আলোচনায় যে নাটকগুলো

দর্শক আবারও বাংলা নাটকের অনুরাগী হয়ে উঠেছেন। ইউটিউবে বাংলা নাটকের ‘ভিউ’ বলে দিচ্ছে সে কথা। দেশ–বিদেশের সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে টেলিভিশন নাটক, যেগুলো প্রচারের পর জায়গা করে নেয় ইউটিউব চ্যানেলে। গল্পে সামাজিক বার্তা, গান, আনন্দ নিয়ে বছরজুড়ে যে নাটকগুলো মানুষকে বিনোদন দিয়েছে, বছর শেষে ফিরে তাকানো যাক সেগুলোর দিকে।

আফরান নিশো ও মেহ্‌জাবীন চৌধুরী অভিনীত ‘শিল্পী’ বছরের শুরুতেই চাঙা করে তোলে দর্শকদের
ছবি: সংগৃহীত

শিল্পী
আফরান নিশো ও মেহ্‌জাবীন চৌধুরী অভিনীত শিল্পী বছরের শুরুতেই চাঙা করে তোলে দর্শকদের। সমাজের পোড় খাওয়া দুই গায়ক–গায়িকার গল্প নিয়ে এ নাটক—যারা রাস্তায় গান গেয়ে পথচলতি মানুষকে আনন্দ দেয়। এটাই তাদের আয়ের উৎস। এখানে একাধারে নারী ও পুরুষের কণ্ঠে গান গেয়ে আলোচিত হন নিশো। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় নাটকের ‘বুক চিন চিন করে হায়’ গানটি। সিএমভির এ নাটকটির পরিচালক মহিদুল মাহিম। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে নাটকটি।

ধারাবাহিকের মধ্যে আলোচিত ছিল ফ্যামিলি ক্রাইসিস

ফ্যামিলি ক্রাইসিস
ধারাবাহিকের মধ্যে আলোচিত ছিল ফ্যামিলি ক্রাইসিস। নাটকটি দিয়ে দীর্ঘদিন পর দর্শক পারিবারিক গল্পের সঙ্গে নিজেদের মেলাতে পেরেছেন। গল্পের সালমা, রুমা, শেফালি, রায়হান চরিত্রগুলোর মধ্যে নাগরিক জীবনকে তুলে ধরেছেন পরিচালক মোস্তফা কামাল রাজ। এনটিভির এই নাটকের অন্যতম চরিত্র শেফালি খালার মৃত্যুতে মর্মাহত এক দর্শক লিখেছেন, শেফালি খালার জন্য চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। একজন মা পারে সন্তানের সুখের জন্য নিজের জীবন বিসর্জন দিতে। এই রকম সিরিয়াল বানানোর জন্য পরিচালককে অনেক ধন্যবাদ।

জনপ্রিয় নাটক ‘যমজ’–এ মোশাররফ

যমজ
ভীষণ জনপ্রিয় নাটক যমজ। প্রতি ঈদে দর্শকদের আগ্রহ থাকে নাটকটি নিয়ে। কারণ, এখানে মোশাররফ করিমকে দেখা যায় তিনটি চরিত্রে। আরটিভির এ নাটকের শুরুতে বাবা–ছেলে এবং পরে চাচার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন তিনি।

স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তির পর প্রশংসিত হয় থ্রিলারধর্মী নাটক তিথির অসুখ

তিথির অসুখ
স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তির পর প্রশংসিত হয় থ্রিলারধর্মী নাটক তিথির অসুখ। ইয়াশ রোহান ও তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত এ নাটকে তিথির ভূমিকায় চমৎকার অভিনয়ের মাধ্যমে নতুন করে আলোচিত হন ফারিণ। এটি পরিচালনা করেছেন ইমরাউল রাফাত।

প্লাস ফোর পয়েন্ট ফাইভ
সাদামাটা গল্পের নাটক প্লাস ফোর পয়েন্ট ফাইভ। তবে চারপাশের পরিচিত ঘটনাকে মনে করিয়ে দিয়েছে এটি। দর্শকেরাও আপন করে নিয়েছেন নাটকের চরিত্রগুলোকে। চশমা ছাড়া পরিষ্কার দেখতে পান না মেহ্‌জাবীন। সমাজ ও পরিবারে নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয় তাকে। তার পরিচয় হয় আফরান নিশোর সঙ্গে। তাদের প্রেমের গল্প নিয়ে এটি পরিচালনা করেছেন শিহাব শাহীন।

মায়ের ডাক নাটকের পোস্টার

মায়ের ডাক
সৎভাই তাহসানকে বাকি ভাইয়েরা সহ্য করতে পারে না। ঝগড়া করে তারা বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। বড় বাড়িতে একা থাকেন কেবল মা। ঘটনাক্রমে তাদের মায়ের কাছে ফিরতেই হয়। ছেলেদের একত্র করতে এ নাটকে মায়ের যে ভূমিকা, সেটি প্রশংসিত হয়। মা চরিত্রে দিলারা জামান ছাড়া অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহেদ আলী, মম, তৌসিফ, জোভান, ফারিণ ও কেয়া পায়েল। পরিচালনা করেছেন মাবরুর রশিদ।

নানামাত্রিক চরিত্রে নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন মেহ্‌জাবীন চৌধুরী

আলো
নানামাত্রিক চরিত্রে নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন মেহ্‌জাবীন চৌধুরী। তাঁর লেখা আলো ছিল বছরের অন্যতম আলোচিত ও আলোকিত নাটক। নাটকের গল্প নারী ট্রাফিক পুলিশদের টয়লেট ও নানা সমস্যা নিয়ে। নাটকটির জন্য পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা পান আলোর টিম। মাহমুদুর রহমানের পরিচালনায় নাটকে আরও অভিনয় করছেন মনোজ প্রামাণিক।

হানিফ সংকেত মানে বাস্তবতার চিত্র ফুটে ওঠা নাটক

সৎ-এর সত্য সমাচার
কিছু মানুষকে লোভ ও লাভের নেশা ভালো হতে দেয় না। এ কারণে তারা লিপ্ত হন নানা অপকর্মে। ভালো মানুষের সঙ্গে মিশলে ভালো হওয়ার শিক্ষা পাওয়া যায়। এই সৎ এবং সত্য মিলেই সৎ-এর সত্য সমাচার বছরের অন্যতম দর্শকনন্দিত নাটক। ইউটিউবে নাটকটি দেখে রুহুল আমিন নামের একজন লিখেছেন, ‘হানিফ সংকেত মানে বাস্তবতার চিত্র ফুটে ওঠা এবং সংশোধনের পথ দেখানো।’ নাটকে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, তারিন, মীর সাব্বির, নাদিয়া সাঈদ, সুভাশিষ ভৌমিক প্রমুখ।

দেশের টেলিভিশন চ্যানেল, স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে এ বছরে প্রচারিত হয় পাঁচ শতাধিক নাটক। দুটি ঈদ ছাড়াও বছরজুড়ে আলোচিত ও নন্দিত নাটকগুলোর মধ্যে ছিল সুগার ফ্রি, গরম ভাতের গন্ধ, ফিমেল, যদি কোনো দিন, কাল্লু সুইপার, যদি আমি না থাকি, পুনর্জন্ম, ব্রেকিং নিউজ, তালাচাবি, লেগুনাচালক, বকুল ফুল, হ্যালো শুনছেন, হেমলকের ফিরে আসা, ২১ বছর পরে, ওএমজি, মরণোত্তম, আপনসহ আরও বেশ কিছু নাটক।

শেষটা অন্য রকম ছিল
ঈদুল ফিতরের রাতে এনটিভিতে দেখানো হয় মোশাররফ করিম ও তানজিন তিশা অভিনীত শেষটা অন্য রকম ছিল। ২৭ মে দুপুরে জি সিরিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশের পর ফেসবুক ও ইউটিউবে নাটকটি নিয়ে আলোচনা দেখা যায়। প্রকাশের ১১ ঘণ্টার মাথায় ইউটিউবে ১০ লাখবার দেখা হয় এটি