চরিত্রে ঢুকে পড়লে চঞ্চল চৌধুরীকে আর চেনা যায় না। এমনকি স্ত্রী-সন্তানের কাছেও কেমন অচেনা হয়ে ওঠেন তিনি। অবশ্য বাংলার দর্শকের প্রিয় এ অভিনেতাকে যেকোনো চরিত্রে পছন্দ করেন ভক্তরা। তাঁর সব কটি সিনেমার কপালে তাই ‘হিট’ তকমা জুটেছে। নতুন এই মহামারিতে ভক্তদের সচেতন করতে চঞ্চল আবারও ফিরলেন পুরোনো এক চরিত্রে। সেখানেও তিনি ‘আয়নাবাজি’র আয়না, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। সে কি বাঁচবে?
‘ঘরে বসে আয়নাবাজি’র প্রথম পর্বটি ইতিমধ্যে সবাই দেখে ফেলেছেন। নিজের ঘরের দরজা দিয়ে চঞ্চলকে দেখা গেছে ‘আয়না’ হিসেবে প্রবেশ করতে। খুক খুক করে কাশছিলেন তিনি। হাতে ছিল প্যারাসিটামল ট্যাবলেটের পাতা। এভাবেই শুরু হয়েছে করোনাকালের নতুন সিরিজ ‘ঘরে বসে আয়নাবাজি’।
গত মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে প্রচারিত হয়েছে প্রথম পর্ব। তিন পর্বের এ ধারাবাহিকে আরও দেখা যাবে বিদেশে ঘরবন্দী হৃদি বা নাবিলা ও দেশে সাংবাদিক সাবের বা পার্থকে। ‘আয়নাবাজি’ সিনেমার এ তিন চরিত্র মিলেই তিন পর্বের এ সিরিজে দিয়েছেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সচেতনতার বার্তা। এ সিরিজ দেখে দর্শকেরা জানতে পারবেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে করণীয় এবং সংক্রমিত হলে করণীয় সম্পর্কে। এসব তো নানাভাবে প্রচার করা হচ্ছে, তবে চিত্রনাট্য কেন?
প্রিয় চরিত্রগুলোর মুখ থেকে সচেতনতার বার্তা পেলে দর্শক সেটা মনে রাখবেন। এ ছাড়া তাঁরা কীভাবে বিপদমুক্ত হচ্ছেন, সেটা দর্শকদের জন্য একটি সহজ শিক্ষা হিসেবে ধরা দেবে। তাই এই করোনাকালে আয়নাবাজির দলকে নিয়ে সিরিজ নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রযোজক জিয়াউদ্দিন আদিল বলেন, ‘সংস্কৃতির একটা দায়বদ্ধতা থাকে। করোনার এই সংকটে ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের দলটি সচেতনতা তৈরির দায়বোধ থেকে এ উদ্যোগ নিয়েছে। এতে যুক্ত হওয়ার জন্য ব্র্যাক এবং অস্ট্রেলিয়ান এইডকে ধন্যবাদ জানাই।’
অভিনয়শিল্পীদের ঘরের মানুষেরাই এ সিরিজের চিত্রগ্রাহক। যেমন চঞ্চল চৌধুরীর অংশগুলোর চিত্রগ্রাহক ছিল তাঁর ১২ বছরের ছেলে শুদ্ধ। অভিনেতা বাবা ও পরিচালক চাচার সাহায্যে বাবার অভিনয়ের দৃশ্যগুলো ধারণ করেছে সে। এ কাজে অবশ্য মায়ের সহযোগিতা পেয়েছে সে। দৃশ্যগুলো চমৎকার করে সম্পাদনা করেছেন ‘আয়নাবাজি’র সম্পাদক। সিরিজের আবহসংগীত, শব্দ ও স্বরের এক চমৎকার সমন্বয় লক্ষ করা গেছে। যুক্ত হয়েছে নতুন একটি গান। এটি যে ঘরে বসে করা, বলে না দিলে কারও পক্ষে সেটা ধরে ফেলা কঠিন।
গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় প্রচারিত হয়েছে ধারাবাহিকটির দ্বিতীয় পর্ব। প্রতিটি পর্বের দৈর্ঘ্য ৭ থেকে ৮ মিনিট। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আয়না কীভাবে রোগমুক্ত হয়, প্রতিবেশীরা তাঁর সাহায্যে কীভাবে এগিয়ে আসেন, সেসব দেখা যাবে সিরিজে। আজ রাত সাড়ে ১০টায় দেখা যাবে সিরিজটির প্রথম মৌসুমের শেষ পর্ব। সিরিজের কাহিনি লিখেছেন সৈয়দ গাউসুল আলম ও চিত্রনাট্য তৈরি করেছেন নাসিফ ফারুক।
ব্র্যাক-আয়নাবাজি কোভিড-১৯ সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন সিরিজের নির্মাতা অমিতাভ রেজা বলেন, আয়নাবাজি মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে। সেই চরিত্রগুলো যেন এবার মানুষকে সচেতন করতে পারে, সেটাই এই নির্মাণের লক্ষ্য।