লাল বেনারসি শাড়ি পরে মাওয়া ঘাটে অসহায় মেয়েটি নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছে। পেছনে হায়েনারা। মেয়েটি ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে। গাড়িটির দরজা খোলা। মেয়েটি সেই গাড়ির পেছনের আসনে ঢুকে পড়ে। কিছুক্ষণ পর গাড়ির মালিক সামনের আসনে এসে বসেন। তখনো খেয়াল করেননি গাড়ির পেছনের আসনে একটি মেয়ে বসে আছে। বিয়ের সাজে চোখেমুখে আতঙ্ক মেয়েটির। নাম জোছনাময়ী। তাকে দেখে চমকে ওঠে ছেলেটি। এদিকে তাঁর স্ত্রী ফোন করছে। ছেলেটি এখন কী করবে? জোছনাময়ী তাকে অনুরোধ করছে, ‘ভাই আমাকে বাঁচান। একটু ঢাকা শহরে নিয়ে নামায়ে দেন।’ কিন্তু কোথায় নামিয়ে দেবে তাকে, মেয়েটি জানে না। জোছনাময়ীর সুন্দর মুখ অন্ধকারে মলিন। ছেলেটির খুব মায়া হয়। জোছনাময়ীর গায়ে অনেক জ্বর। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এখন কী হবে?
অনেক দিন পর আবার ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করছেন অনিমেষ আইচ। ‘জিরো ডিগ্রি’ আর ‘ভয়ংকর সুন্দর’ নামে দুটি চলচ্চিত্র তিনি তৈরি করেছেন। এ কারণেই ছোট পর্দার কাজ থেকে বিরতি নেন। তাঁর এবারের ধারাবাহিক নাটক ‘জোছনাময়ী’। আগামী মঙ্গলবার থেকে নাগরিক টিভিতে প্রতি মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় ধারাবাহিকটি প্রচারিত হবে।
‘জোছনাময়ী’র কাহিনি মূলত একজন নারী আর তার আশপাশের চরিত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। গ্রামের মেয়ে জোছনা বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে রাজধানী শহরে এসে ওঠে। এরপর শুরু হয় তার চড়াই-উতরাইয়ের গল্প! ‘জোছনা’ চরিত্রে অভিনয় করছেন ভাবনা। ধারাবাহিকটিতে আরও আছেন চঞ্চল চৌধুরী, সুমাইয়া শিমু, খায়রুল আনাম সবুজ, রুনা খান, প্রাণ রায়, মাহমুদুল ইসলাম মিঠু প্রমুখ।
‘জোছনাময়ী’ নাটক নিয়ে অনিমেষ আইচ বললেন, ‘আমরা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে এমন একটি গল্প নিয়ে নাটকটি করেছি। দর্শকদের কাছে এটি ভিন্ন ধারার নাটক বলে মনে হবে। চঞ্চল চৌধুরী সাধারণত যে ধরনের চরিত্রে কাজ করেন, এখানে তিনি তা থেকে একদমই আলাদা। তার সংলাপ প্রক্ষেপণের স্টাইল একেবারে অন্য রকম। ফারুক আহমেদকে দেখেছি কমেডি চরিত্রে। কিন্তু তিনি এখানে একদম সিরিয়াস একটি চরিত্রে। এ ছাড়া প্রত্যেকেই তাঁর নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন। এমনকি শম্পা রেজাও দারুণ একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন।’
নাগরিক টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান কামরুজ্জামান বাবু বলেন, ‘জোছনাময়ী আসলে আমাদের সমাজের গল্প। আমাদের চারপাশে থাকা জোছনাময়ীদের অনিমেষ তুলে এনেছেন তাঁর নাটকে। নাটকের একটি পর্ব দেখার পর অন্য পর্বগুলো দেখার ব্যাপারে দর্শকের মনে আগ্রহ তৈরি হবে।’