এখন ভালো কাজের প্রতিযোগিতা হচ্ছে: আবুল হায়াত

টেলিভিশনের বাইরে ওটিটি ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের কাজগুলো নিয়ে আশাবাদী আবুল হায়াত
সংগৃহীত

নাট্য অঙ্গনে কারোনা আঘাতের দুই বছর আজ। করোনার কারণে বিশেষ সতর্কতায় ২০২০ সালের ১৯ মার্চ থেকে ছোট পর্দার সব শুটিং স্থগিত হয়। দীর্ঘ এই সময়ে একটু করে এই অনিশ্চয়তা বেড়েছে। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যে গত দুই বছর দেশের নাট্য অঙ্গন কেমন ছিল, অভিজ্ঞতার আলোকে সেটাই জানালেন গুণী প্রবীণ অভিনেতা আবুল হায়াত।

যুগের হুজুগে নাটকের দৃশ্যে সারিকা সাবরিন, মীর সাব্বির, সুভাশীষ ভৌমিক, আবুল হায়াত, শামীম ও দিলারা জামান।

সেই সময় থেকেই বিধিনিষেধের কারণে একে একে বিনোদনের সব দরজা বন্ধ হতে থাকে। এর সঙ্গে বন্ধ হতে থাকে অর্থলগ্নি। খেয়ে–পরে বেঁচে থাকার অনিশ্চয়তায় দিন গুনতে থাকেন অনেক অভিনয়শিল্পী। এ প্রসঙ্গে আবুল হায়াত বলেন, ‘প্রথম দিকে একটা আতঙ্ক ছিল। কী হয়! পরে তো আমাদের অনেকে করোনায় আক্রান্ত হন। একসময় সব দ্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। শিল্প অঙ্গনে খরা চলছিল। জীবন ধারণেই সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। আমাদের মধ্যে কম আয়ের অভিনয়শিল্পীরা বেঁচে থাকতেই হিমশিম খাচ্ছিলেন। তখন শিল্পীরা তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন। এভাবে তখন শিল্পীদের মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি হয়েছিল। আমাদের শিল্পীদের মধ্যে সোশ্যাল দিকগুলো আরও শক্ত হতে শুরু করে। আমরা নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হতে থাকি।’

করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নাট্যজন আবুল হায়াত

তবে কাজের ক্ষেত্রে স্থবিরতায় কিছুটা চিন্তিত ছিলেন এই অভিনেতা। কারণ, সহকর্মীরা অনেকে কাজ না করে ভালো ছিলেন না। অনেকেই অভিনয় থেকে দূরে থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অস্থির সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। করোনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মানসিক চাপ। পরিস্থিতি কি স্বাভাবিক হবে? আবার কবে শুটিং হবে, কবে নাটক নির্মাণ বাড়বে—এসব কারণে নাট্য অঙ্গন ছিল স্থবির। দীর্ঘ এই দুই বছরে সেই স্থবিরতা দেশের নাট্য অঙ্গন কতটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে? এমন প্রশ্নে আবুল হায়াত বলেন, ‘আমরা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পেরেছি। এখন রীতিমতো “গণজোয়ার” এসে গেছে। টেলিভিশন চ্যানেলের বাইরে অনেক বড় বড় কাজ হচ্ছে। অনেক অর্থলগ্নি হচ্ছে। সবাই কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। কাজের মান বাড়ছে। মিডিয়াটা এখন এগিয়ে যাচ্ছে।’

একটি নাটকের দৃশ্যে আবুল হায়াত ও মম

তবে টেলিভিশনের বাইরে ওটিটি ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের কাজগুলো নিয়ে আশাবাদী এই অভিনেতা। তিনি মনে করেন, ‘এখন ভালো কাজের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। সেখানে ভালো নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী ও টেকনিশিয়ানরা সেরাটা দিয়ে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। কাজের একটা মূল্যায়ন হচ্ছে। এসব কাজই আমাদের নাট্য অঙ্গনে নতুন করে আশা দেখাচ্ছে। হয়তো এই পরিবর্তন একটা সময় এমনিতেই আসত। সেই সুসময়ই এসে গেছে। ভালো কাজের পরিবেশই নাট্য অঙ্গনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’