ভারতের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর আসনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। তাঁর জয় নিয়ে চলছে নানা ধরনের বিশ্লেষণ। সায়নীকে নিয়ে এবার কথা বললেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র; সঙ্গে বললেন পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থীদের ব্যর্থতা নিয়েও।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ফল হতাশ করেছে শ্রীলেখা মিত্রকে। যদিও তাঁর চোখে এই বাংলার সবচেয়ে বড় প্রহসন রাজনীতি ও নির্বাচন। শিক্ষা, মননশীলতা যে বাঙালির পরিচয়, সেই বাঙালির এমন ‘অবনমন’ মেনে নিতে পারছেন না তিনি। মঙ্গলবার, ভোট গণনার দিনে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে প্রথম মুখ খুলে তাঁর হতাশার কথাই জানালেন অভিনেত্রী।
শ্রীলেখা বলেন, ‘শিক্ষিত মানুষ দীপ্সিতা ধরকে পছন্দ করছেন না! এটা মেনে নিতে সত্যিই কষ্ট হচ্ছে।’ তবে এত কিছুর পরও সংগঠন নিয়ে আশাবাদী অভিনেত্রী। তার প্রমাণ তিনি রেখেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই। একটি বিশেষ ছবি তিনি ভাগ করে নিয়েছেন। কাস্তে-হাতুড়ি-তারা প্রতীকের পাশে দৃঢ় হরফে লেখা, ‘এ হৃদয় দপ্তর পাল্টাচ্ছে না।’
এদিনের ফলাফল বিস্মিতও করেছে শ্রীলেখাকে। সায়নী ঘোষ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাংশু ভট্টাচার্য, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফলাফল দেখে এমনই জানিয়েছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে মিমি চক্রবর্তী জিতেছিলেন তৃণমূলের টিকিটে। এবার সেই টিকিটে সায়নী ঘোষ জিতেছেন। বিস্মিত শ্রীলেখা বুঝে উঠতে পারছেন না, যেকোনো প্রার্থী তৃণমূলের টিকিটে দাঁড়ালেই যাদবপুর লোকসভায় জিতে যান কী করে!
তবে হতাশ হলেও এই ফল যে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল তা নয়, জানিয়েছেন শ্রীলেখা। সদ্য সুধীর মিশ্রর সঙ্গে শুটিং করে কলকাতায় ফিরেছেন। তাঁর দাবি, অন্য রাজ্য, অন্য শহরেও বাংলাকে নিয়ে গুঞ্জন রয়েছে। সেখানে সবাই বুঝতে পারেন, এ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি ভালো নয়। শ্রীলেখার দাবি, সত্যিই এখানে সৎভাবে কাজ পাওয়া যায় না।
শ্রীলেখা জানান, কাজের সূত্রে অন্য শহরে গেলে তাঁর মন খারাপ হয়ে যায় নিজের শহরের জন্য। ওই সব শহরের সুবন্দোবস্ত খানিকটা হীনম্মন্যতা তৈরি করে। আর এ জন্য বাংলার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দায়ী বলে মনে করেন শ্রীলেখা।
শ্রীলেখা হতাশ হলেও সায়নীর জয়ে উচ্ছ্বসিত পরিচালক রাজ চক্রবর্তী। তিনি আনন্দবাজারকে জানান, সায়নীর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক।
তাঁর ভাষ্যে, ‘বলা যেতে পারে, আমি ওকে হাত ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে নিয়ে এসেছিলাম। একইভাবে রাজনীতির ময়দানেও ওকে আমিই নিয়ে আসি। তাই সায়নীর কথা বলতে গিয়ে এখন প্রচুর স্মৃতি ভিড় করছে। শুধু সায়নী নয়, দলের অনেকের কথাই যতটা সম্ভব উল্লেখ করার চেষ্টা করছি।’
সায়নী সম্পর্কে রাজ আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, সায়নী যথেষ্ট বুদ্ধিমতী এবং আমাদের দলের ও বড় সম্পদ। এত অল্প বয়সে এতটা বহুমুখী ও সাহসী মেয়েকে রাজনীতির ময়দানে সচরাচর দেখা যায় না। সেখানে সায়নী শুরু থেকেই নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছে।’
রাজ চক্রবর্তী পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘আবার প্রলয়’-এ অভিনয় করেছিলেন সায়নী। সিরিজটি গত বছর জিফাইভে মুক্তি পেয়েছিল।