ঘরে বসে অবসর যাপন করছেন অভিনেত্রী জিনাত সানু স্বাগতা। করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকতে নিজে সতর্ক আছেন সব সময়। পাশাপাশি বন্ধু-অনুসারীদের নিয়েও ভাবছেন এই তারকা। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। সম্প্রতি এক ভিডিওবার্তায় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু রেসিপি ভাগাভাগি করেন এই অভিনয়শিল্পী।
ভিডিওতে স্বাগতা বলেন, ‘আমি যে কথাগুলো বলব, সেগুলো টিভিতে দেখাচ্ছে না। কিন্তু কথাগুলো আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ছোটবেলা থেকে আমরা ঘরে কিছু পথ্য গ্রহণ করে আসছি। ঘরের তৈরি কিছু রেসিপি আছে, যেগুলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে।’
স্বাগতার প্রথম রেসিপি হচ্ছে তিন কাপ পানি। সঙ্গে তিন-চার চামচ হলুদের গুঁড়া। এর মধ্যে দিতে হবে দেড় ইঞ্চি আদা। তারপর মিশ্রণটিকে জ্বাল দিতে হবে। মোটামুটি সেদ্ধ হয়ে এলে জ্বাল বন্ধ করতে হবে। মিশ্রণটি ঠান্ডা করে দিনে তিনবার খেতে হবে। যাদের বাতের সমস্যা আছে, এই মিশ্রণটি খেলে তাঁদের ব্যথাও কমে যেতে পারে। এটি মূলত রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজে দেবে।
স্বাগতার দ্বিতীয় রেসিপি এক টেবিল চামচ লেবুর রসের সঙ্গে কুসুম গরম পানি। চিনি বা লবণ না মিশিয়েই এটি খেতে হবে। সতর্ক করে তিনি জানিয়েছেন, পানি কুসুম গরম না হলে পেটে কিন্তু গ্যাস সৃষ্টি হবে। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এটি পান করতে হবে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি এই মিশ্রণটি মেদ কমাতে ও হজমক্ষমতা বাড়তে সাহায্য করবে।
তৃতীয় রেসিপির মূল উপাদান রসুন। রসুনের খোসা ছাড়িয়ে মধুর বয়ামে ৭ দিন ডুবিয়ে রাখতে হবে। বয়ামের মুখ আটকে সেটি রাখতে হবে ফ্রিজে। সাত দিন পর এক চামচ মধু এবং এক কোয়া রসুন প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে। যাদের হার্টের সমস্যা আছে, এ জিনিস তাঁদের উপকারে আসবে।
চতুর্থ রেসিপিতে এই অভিনেত্রী জানিয়েছেন আমলকীর উপকারিতার কথা। দুটো আমলকী রাতে খাবার পানির ভেতর ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে সেই পানি পান করলে সেটা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। একই সঙ্গে এটি ঠান্ডার সমস্যায় উপকার করবে। এ ছাড়া মধুর সঙ্গে মিশিয়ে কালোজিরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। জানিয়েছেন চাইলে কালোজিরা ভর্তা করেও খেতে পারেন।
করোনাভাইরাস কীভাবে মানুষকে আক্রমণ করে, তা নিয়ে নিজের শোনা কিছু অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন স্বাগতা। তিনি বলেন, ‘আমি কজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের কথা শুনেছি। করোনাভাইরাস প্রথমে তাঁদের গলাকে আক্রান্ত করে। গলায় যুদ্ধ করতে করতে কিছু ভাইরাস ভেতরে প্রবেশ করে, কিছু প্রবেশ করতে পারে না। গলায় যে ভাইরাস জমে সেটা গরগর করলে চলে যায়।’ সে জন্য প্রতিদিন লবণ পানি মিশিয়ে গরগর করতে পারেন। তাহলে এই ভাইরাস আমাদের শরীরের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। তারপরও সবাই সচেতন থাকুন।’
স্বাগতা পুষ্টিবিদ নন, নন চিকিৎসকও। কীভাবে শিখলেন তিনি এসব টোটকা? তিনি জানান, বেশির ভাগ রেসিপি তিনি শিখেছেন পরিবারের বড়দের কাছ থেকে। তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে হলে আমরা হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করব, হাত ধোব, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে একজন আরেকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করব। এগুলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমাদের সরকারের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত জানছি। এই মুহূর্তে আমাদের সচেতনতাই পারে এই মহামারি থেকে নিজেদের এবং দেশকে বাঁচাতে।’