পশ্চিমবঙ্গের বিনোদন–অঙ্গনে বেশ কয়েক দিন ধরেই নাকি কানাঘুষা, সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন তাঁরা। এমনও শোনা গেছে, গোপনে তাঁরা বিয়েটা সেরেও ফেলেছেন। তবে আজ সোমবার সকালের চমক, আজই বিয়ে করতে চলেছেন দুই বাংলার সুপরিচিত অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। বিয়ের কনে মানসিক স্বাস্থ্যকর্মী পিয়া চক্রবর্তী, পরমের প্রেমিকা।
‘তুমি অন্য কারোর সঙ্গে বেঁধো ঘর…’। পরম–পিয়ার বিয়ের খবরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই গানের লাইনটি বেশি ব্যবহার করছেন নেটিজেনরা। জনপ্রিয় এই গানের লাইন ব্যবহারের কারণও খুঁজে বের করেছেন তাঁরা। পিয়া চক্রবর্তী সংগীতশিল্পী অনুপম রায়ের প্রাক্তন স্ত্রী। ডিভোর্সের দুই বছর যেতে না যেতেই পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ঘর বাঁধছেন তিনি।
কলকাতার ব্যস্ততম অভিনেতাদের মধ্যে একজন পরমব্রত। বাংলার পাশাপাশি তিনি হিন্দিতেও সমানতালে কাজ করেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি পরিচালক-প্রযোজকও বটে। পরমব্রতর ব্যক্তিজীবন নিয়ে বরাবরই সবার খুব আগ্রহ। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িয়েছেন তিনি। অবশ্য কোনো দিনই খুব বেশি লুকোছাপা করেননি সেসব নিয়ে।
বিদেশিনী চিকিৎসক ইকার সঙ্গে দীর্ঘদিন লিভ টুগেদার করেছেন বলে শোনা গেছে। আনন্দবাজার, হিন্দুস্তান টাইমসহ বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্র এটি নিশ্চিত করেছে। একটা সময় পরম আর ইকার বিয়ের কথাও প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের নাগরিকের সঙ্গে করোনাকালেই ভেঙে যায় পরমের সম্পর্ক। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর পরমব্রত তা নিয়ে খোলাখুলিই কথা বলেছিলেন। এরপর পরমের জীবনে আসেন পিয়া। সংগীতশিল্পী অনুপম রায়ের বিয়ে ভাঙার পেছনেও বারবার উঠে এসেছিল পরমব্রতর নাম। তবে পিয়ার সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে বন্ধুত্বের বাইরে অন্য নাম দিতে চাননি পরমব্রত। বরং পিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তিনি শুরু থেকেই গোপন রেখেছিলেন।
অনুপম রায়ের সঙ্গে পিয়ার ডিভোর্স হয় ২০২১ সালে। বিয়ে ভাঙার পর দুজনেই যৌথভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার ঘোষণা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে পিয়ার সঙ্গে পরমব্রতর প্রেমের কথা উঠলে তা অস্বীকার করেন তিনি।
তিনি বারবার বলেছিলেন, তাঁরা শুধুই খুব ভালো বন্ধু। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে এ খবর নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে মন্তব্য করেছিলেন। তবে সবই এখন অতীত। গুজবটাই সত্যে পরিণত হয়েছে। পরমব্রতর ‘মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর’ তকমা ঘোচাতে সফল হলেন পিয়া।
শোনা যায়, পরমব্রতর নিয়মিত পিয়ার বাড়িতে যাওয়া–আসা ছিল। মাঝে পরমব্রতর ছবির শুটিংয়ে লন্ডনেও গিয়েছিলেন পিয়া। সম্প্রতি পিয়া এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে পরমব্রতকে পার্ক স্ট্রিটের এক রেস্তোরাঁয়ও দেখা গিয়েছিল। ফেসবুকেও একজন আরেকজনকে নানা উৎসব–পার্বণে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। দুজনের ছবি শেয়ার করেছেন। অবশেষে জানা গেল, ২৭ নভেম্বরই সেই শুভদিন।
জাঁকজমক নয়, আজ বিকেলে ঘরোয়া আয়োজনে বিয়ের পর্ব সারবেন পরমব্রত-পিয়া। ইন্ডাস্ট্রি থেকে সেভাবে আমন্ত্রিত নন কেউই, তবে পরম-পিয়ার কাছে যাঁরা সহকর্মী নন, বরং বন্ধু—তাঁদের অবশ্যই দেখা মিলবে বলে খবর। টালিউডের বিশেষ কাউকেই সেভাবে ডাকেননি তাঁরা। যদিও শেষ পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠানের পরই বোঝা যাবে, কতটা ঘরোয়া কিংবা কতটা জাঁকজমক!
২০১৫ সালের ৬ ডিসেম্বর পিয়া-অনুপমের বিয়ে হয়। নৃবিজ্ঞানে পিএইচডি করেছেন। পিয়া নিজেও গান করেন। তবে অনুপম রায়ের মতো জনপ্রিয়তা তাঁর ছিল না। বলা যায়, সংগীতই বেঁধেছিল পিয়া–অনুপমের সম্পর্ক। সংগীতকে ভালোবেসে একে অপরের কাছে আসা। যদিও শেষ পর্যন্ত টেকেনি সে সংসার।