করোনাযুদ্ধে জয়ী হতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে টনির বার্তা

টনি ডায়েস। ছবি: সংগৃহীত
টনি ডায়েস। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত পুরো পৃথিবী। আক্রান্ত দেশের মানুষকে সচেতন করতে নানাজন নানাভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে থাকা অভিনয়শিল্পী টনি ডায়েস ভিডিওবার্তায় করোনাযুদ্ধে জয়ী হতে করণীয় কী, সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। তারকা হিসেবে সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে এমনটা করেছেন তিনি।

নিউইয়র্কের হিলসাইড এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকেন টনি ডায়েস। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে এ অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘আমার স্ত্রী প্রিয়া কাজকর্ম বন্ধ করে ঘরে। মেয়েরও বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি। আমার টুকটাক কাজে বাইরে যেতে হচ্ছে। তবে সাবধানতা অবলম্বন করছি। কি যে হতে যাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। তবে সাবধানতা অবলম্বন করে থাকতে হবে এটুকু জেনে গেছি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নির্দেশনা মেনে চলছি।’

ভিডিওবার্তায় টনি ডায়েস বলেন, ‘সারা পৃথিবী এই মুহূর্তে একটা বড় দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই একটা যুদ্ধে লিপ্ত। জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাই আমরা একটা অজানা শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছি, যে শত্রুকে আমরা খালি চোখে দেখতে পাই না। যাকে দেখার জন্য অণুবীক্ষণ যন্ত্র নিচে বসাতে হয়। হ্যাঁ, আমি কোভিড–১৯ বা করোনাভাইরাসের কথা বলছি। যে ভাইরাস আমরা আমাদের নিজের অজান্তে আমাদের শরীরে নিয়ে আসছি, আমাদের কিছু খামখেয়ালিপনার জন্য।’

টনি ডায়েস আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশিরা খুব আড্ডাবাজ, পাড়ায়-মহল্লায় দোকানের সামনে আড্ডা দিতে পছন্দ করি। চায়ের দোকানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দিতে পছন্দ করি। যেকোনো অজুহাতে আমরা বাড়িতে পার্টির আয়োজন করি। আমরা মিছিলে নেমে পড়ি যেকোনো আন্দোলনে, নির্বাচনে সমাবেশ করি সবাই মিলে, হাজার হাজার মানুষ রাস্তাঘাটে সব জায়গায় সহজভাবে, দলবদ্ধভাবে ছুটিতে যেতে পছন্দ করি, সমুদ্রসৈকতে কিংবা পার্কে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি। কিন্তু আমরা যদি এই যুদ্ধে জয়ী হতে চাই, আমাদেরকে ঠিক এর উল্টোটা করতে হবে।’

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে টনি ডায়েস। ছবি: সংগৃহীত

টনি ডায়েস বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে থাকতে হবে, আমাদের নিজেদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। বিশেষজ্ঞের কথা শুনতে হবে, ডাক্তারের কথা শুনতে হবে। আমরা কি সবাই তা করছি? করছি না। আমরা ঠিকই ঘুরে বেড়াচ্ছি দলবদ্ধভাবে, সমুদ্রসৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছি, বিশাল সমাবেশ করছি আমরা, আনন্দ করছি, পার্টি করছি—আমরা সবাই কিন্তু আমাদের নিজেদের অজান্তেই ভাইরাস আমাদের ভেতরে নিয়ে নিচ্ছে। বাড়িতে গিয়ে বাবা-মা-ভাই-বোন–সন্তান সবাইকে আমরা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি। এই মৃত্যু কিন্তু খুব কষ্টের। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে, ফ্রান্স, ইতালি, আমেরিকায়—সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে, হাসপাতালে আত্মীয়স্বজন কেউ তাদের কাছে যেতে পারছে না, জড়িয়ে ধরে কাঁদতে পারছে না। আরও কষ্টের বিষয়, তাদের কাউকে মৃতদেহ দেওয়া হচ্ছে না, পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে—যাতে ভাইরাস না ছড়ায়। আমাদের সচেতন হতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ শুনতে হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রেস্টুরেন্ট–অফিস-আদালত বন্ধ করার চেষ্টা করছে। উন্নত দেশগুলোতে সরকারি কথা শুনছে সবাই। প্রশাসনের কথা শুনছে সবাই। আসুন, আমরা শিশু বিশেষজ্ঞ, ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট যারা কষ্ট করে যাচ্ছে, নিঃস্বার্থভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, তাদের জন্য দোয়া করি।’