারের সমস্যায় ভুগতে থাকা মাকে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি। এদিকে মায়ের সেবা করতে টানা কয়েক দিন হাসপাতালে থাকতে হয় একসময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনয়শিল্পী শ্রাবন্তীকে। তাই দেশ ছাড়ার আগে
সন্দেহ দূর করতে এবং অন্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে কোভিড-১৯ টেস্ট করান শ্রাবন্তী।
প্রথম আলোকে শ্রাবন্তী বললেন, ‘কোন এক পৃথিবী আমাদের সামনে চলে এল, স্বাভাবিক সবকিছুই কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেল। কিছু করার আগে কত–কী যে ভাবতে হয়! কতটা সাবধান যে থাকতে হয়। এমন পৃথিবী পাব, কোনো দিনই ভাবিনি। মানুষের সঙ্গে দেখা করাটাও এখন যেন একটা আতঙ্কের।’
এবারের আসাটা তো একেবারেই অন্য রকম। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকের সঙ্গে দেখাও করতে পারিনি। ইনশা আল্লাহ, নেক্সট ইয়ারে সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার দেশে আসার ইচ্ছা আছে। যদি তত দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকি, সবার সঙ্গে দেখা হবে।ইপশিতা শবনম শ্রাবন্তী
শ্রাবন্তী আরও বলেন, ‘মায়ের অসুস্থতার কারণে আসা। বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনের বন্ধু ও সহকর্মীরা সবাই খোঁজখবর নিয়েছে। অনেকে দেখা করতেও চেয়েছে। বেশ কয়েক দিন বগুড়ায় ছিলাম, কয়েক দিন হলো ঢাকায় এসেছি। এবারের আসাটা তো একেবারেই অন্য রকম। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকের সঙ্গে দেখাও করতে পারিনি। ইনশা আল্লাহ, নেক্সট ইয়ারে সবকিছু স্বাভাবিক হলে আবার দেশে আসার ইচ্ছা আছে। যদি তত দিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকি, সবার সঙ্গে দেখা হবে।’
বেশ কয়েক মাস ধরে শ্রাবন্তীর মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ যাচ্ছিল। মায়ের শারীরিক অবস্থার চরম অবনতির খবর শুনে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে শ্রাবন্তী তাঁর বড় বোন আর সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসেন।
প্রায় পাঁচ বছর হলো সন্তানদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাস করছেন একসময়ের তারকা মডেল ও অভিনয়শিল্পী শ্রাবন্তী। যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কিছুদিন পরে শ্রাবন্তী কাজ নিয়েছিলেন ওয়ালমার্টে। এক বছর পর সেটা ছেড়ে দেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, আমেরিকায় কোনো কাজই ছোট না, তারপরও ওয়ালমার্টে কাজ করতে তাঁর ভালো লাগত না। সে কারণেই সেটা ছেড়ে মেডিকেল সহকারীর স্বল্পমেয়াদি একটি কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন। এই কাজের লাইসেন্স থাকলে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া তাঁর জন্য সহজ হবে, এই ছিল তাঁর আশা। ইতিমধ্যে কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মডেল ও অভিনেত্রী হিসেবে একসময় ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন শ্রাবন্তী। অভিনয় দিয়ে জয় করেছিলেন দর্শকহৃদয়। আলোচনায় এসেছিলেন ‘জোছনার ফুল’ ধারাবাহিক নাটক দিয়ে। এ ছাড়া ‘রং নাম্বার’ ও ‘ব্যাচেলর’ সিনেমায় অভিনয় করে বেশ প্রশংসিত হয়েছিলেন। গত পাঁচ বছরে দুবার বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। তাঁর বড় মেয়ে রাবিয়া আলম থার্ড গ্রেডে, ছোট মেয়ে আরিশা আলম কিন্ডারগার্টেনে পড়ে। দুই মেয়ের বাবা বাংলাদেশে থাকেন।