বছরের পর বছর ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা ও প্রসেনজিৎ
বছরের পর বছর ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা ও প্রসেনজিৎ

প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার ৫০তম সিনেমা

মনোমালিন্য, মতের অমিল বা অভিমান। টানা ১৪ বছর তাঁদের একসঙ্গে দেখা যায়নি। একসঙ্গে দাঁড়াননি লাইট-ক্যামেরার সামনে। অথচ একসময় টলিউড সিনেমার জগতে এই জুটি ছাড়া সিনেমার কথা ভাবাই যেত না। বছরের পর বছর ব্লকবাস্টার হিট সিনেমা দর্শকদের উপহার দিয়েছিলেন তাঁরা। নিশ্চয়ই এতক্ষণে আঁচ করতে পেরেছেন কাদের নিয়ে বলছি। ঠিকই ধরেছেন, এই জুটি হলো তুমুল জনপ্রিয় ‘দাদা-দিদি’—প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
সমালোচকেরা মাঝেমধ্যে বলে ওঠেন, বহু নায়ক–নায়িকার জনপ্রিয় না হওয়ার পেছনেও এই জুটিই দায়ী। তাঁদের জন্য সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি সম্ভাবনাময় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। কারণ, হিট জুটিকে ছাড়া অন্য কারও দিকে নজরও পড়ত না পরিচালকদের। আবার তাঁদের সুসম্পর্কই দীর্ঘদিন ধরে টলিউডে রাজ করার অন্যতম কারণও বটে। তবে কেন কী কারণে যেন এই হিট জুটির মধ্যেও ঘটে যায় মনোমালিন্য, সেই থেকে অভিমান। আর তাঁদের দেখা যায়নি পর্দা ভাগ করতে। আফসোসে পড়ে যান দর্শক-পরিচালকেরা। কিন্তু এই জুটির বরফ গলেছিল আরও আগেই। পুরোনো সিনেমার মাধ্যমে তাঁরা আবার পর্দা ভাগ করেছেন। ১৪ বছর পর ‘কামব্যাক’ চলচ্চিত্রে আবারও হিট প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটি।

এরপর জুটিবদ্ধ হয়ে আরেকটি সফল সিনেমা ‘দৃষ্টিকোণ’। লুফে নিয়েছিলেন ভক্তরা। যেন আবারও প্রাণসঞ্চার হলো ভক্তদের হৃদয়ে। যাঁরা বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলেন কবে ফিরবে এই জুটি। দর্শকদের কথা এবং নিজেদের সফলতার ব্যাপারে ওয়াকিবহাল অভিনেতা-অভিনেত্রীও।

নিজেদের ৫০তম সিনেমায় জুটি বাঁধছেন তাঁরা

মান–অভিমানের পালা যখন শেষই হলো, তখন হ্যাটট্রিকেই বা কী সমস্যা? সত্যিই তাই, এবার আসতে চলেছে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির সফল জুটির তৃতীয় সিনেমা। নিজেদের ৫০তম সিনেমায় জুটি বাঁধছেন তাঁরা। সিনেমার ফাস্ট লুকও প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা সিনেমার দুই মেগাস্টারের হ্যাটট্রিক সিনেমার নাম ‘অযোগ্য’। পরিচালনায় কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়।
গল্পটা চেনা আটপৌরে বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের, ব্যাংককর্মী রক্তিম মজুমদার এবং তাঁর স্ত্রী পর্ণার।

নিজেদের ৫০তম সিনেমায় জুটি বাঁধছেন তাঁরা

সংসারের বাঁকবদল ঘটে রক্তিমের চাকরি চলে যাওয়াকে কেন্দ্র করে। বাড়িতে থাকার পাশাপাশি সংসারে সন্তানদের দেখাশোনার দায়িত্বও নিতে হয় তাঁকে। অন্যদিকে অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরাতে পর্ণাকেও ইনভেস্টমেন্ট ফার্মে কাজ নিতে হয়। মধ্যবিত্ত পরিবারাটি আবার উঠে দাঁড়াতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে সিনেমায়।

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়

ভারতীয় গণমাধ্যম অন্য সময় প্রাইমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘কৌশিকের মতো পরিচালকের সঙ্গে পরপর কাজ করতে পারা যেকোনো শিল্পীর কাছে দারুণ ব্যাপার। পাশাপাশি ঋতু আর আমি একসঙ্গে ৫০তম সিনেমায় কাজ করছি। আশা করি, স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই অভিজ্ঞতা।’ ঋতুপর্ণাও বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দর্শকদের ভালোবাসা পেয়ে আসা সম্মানের। ঈশ্বর এবং দর্শকদের কাছে কৃতজ্ঞ। কৌশিকদার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও দারুণ। আশা রাখি, প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে পেরেছি।’ পরিচালকও বলছেন, ‘৫০তম সিনেমায় জুটি হলেন ঋতুপর্ণা-প্রসেনজিৎ। তাঁদের আগে কখনো এমন ভালোবাসার গল্পে দেখা যায়নি।’

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত আর প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়